শ্রমিক দলের সভাপতি পরিচয়ে আ’লীগকে পুনর্বাসনের অভিযোগ
Published: 13th, April 2025 GMT
ফরিদপুরে জেলা শ্রমিক দলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি মোজাফফর আলী মুসার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পরিপন্থি কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো প্রকার সম্মেলন বা সভা ব্যতিরেকেই সংগঠনটির সভাপতি পরিচয়ে বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভা শ্রমিক দলের পকেট কমিটি বানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর পুনর্বাসনের অভিযোগ করা হয়েছে।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন দলটির একাংশের নেতারা। শহরের হাবেলী গোপালপুরে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশের দলীয় কার্যালয়ে জেলা, মহানগর ও কোতোয়ালি থানা শ্রমিক দলের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা শ্রমিক দলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি মো.
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সামসুল হক সরদার বলেন, ২০১০ সালে তিন বছর মেয়াদে জেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে মোজাফফর আলী মুসাকে সভাপতি ও ওলিয়ার রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাঁরা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে পড়েন। ২০১১ সালে মোজাফফর আলী মুসার ভাই শেখ মাহতাব আলী মেথু তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এমপি ও মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে যোগ দিয়ে পৌর মেয়র হন। এ সময় থেকেই মোজাফফর আলী মুসা তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে মিলে খন্দকার মোশাররফের ছক অনুযায়ী শ্রমিক দলকে নিষ্ক্রিয় করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে শুরু করেন। এতে কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে শ্রমিক দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম। এর মধ্যে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশ্যে তারা সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এক জনসভার মাধ্যমে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সামসুল হক সরদার বলেন, এর পর থেকে মোজাফফর আলী মুসা খন্দকার মোশাররফের আশীর্বাদে আবাসিক হোটেলে অনৈতিক ব্যবসাসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর জামাতা মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলার আসামি আসিবুর রহমান ফারহানের নেতৃত্বে হাতুড়ি বাহিনী গঠন করে ময়েজমঞ্জিলে হামলাসহ বিএনপির নেতাকর্মীর ওপর অত্যাচার শুরু করেন। তিনি বলেন, তাদের এই দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হলে প্রথমে চার সদস্যের একটি কমিটি ও পরে দুই সদস্য বিশিষ্ট আরেকটি কমিটিকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের বিদ্যুৎ দপ্তরের সাবেক সিবিএ নেতা সামসুল হক সরদার অভিযোগ করে বলেন, গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভোল পাল্টে শ্রমিক দলের সভাপতি পরিচয় দিয়ে অবৈধভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেন মোজাফফর আলী মুসা। কোনো সভা কিংবা সম্মেলনের আয়োজন ছাড়াই টাকার বিনিময়ে পুরোনো তারিখ দেখিয়ে জেলার সদরপুর, ভাঙ্গা ও নগরকান্দা উপজেলা কমিটি গঠন করেন তিনি। এ ছাড়া নতুন করে বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌর কমিটির অনুমোদনও দেন। যেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদারের আস্থাভাজন আওয়ামী লীগের লোকদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে মোজাফফর আলী মুসার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া মেলেনি।
এসব বিষয়ে কথা হয় শ্রমিক দলের ফরিদপুর অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও লেবার বোর্ডের সভাপতি খাজা খায়েরের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ অভিযোগের বিষয়ে তারা তদন্ত করে দেখবেন। তিনি জানান, ফরিদপুর জেলা কমিটি বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত। এখন যারা অভিযোগ করছেন, দুঃসময়ে তারা কেউ অভিযোগ করেননি, দলের পাশেও তাদের পাওয়া যায়নি। তাঁর দাবি, একজন আওয়ামী লীগ করতেই পারে, সেটা তো দোষের কিছু নয়। এমনকি, তিনিও এক সময় আওয়ামী লীগের ছিলেন, তাঁর বাবা ও ভাইও আওয়ামী লীগ করতেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম ল গ কম ট র আওয় ম গঠন ক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে আওয়ামী লীগ নেতা কয়েস গ্রেপ্তার
সিলেটে আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা মিসবাউল ইসলাম কয়েসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ নগরীর জিন্দাবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি গোলাপগঞ্জের শরীফগঞ্জ বসন্তপুর গ্রামের নিমার আলীর ছেলে। বর্তমানে সিলেট এয়ারপোর্ট থানার বড়শালা এলাকায় বাস করেন।
পুলিশ জানায়, মিসবাউল ইসলাম কয়েসের বিরুদ্ধে মারামারি, হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার আইনে সাতটি মামলা আছে। এর মধ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা রয়েছে ৬টি, দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম আব্দুল মোমেন ও তাঁর স্ত্রী সেলিনা মোমেনের প্রভাব খাটিয়ে টিলা কাটা, জমি দখলসহ নানা কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়াউল হক বলেন, গ্রেপ্তার কয়েসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় সাতটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।