পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমে মারামারি, রাজনীতি এবং রক্ত দিয়ে লেখা প্রেমপত্র
Published: 13th, April 2025 GMT
লম্বা দৌড় শেষে ব্যাটসম্যানের দিকে তেড়েফুঁড়ে বল ছুড়ে মারা—এই ছিল মাঠের শোয়েব আখতারের চেনা চেহারা। ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বর্ণিল চরিত্রগুলোর একটি পাকিস্তানের এই ফাস্ট বোলার। ১৯৯৭ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে দলে অভিষেক, খেলেছেন ২০১১ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস নামে পরিচিত এই ফাস্ট বোলার অবসরের কয়েক মাসই পরই প্রকাশ করেন কন্ট্রোভার্সালি ইয়োরস বা ‘বিতর্কিত আমি’ নামের আত্মজীবনী। বইয়ের ‘দ্য ড্রেসিংরুম’ অংশে শোয়েব তুলে ধরেছেন পাকিস্তান দলের ভেতরের নানা মজার ঘটনা, রাজনীতির ঘটনা। আছে পাকিস্তান দলে ধর্মচর্চা, এমনকি নিজের স্বার্থপরতার কথাও। আর পুরোটা জুড়েই আছে দিলখোলা শোয়েবের ছাপ, যে শোয়েব উইকেটশিকারের পর দু হাত ছড়িয়ে দিতেন।
পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমে প্রথমবার পা রাখতেই আমি হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। পুরো পরিবেশটাই ছিল বিষাক্ত। প্রায় সব সিনিয়র খেলোয়াড় হয় শুধু আমার ও অন্য জুনিয়রদের সঙ্গে চিৎকার–চেঁচামেচি করছে, আর না হয় বসে বসে টিম ম্যানেজমেন্টকে গালি দিচ্ছে, আর বলছে কীভাবে তাদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে।
আমার ভাবনা ছিল সোজা—বোর্ড আমাকে বেছে নিয়েছে। মাজিদ খান (পিসিবির তৎকালীন প্রধান নির্বাহী) আমার ওপর এতটাই বিশ্বাস করেছিলেন যে তিনি বলেছিলেন, আমাকে খেলানো না হলে তিনি অর্ধেক সিনিয়র খেলোয়াড় দল থেকে বের করে দেবেন। যে কারণে বোর্ড নিয়ে আমার কোনো সমস্যা ছিল না। বরং আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ দেওয়ায় বোর্ডের প্রতি কৃতজ্ঞই ছিলাম।
কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝলাম, এই নেতিবাচকতা দলেরই স্বাভাবিক চেহারা। তখন নিজেকে মানসিকভাবে আলাদা করে নিলাম। শুরুতে দেশের হয়ে খেলতে পেরে এতটাই আনন্দে ছিলাম যে কোনো কিছুই স্পৃহাকে নষ্ট করতে পারত না। পরে বুঝলাম, এই দূরত্ব রাখাটা দরকার ছিল।
আমার মতো শহীদ আফ্রিদি, আজহার মেহমুদ, সাকলাইন মুশতাক, শহীদ নাজির, আব্দুর রাজ্জাক, সেলিম এলাহীরাও ড্রেসিংরুমের রাজনীতি থেকে নিজেদের দূরে রাখত। আমরা একসঙ্গে থাকতাম, বন্ধুও হয়ে উঠলাম বাকি জীবনের জন্য। আমরা তখন এত বেশি একসঙ্গে সময় কাটিয়েছি যে আমাদের পরিবারও হয়তো আমাদের এতটা চিনত না।
১৯৯৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এক শর্তে ইয়ামালের সঙ্গে নাচবেন লেভা
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। ম্যাচে জোড়া গোল করেন স্টাইকার রবার্ট লেভানডভস্কি। একটি করেন গোল করেন রাফিনিয়া ও লামিনে ইয়ামাল।
বার্সার জার্সিতে গোল করে নেচে উদযাপন করতে দেখা যায় ইয়ামালকে। তার নাচে সঙ্গ দেন জাতীয় দল ও ক্লাবের সতীর্থ অ্যালেক্সজান্দ্রে বার্লে। কিন্তু পাশে থাকা লেভাকে নাচে যোগ দিতে দেখা যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ৩৬ বছর বয়সী পোলিশ স্ট্রাইকার এক শর্ত দিয়েছেন। ইয়ামালের বয়স তার অর্ধেকও হয়নি। লেভা তাই শর্ত দিয়েছেন, ইয়ামালের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে তার সঙ্গে নাচবেন তিনি।
প্রায় ১৯ বছরের ছোট ইয়ামালকে নিয়ে লেভানডভস্কি বলেন, ‘কারণ তার বয়স এখনো ১৮ হয়নি। আমরা তার ১৮ বছরের অপেক্ষায় আছি। এরপর একসঙ্গে নাচব, উদযাপন করবো। আমরা তাকে বলেছি- লামিনে আমাদের উচিত তোমার বয়স ১৮ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা। এরপর কোথায় একসঙ্গে নাচব আমরা।’
লামিনে ইয়ামালের অবশ্য বয়স ১৮ হতে খুব বেশি দেরি নেই। চলতি বছরের ১৩ জুলাই ১৮ বছর পূর্ণ করবেন বাঁ-পায়ের এই ফুটবলার। তার আগেই অবশ্য তার সামনে লা লিগা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, কোপা দেল রে জয়ের সুযোগ। এরই মধ্যে তিনি জাতীয় দলের হয়ে ইউরো এবং বার্সার হয়ে সুপার কাপ জিতেছেন।
চলতি মৌসুমে লা লিগায় লেভা, রাফিনিয়া ও ইয়ামালের জুটি জমে উঠেছে। তারা মৌসুমে ৮২ গোল করেছেন। চলতি মৌসুমে সব শিরোপা জয়ের ভালো সম্ভাবনা আছে বার্সা। লিগ টেবিলে শীর্ষে আছে তারা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে। রিয়ালের বিপক্ষে খেলবে কোপা দেল রে’র ফাইনাল।