গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কের সম্ভাব্য ঝুঁকি নিরসনে বাণিজ্য কূটনীতি জোরদার ও নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তা ছাড়া ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর সব দেশেই পণ্য রপ্তানিতে বাড়তি শুল্কের মুখোমুখি হতে হবে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিভিন্ন বাণিজ্য জোটে অংশগ্রহণ ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তির ওপর জোর দিতে হবে। 

রাজধানীর এফডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কহারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করে বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) গঠিত হয়েছিল। কিন্তু প্রভাবশালী দেশগুলো ডব্লিউটিওর নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করে না। তাই সংস্থাটি সেভাবে প্রভাব রাখতে পারেনি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র শুল্কহার বৃদ্ধিতেও নিয়মকানুনের ধার ধারেনি। 

তিনি বলেন, বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করে না। যে কারণে সমমনা কয়েকটি দেশ মিলে একাধিক বাণিজ্যিক জোট গড়ে তুলেছে। আমাদের তিন বছর পর এলডিসি থেকে বের হবে এমন দেশ কম্বোডিয়াও অর্থনৈতিক জোট আরসিইপি ও আসিয়ানের সদস্য। অথচ বাংলাদেশ এসব জোটের সদস্য নয়। তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য বাড়াতে অনেক দিন ধরেই বেশ কিছু দেশের সঙ্গে এফটিএ এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি করা হবে বলা হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের প্রায় ৫০ দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে। বাংলাদেশ শুধু ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সই করেছে। ট্রাম্পের উচ্চ শুল্কনীতি বাংলাদেশের জন্য সতর্কবার্তা বলে মন্তব্য করে তিনি জাপান, সিঙ্গাপুরসহ আরও কিছু দেশের সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব এ ধরনের চুক্তি করার তাগিদ দেন। 
ফাহমিদা খাতুন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক আরোপ নিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে স্পষ্ট যে, বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশও এ চ্যালেঞ্জের বাইরে নয়। তবে ৩৭ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ বাংলাদেশের জন্য কিছুটা স্বস্তির। এরপর কী অবস্থা দাঁড়াবে বোঝা যাচ্ছে না। 

অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে এ সংকট মোকাবিলা কতটুকু সম্ভব– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কে কতটুকু ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারবে, তা নির্ভর করবে প্রস্তুতি ও সক্ষমতার ওপর। এ ধরনের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজনৈতিক প্রস্তুতিও দরকার। একটি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা শক্তিশালী হওয়ার মাধ্যমে নৈতিক অবস্থান ভালো থাকলে অন্য দেশের সঙ্গে দরকষাকষি ভালো হয়। তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে সহিংসতা ও ভাঙচুর হলে বিনিয়োগকারীরা শঙ্কায় পড়বেন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা হলে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের বিপরীতে বাংলাদেশের পাল্টা ট্রানজিট বাতিল করা ঠিক হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথমে উচিত হবে এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করা। অনেক সময় অনেক দেশ পাল্টা সিদ্ধান্ত নেয়, যা ভালো কোনো উপায় নয়। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

অভিষেকের ‘দানব’ হয়ে ওঠার ম্যাচে যত রেকর্ড

রান পাচ্ছিলেন না অভিষেক শর্মা। এর আগের ৫ ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল ২৪ রানের। রান না পাওয়ার সব আক্ষেপ গতকাল পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে মিটিয়েছেন এই ওপেনার। খেলেছেন ৫৫ বলে ১৪১ রানের ইনিংস। তাঁর এই সেঞ্চুরিতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ২৪৬ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ম্যাচ জিতেছে। আর তাতে অনেক রেকর্ডের তালিকায় ঢুকে গেছে ম্যাচটি। যেসব রেকর্ড হলো সেটি দেখে নেওয়া যাক—১৪১আইপিএলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের এটিই সর্বোচ্চ স্কোর। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ।২৪৬আইপিএলে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে চতুর্থ। আইপিএলে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড পাঞ্জাব কিংসের। ২০২৪ সালে কলকাতার বিপক্ষে ২৬২ রান তাড়া করেছিল পাঞ্জাব।২৪৫আইপিএলে আগে ব্যাট করে এটি পাঞ্জাব কিংসের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। দুই ইনিংস মিলিয়ে দ্বিতীয়।১০গতকাল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে আইপিএলে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ১০ ছক্কার রেকর্ড গড়েছেন অভিষেক শর্মা। হায়দরাবাদের হয়ে এক ইনিংসে ৮টি করে ছক্কা মেরেছেন ৬ জন।২৪অভিষেক কাল সব মিলিয়ে বাউন্ডারি মেরেছেন ২৪টি। আইপিএলে এক ইনিংসে এর চেয়ে বেশি বাউন্ডারি মেরেছেন শুধু ক্রিস গেইল। ২০১২ সালে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ৩০টি বাউন্ডারি মেরেছিলেন গেইল। যশস্বী জয়সোয়ালও ২০২৩ সালে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে ২৪টি বাউন্ডারি মেরেছিলেন।১৯কাল অভিষেক ফিফটি পেয়েছেন ১৯ বলে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কোনো ব্যাটসম্যানের এটি তৃতীয় দ্রুততম ফিফটি। আইপিএলে ২০ বলের কম খেলে অভিষেক ফিফটি করেছেন ৩ বার। এর চেয়ে বেশিবার ২০ বলের কমে আইপিএলে ফিফটি করেছেন শুধু নিকোলাস পুরান।৪০বলের দিক থেকে আইপিএলে এটি পঞ্চম দ্রুততম সেঞ্চুরি।  ভারতীয়দের মধ্যে এটি তৃতীয় দ্রুততম। তবে অভিষেকই প্রথম ব্যাটসম্যান, যাঁর ৪০ বল বা এর নিচে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৩টি সেঞ্চুরি আছে।১৭১অভিষেক ও ট্রাভিস হেডের ১৭১ রানের ওপেনিং জুটি হায়দরাবাদের হয়ে আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি ডেভিড ওয়ার্নার ও জনি বেয়ারস্টোর। ২০১৯ সালে বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ওপেনিং জুটিতে ১৮৫ রান তুলেছিলেন ওয়ার্নার ও বেয়ারস্টো।‘ট্রাভিষেক’ জুটি কাল তুলেছে ১৭১ রান

সম্পর্কিত নিবন্ধ