Prothomalo:
2025-04-13@19:32:22 GMT

চৈত্রসংক্রান্তি উৎসব

Published: 13th, April 2025 GMT

বাংলা বছরের শেষ দিন, অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ দিনকে বলা হয় চৈত্রসংক্রান্তি। হিন্দুশাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে এই দিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্মকে পুণ্যময় বলে মনে করা হয়। একসময় এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি উৎসব হতো চৈত্রসংক্রান্তিতে। সংক্রান্তির দিন শিবের গাজন বা চড়কপূজা আর তার আগের দিন নীলপূজা। সেও শিবেরই পূজা। সমুদ্রমন্থনকালে উত্থিত বিষ কণ্ঠে ধারণ করে শিব নীলকণ্ঠ, তাই নীলপূজা। মায়েরা নীলের উপোস করে সন্তানের মঙ্গল কামনায়—আমার বাছার কল্যাণ করো হে নীলকণ্ঠ, সব বিষ কণ্ঠে নিয়ে তাকে অমৃত দাও! শিব নীলকণ্ঠ—জগতের সব বিষ পান করেও সত্য সুন্দর মঙ্গলময়। সেই কোন কাল থেকে বাংলাজুড়ে চলে প্রবহমান লোক উৎসব। বাংলার গ্রামে গ্রামে এই উৎসব নিয়ে আসে নতুন বছরের আগমনী বার্তা।

চৈত্রসংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক। চড়ক গাজন উৎসবের একটি প্রধান অঙ্গ। চড়কের পেছনে একটি জোরালো কারণের কথা বলেন কোনো লেখক। বৌদ্ধধর্মের প্রভাব যখন ম্লান হয়ে এসেছে, তখন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন। তেমনই কয়েক জন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী আশ্রয় নিয়েছিলেন বাংলায় এবং পরে তাঁরা হিন্দুত্ব গ্রহণ করেন। ফলে হিন্দুধর্মে মিশে যায় কিছু বৌদ্ধ তন্ত্রমন্ত্রের সাধন। এই তান্ত্রিক ক্রিয়া থেকেই পরবর্তী সময় উদ্ভব চড়কপূজার। চড়কপূজায় যোগদানকারী সন্ন্যাসীরা তান্ত্রিক সাধনা অভ্যাসের ফলে নিজেদের শারীরিক কষ্টবোধের ঊর্ধ্বে যান, তার ফলে চড়কের মেলায় নানা রকম শারীরিক কষ্ট স্বীকারে তারাই অগ্রণী হয়ে ওঠেন। যেমন—৩০ থেকে ৪০ ফুট উঁচু চড়কগাছ থেকে পিঠে বঁড়শি গেঁথে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া, জিবে বা শরীরের কোনো জায়গায় লোহার শিক গেঁথে দেওয়া বা ভাঙা কাচের টুকরার ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া, আগুনের খেলা দেখানো ইত্যাদি। তবে বর্তমানে এসব বিপজ্জনক কসরত অনেক ক্ষেত্রেই নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনওরে গৃহবাসী, খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল ২৫ মার্চ ২০২৪

চড়কপূজা মূলত ধর্মের গাজন বা ধর্মঠাকুরের পূজা, পরবর্তী সময় যা রূপান্তরিত হয় শিবের গাজনে। এই ধর্মঠাকুরের উদ্ভব বৌদ্ধ দেবতা ধর্মরাজ থেকে। বাউরি, বাগদি, হাঁড়ি, ডোম প্রভৃতি গ্রামীণ মানুষেরা এই ধর্মঠাকুরের পূজা করেন। যদিও ধর্মঠাকুরের সেই অর্থে মূর্তি দেখা যায় না, পাথরের খণ্ডকেই পূজা করা হয়, কিছু গ্রামে বুদ্ধমূর্তিকেই পূজা করা হয়। কোনো কোনো গ্রামে ধর্মঠাকুর আর শিব দুজনেই গাজনে পূজিত হন। শিবের পূজা হয় বলে চড়কপূজাকে শিবের গাজনও বলা হয়ে থাকে।

‘আমরা দুটি ভাই/ শিবের গাজন গাই’ ছড়াটির কথা আমরা অনেকেই জানি। ছড়াটির মধ্যে দেশ–গাঁয়ের অভাবের রূপটিই ফুটে ওঠে। শিবের গাজন—গ্রাম থেকে ‘গা’ আর ‘জন’ মানে জনগণ, দেশ–গাঁয়ের আপামর খেটে খাওয়া মানুষ। গাজন বা চড়কপূজা সাধারণ মানুষের চাওয়া–পাওয়ারই এক প্রতিফলন বলে কেউ কেউ অনুমান করেন।

