ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ দেওয়া প্রশাসক হাফিজুর রহমানের পদত্যাগ চেয়েছে সংগঠনের কয়েকজন সাবেক পরিচালকের নেতৃত্বে গঠিত এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদ। ওই পরিষদ গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানিয়েছে। প্রশাসকের পদত্যাগ এবং এফবিসিসিআই সংস্কারে সহায়ক কমিটি বাতিল করতে ১০ দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। 
গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, সদস্য সচিব জালাল উদ্দীন, যুগ্ম আহ্বায়ক মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, আবু মোতালেব, শফিকুল ইসলাম ভরসা। এরা সবাই এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সাবেক পরিচালক হাফেজ হারুন। 

লিখিত বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন বলেন, গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর ফেডারেশনের পর্ষদ বাতিল করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তাঁকে ১২০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি প্রশাসক নিযুক্ত হয়ে পছন্দমতো ব্যক্তিদের নিয়ে সংস্কারের জন্য চার সদস্যের একটি সহায়ক কমিটি গঠন করেন। কমিটিতে একই সমিতি থেকে দু’জন রয়েছেন, যা বিধিসম্মত হয়নি। এ কমিটি সংস্কারের নামে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কালক্ষেপণ করছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, সম্প্রতি বিনিয়োগ সম্মেলনে এফবিসিসিআই থেকে প্রতিনিধি হিসেবে যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তাদের অনেকেই এর সদস্য নন। অনেকেরই কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য নেই। তারা এফবিসিসিআইর হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। বিষয়টি প্রশাসকের নজরে আনার পরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

সাংবদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু মোতালেব বলেন, এফবিসিসিআইর কোনো বৈঠকে সাবেক কোনো সভাপতি বা পরিচালকদের ডাকা হয় না। নামধারী কিছু ব্যবসায়ী এসব বৈঠকে অংশ নেন। তিনি বলেন, এফবিসিসিআই এখন ভাতের হোটেল হয়ে গেছে। এখানে চাল-ডালের আড়ত নেই। কিন্তু চাল-ডাল ব্যবসায়ীদের আড্ডা আছে। এভাবে আর চলতে পারে না।
এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক মীর নিজাম উদ্দিন বলেন, একটা পক্ষ নির্বাচন চায় না। ছোট ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করার সুযোগ থাকে না। তারা তাদের সমস্যার কথা শুধু এফবিসিসিআইকে জানাতে পারেন। কিন্তু নেতা না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এফবিসিসিআইর প্রশাসক হাফিজুর রহমান মোবাইল ফোনে সমকালকে বলেন, সংস্কারের প্রস্তাবনা সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে হয়তো সরকার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তাঁর পদত্যাগের দাবি ওঠার বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার তাঁকে নিয়োগ দিয়েছে। সরকার চাইলে তিনি চলে যাবেন। তবে কী জন্য পদত্যাগ চাওয়া হয়েছে, স্পষ্ট করা দরকার। তিনি মনে করেন, ব্যবসায়ীদের একটি অংশ সংস্কারকাজের বিরোধিতা করে আসছেন। সংস্কার হলে তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হতে পারে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় দ র র পদত য গ সদস য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাত বছর ধরে হেলিকপ্টার বানাচ্ছেন রাজমিস্ত্রী আরিফুল, তিন সপ্তাহের মধ্যে আকাশে ওড়ানোর স্বপ্ন

শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের মাটিয়ান গ্রামের রাজমিস্ত্রী আরিফুল ইসলাম হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। সাত বছর ধরে একটি হেলিকপ্টার তৈরি করায় এ নিয়ে এলাকায় তাঁকে নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে হেলিকপ্টার তৈরির কাজ শেষ করে তা আকাশে ওড়াতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন। 
  
আরিফুল মাটিয়ান গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেনের ছেলে। বাড়িতে ছোট্ট একটি ঘরের মধ্যে তৈরি হচ্ছে হেলিকপ্টার। আশেপাশে পড়ে রয়েছে নানা সরঞ্জাম। হেলিকপ্টার তৈরির স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে ২০১৮ সাল থেকে সাত বছর ধরে দৈনিক আয়ের কিছু অংশ থেকে সরঞ্জাম কিনে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন তিনি। এ পর্যন্ত তাঁর প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বাঁকি কাজ সম্পূর্ণ করতে আরও ৫০ হাজার টাকার দরকার বলে জানান তিনি। টাকার ব্যবস্থা হলে আগামী ২০ দিনের মধ্যে অবশিষ্ট কাজ শেষ করে হেলিকপ্টারটি আকাশে উড়াতে সক্ষম হবেন বলে জানান তিনি। 

মাটিয়ান গ্রামের জাকারিয়া জুয়েল বলেন, ছোটবেলা থেকে আরিফুল অনেক কিছু তৈরি করতেন। দরিদ্র আরিফুল তাঁর উপার্জনের টাকা দিয়ে সরঞ্জাম কিনে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। সরকারিভাবে কোনো সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু তৈরি করতে পারবেন। 

আরিফুলের স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, এক মেয়েকে নিয়ে অতি কষ্টে আমরা জীবনযাপন করি। আমার স্বামী তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে উপার্জনের টাকা ব্যয় করে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। এতে আমাদের কষ্ট হলেও আমরা খুশি।

কিচক ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন বলেন, হেলিকপ্টার তৈরির বিষয়টি আমি জেনেছি। আমরা তাঁর উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। 

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, হেলিকপ্টার তৈরি করায় আমরা তাঁকে সাধুবাদ জানাই। এ কাজে উৎসাহ যোগাতে প্রয়োজনে তাঁকে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে। হেলিকপ্টার দেখার জন্য প্রতিদিন তাঁর বাড়িতে শতশত মানুষ ভিড় জমাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