কোনো ইতিহাসবিদের মতে, চৈত্রসংক্রান্তি মানুষের শরীর ও প্রকৃতির মধ্যে একটি যোগসূত্র ঘটানোর জন্য পালন করা হয়। প্রকৃতি থেকে কুড়িয়ে আনা শাক, চৈতালি মৌসুমের সবজি, পাতা, মুড়া ইত্যাদি খেয়ে চৈত্রসংক্রান্তি পালন করার রীতি এখনো কোনো এলাকায় লক্ষ করা যায়। লোকপ্রথা অনুযায়ী, চৈত্রসংক্রান্তিতে বিশেষ খাবার ছাতু, চিড়া, দই, মুড়ি, খই, তিল, নারকেলের নাড়ু ইত্যাদি খেতে হবে।

আরও পড়ুনশুক্লা তিথির দ্বিতীয়াতে ভাইফোঁটা উদ্‌যাপিত হয়১৪ নভেম্বর ২০২৩

তার সঙ্গে দুপুরবেলার খাবারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ‘চৌদ্দ’ রকমের শাক খাওয়া। এর মধ্যে অন্তত একটি তিক্ত স্বাদের হতে হবে। যেমন গিমা শাক। চৈত্র মাসে গিমা শাক খেতেই হবে। গিমা শাক পাওয়া না গেলে বুঝতে হবে এখানে প্রকৃতি থেকে জরুরি কিছু হারিয়ে গেছে। একটু টক কিছু থাকাও দরকার। কাঁচা আম তো আছে। অসুবিধা নেই। মাছ–মাংস খাওয়া চলবে না।

বর্ষ শেষের চৈত্রসংক্রান্তির উৎসব উদ্‌যাপনেই বাঙালি অভ্যস্ত ছিল দীর্ঘকাল। গ্রন্থকার দীনেন্দ্রকুমার রায় সংগত কারণেই বলেছেন যে ‘বসন্ত আর গ্রীষ্মের সন্ধিস্থলে চৈত্র মাসে পল্লিজীবনে “নব আনন্দের হিল্লোল বহে”। গম, ছোলা, যব, অড়হর প্রভৃতি রবিশস্য পেকে উঠেছে, সুতরাং দীর্ঘকালের অনাহারে শীর্ণদেহ, ক্ষুধাতুর কৃষক পরিবারে যে হর্ষের উচ্ছ্বাস দেখিতে পাওয়া যায়, তাহা সুদীর্ঘ হিমযামিনীর অবসানে বসন্তের মলয়ানিলের মতোই সুখাবহ।’

দক্ষিণারঞ্জন বসুর ‘ছেড়ে আসা গ্রাম’-এ বিশ শতকের শুরু থেকে চল্লিশ-পঞ্চাশের দশক পর্যন্ত পূর্ববঙ্গে পল্লিসংস্কৃতির বহু নমুনা রয়েছে। বরিশালের নল চিড়াতে চৈত্রসংক্রান্তির দিন থেকে সপ্তাহখানেক ধরে বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসার কথা পাই। বছরের পয়লা সেখানে নাকি এক ‘বার্ষিক কর্ম’ ছিল। বছরের মসলাপাতি কেনা হতো ও দিন। গানের বৈঠকও বসত। চট্টগ্রামের সারোয়াতলিতেও চৈত্রসংক্রান্তির দিন ‘লাওন’ (একধরনের নাড়ু) খাওয়ার উৎসবের মধ্য দিয়েই হতো বর্ষবিদায় এবং হিন্দু-মুসলমানের নববর্ষ বরণের আন্তরিক শুভকামনার বিনিময়।

আরও পড়ুনমাঘ মাসে শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

এখানে যে বর্ষবরণের আভাস আছে, তার বয়স খুব বেশি নয়। চৈত্রসংক্রান্তিই ছিল প্রধান। সেই সময় চৈত্রসংক্রান্তিতে মেলা বসত। মেলায় বাঁশ, বেত, প্লাস্টিক, মাটি ও ধাতুর তৈরি বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ও খেলনা, ফল-ফলাদি ও মিষ্টি কেনাবেচা হতো। অঞ্চলভেদে তিন থেকে চার দিনব্যাপী চলা এই মেলায় গম্ভীরা, বায়োস্কোপ, সার্কাস, পুতুলনাচ, ঘুড়ি ওড়ানো ইত্যাদি চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থাও থাকত। কালের বিবর্তনে চৈত্রসংক্রান্তির এই উৎসব হারিয়ে গিয়ে বর্ষবরণ উৎসব ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

একসময় কেবল সনাতন ধর্মাবলম্বীরা চৈত্রসংক্রান্তিতে বিভিন্ন আচার পালন করতেন। কালক্রমে তা বিভিন্ন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়। চৈত্র থেকে বর্ষার আরম্ভ পর্যন্ত সূর্যের যখন প্রচণ্ড উত্তাপ থাকে, তখন সূর্যের তেজ প্রশমন ও বৃষ্টি লাভের আশায় কৃষিজীবী সমাজ বহু অতীতে চৈত্রসংক্রান্তির উদ্ভাবন করেছিলেন বলে জানা যায়। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে উদ্বিগ্ন কৃষককুল নিজেদের বাঁচার তাগিদে বর্ষার আগমন দ্রুত হোক, এই প্রণতি জানাতেই চৈত্র মাসজুড়ে উৎসবের মধ্যে সূর্যের কৃপা প্রার্থনা করেন।

একটু ভালো থাকার জন্য কত আরাধনা, কত কামনা মানুষের! চৈত্র ফুরিয়ে আসছে, বৈশাখ শুরু হলো বলে। হে ঠাকুর, হে ঈশ্বর, এই তপ্ত দিনগুলো ভালোয় ভালোয় পার করে আষাঢ়ে আকাশ ভরা মেঘ দিও আর দিও জল, যাতে ঘরে সোনার বরণ ধান ওঠে। ছেলেমেয়ের মুখে দুটো নতুন চালের ভাত দিতে পারি আর ঘরখানার চালে কয়েক আঁটি খড়!

আরও পড়ুনদীপাবলি আলোর উৎসবের দিন, প্রদীপ জ্বালানোর দিন১২ নভেম্বর ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ত রস ক র ন ত ত চ ত রস ক র ন ত র শ ব র গ জন উৎসব র বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

পহেলা বৈশাখে রাজধানীর কোথায় কী আয়োজন  

পহেলা বৈশাখ বাঙালির উৎসবের দিন, আনন্দের দিন, সম্প্রীতির দিন, সৌহার্দ্যের দিন। বাংলা ১৪৩২ সনকে বরণে রাজধানীজুড়ে নানা আয়োজন করা হয়েছে। ভোরের সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানের মাধ্যমে শুরু হবে বৈশাখবন্দনা, নতুন বছরকে বরণ করার আয়োজন।

বাঙালি সমাজকে নিয়ে আলোর পথে মুক্তির পথযাত্রী হওয়ার আহ্বান জানানো হবে এবার পহেলা বৈশাখে ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠানে। ছায়ানটের ৫৮তম এ আয়োজন ভোর সোয়া ৬টায় বৈশাখের ভোরের আলো ফুটতে ফুটতে ভৈরবীর রাগালাপ দিয়ে শুরু হবে। এবারে অনুষ্ঠানের মূলভাব ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। 

ছায়ানটের এবার অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন আলো, প্রকৃতি ও মানুষকে ভালোবাসার গান ও আত্মবোধনের জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। এতে থাকবে ৯টি সম্মেলক গান, ১২টি একক কণ্ঠের গান ও ৩টি পাঠ। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে (সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে) অনুষ্ঠান শুরু হবে ভৈরবীতে রাগালাপ দিয়ে। শেষে ছায়ানটের কথন পাঠ করবেন ডা. সারওয়ার আলী। প্রায় দুই ঘণ্টার এ আয়োজন ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজসহ বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

রবীন্দ্র সরোবর

পহেলা বৈশাখে সকাল ৬টায় ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে সুরের ধারার আয়োজনে পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তমঞ্চে হবে  বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আশপাশে পাবেন বাহারি বাঙালি খাবার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

‘নববর্ষে ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’–এই প্রতিপাদ্যে চব্বিশের চেতনা ধারণ করে সমকাল, ইতিহাস, ঐতিহ্যকে ধারণ করে এবারের নববর্ষের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদ থেকে বের হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এই আয়োজনে বাঙালিসহ পাহাড় ও সমতলের ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর ৪৯৪ জন  শিল্পী বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়ে অংশগ্রহণ করবে। অংশগ্রহণকারী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে বাঙালি, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, লুসাই, পাংখোয়া, বম, ম্রো, রাখাইন, খিয়াং, বানাই, সাঁওতাল, ওঁরাও, তুরী, মাহালি, মালপাহাড়িয়া, কোল, মাহাতো, মুণ্ডা রাজোয়াড়, মনিপুরী, খাসিয়া, চা-জনগোষ্ঠী, গারো, হাজং, কোচ ও মালো। এছাড়াও শোভাযাত্রায় দুই শতাধিক ব্যান্ড মিউজিশিয়ানস অংশগ্রহণ করবে এবং পৃথিবীর শান্তি কামনায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সম্মিলিতভাবে গান পরিবেশিত হবে।

এবারের শোভাযাত্রা ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, কাঠের বাঘ, ইলিশ মাছ, ইসরায়েলের বর্বরতার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে তরমুজের ফালি, শান্তির পায়রা, পালকি, মীর মুগ্ধের স্মৃতিবাহী পানির বোতল—শোভাযাত্রায় থাকবে এই সাতটি বড় মোটিফ বা শিল্প-অবকাঠামো। এর বাইরে থাকবে মাঝারি আকৃতির ১০টি সুলতানি আমলের মুখোশ, ২০টি রঙিন চরকি, আটটি তালপাতার সেপাই, পাঁচটি তুহিন পাখি, চারটি পাখা, ২০টি ঘোড়া ও ১০০ ফুট লোকজ চিত্রাবলির ক্যানভাস। ছোট মোটিফের মধ্যে থাকবে ৮০টি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, ২০০টি বাঘের মাথা, ১০টি পলো, ছয়টি মাছ ধরার চাঁই, ২০টি মাথাল, পাঁচটি লাঙল, পাঁচটি মাছের ডোলা। চারুকলা অনুষদের সম্মুখভাগের সীমানা প্রাচীর ইতোমধ্যে হলুদ রঙের ওপর রাজশাহী অঞ্চলের শখের হাঁড়ির মোটিফে আঁকা হয়েছে ফুল-পাখি, লতা-পাতার দৃশ্য।

জাতীয় সংসদ ভবন

নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের কারিগরি সহায়তায় এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় ‘ড্রোন-শো’ ও ‘ব্যান্ড-শো’ আয়োজিত হবে।  

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পার্ক

রাজধানীর গুলশান-২ এর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পার্কে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১৩, ১৪ ও ১৫ এপ্রিল তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা ও নগর উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। পহেলা বৈশাখের দিন সকাল ৭টায় শান্ত–মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির আয়োজনে বর্ষবরণ উৎসব শুরু হবে। সকাল ৯টায় বর্ষবরণ নগর উৎসবের ওয়েবসাইট উন্মোচন করা হবে। এরপর বারামখানা ও পল্লীবাংলার অংশগ্রহণে শুরু হবে বাউল গান। বিকাল ৪টায় ঘাসফড়িং কয়ার, শিরোনাম হীন এবং প্লাজমিক নকের অংশগ্রহণে কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। 

শাহবাগ

‘ঐ নতুনের কেতন ওড়ে’ এই শিরোনামে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সকাল ১০টা থেকে দিনব্যাপী বাংলা বর্ষবরণ উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সাংস্কৃতিক ঐক্যফ্রন্ট। এই আয়োজনে চিরায়ত বাংলা গান, দেশাত্মবোধক গান, জারিসারি, পুঁথিপাঠ, গম্ভীরা ও নাটিকা পরিবেশিত হবে। অনুষ্ঠানে ১৪টি শিল্পীগোষ্ঠী অংশগ্রহণ করবে। 

অন্যান্য আয়োজন

নববর্ষকে বরণ করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সকাল থেকে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সকালে নগর ভবন প্রাঙ্গণ থেকে বৈশাখী আনন্দ র‌্যালি বের হবে। এরপর নগর ভবনে থাকবে পান্তা ইলিশের আয়োজন। দুপুরে করপোরেশনের আয়োজনে থাকবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকাল ৮টা থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে ‘জনমানুষের বৈশাখ, শেকড়ের সংস্কৃতি’ শিরোনামে ১০টি সংগঠনের অংশগ্রহণে নববর্ষের আয়োজন করা হয়েছে।

বিকেল ৪টায় ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বর্ষবরণের আয়োজন করেছে দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদ। জনপ্রিয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে। শেষে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে নাটক পরিবেশন করা হবে।

এর বাইরেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বৈশাখী মেলা ও উৎসবের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে উত্তরার দিয়াবাড়ি, সুত্রাপুরের ধূপখোলা মাঠ, ওয়ারীর টিপু সুলতান রোড এবং পূর্বাচলের তিনশ ফুট উল্লেখযোগ্য। এসব জায়গায় সারাবছরই কম-বেশি ভিড় থাকে। উৎসবের দিনে হয়তো ভিড়টা একটু বেশিই হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চারুকলার বকুলতলায় চৈত্রসংক্রান্তি উৎসব, গানে-নাচে-আবৃত্তিতে বর্ষবিদায়
  • ‘নতুন আলোয়’ ঐক্যের ডাকে এলো নববর্ষ
  • বৎসরের আবর্জনা দূরীভূত হউক
  • পহেলা বৈশাখে রাজধানীর কোথায় কী আয়োজন  
  • রাঙামাটিতে ঘরে ঘরে পাঁজন আপ্যায়ন
  • অনেক আয়োজন বন্ধে ম্লান বর্ষবরণ উৎসব
  • পাহাড়ে বর্ষবরণে উৎসব
  • নদীতে ফুল ভাসিয়ে পাহাড়ে বর্ষবরণ উৎসব শুরু
  • টুয়েলভ এর বৈশাখী সংগ্রহ