Samakal:
2025-04-13@04:31:51 GMT

মুছে যাক গ্লানি...

Published: 12th, April 2025 GMT

মুছে যাক গ্লানি...

­বৈশাখের প্রথম দিনটার প্রহর গুনতে শুরু করেছেন নিশ্চয়ই! লাল-সাদা পাঞ্জাবি আর জিন্স পরে সেদিন রঙের খেলা দেখাবেন বন্ধুদের। আর প্রিয় মানুষটিকে মনের কথাটা জানাবেন রঙচঙা সে দিনটায়। আপনিও কি সেই দলে? 
মেলাই নববর্ষের প্রাণ
নববর্ষ পালনের ধরনটা একেক দেশে, একেক জাতির কাছে একেক রকম। বিদেশের কথা বাদ দিয়ে দেশে চোখ রাখি আমরা। যেমন ঢাকার নববর্ষের মূল আকর্ষণ আনন্দ শোভাযাত্রা, মেলা, পান্তা-ইলিশ এসবে। সারাদেশে কিন্তু ঢাকার মতো এমন ঘটা করে শোভাযাত্রা চোখে পড়ে না। তবে পুরো দেশের কথা ভাবলে মেলাই হচ্ছে নববর্ষের প্রধান বিষয়। বৈশাখী মেলা। রাজ্যের মানুষ হাজির হয় সেখানে। এখানে ধর্ম-বর্ণ এবং গোত্র বলতে কিছু নেই। এসব মেলার আয়োজক স্থানীয়রা। বৈশাখে সারাদেশ মেতে ওঠে রাজ্যের খেলাধুলায়। এখনও পহেলা বৈশাখে বলীখেলা হয় চট্টগ্রামে। পহেলা বৈশাখ আর বলীখেলা যেন অঙ্গাঙ্গী মিশে আছে। নববর্ষের উৎসবে আরও দেখা যায় মুরগির লড়াই, গরুর দৌড় ও ঘোড়দৌড়! ঐতিহ্যের হাত ধরে নতুন সংস্কার, নতুন সংস্কৃতি, নতুন চিন্তাধারার স্রোতে এসে আজ মিলেছে আমাদের উৎসব উদযাপন। জীর্ণ, পুরোনো, মিথ্যা, অসত্যকে হটিয়ে আবির্ভূত হয় নতুন, সত্য, নবজীবন। এর প্রতীক হয়ে ওঠে কালবৈশাখী। এই কালবৈশাখীই নববর্ষের সহচর। সুন্দরের অগ্রপথিক! 
সেই আদিকাল থেকে
সেই আদিকাল থেকে মানুষ বছরের এই দিনে রোজকার চেনা রুটিন তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে মেতে উঠে উদযাপনে। ঘরবাড়ি ধুয়েমুছে ধোপদুরস্ত পোশাকে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করে পানাহারে মেতে ওঠে। জড়ো হয় বটতলায়, মাঠেঘাটে খেলায় বসে পড়ে, তড়াক-পুকুরে সাঁতার কাটে, ডুব দেয় ও নদ-নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সবকিছু মিলে দেশটা হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। 
চাতকের আকুতি
চৈত্র শেষে বৈশাখের শুরু থেকে দেখা যায় গ্রীষ্মের তাপদাহ। আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরে এ সময়টায়। গাছের ছায়ায় ঝিমুয় পশু-পাখি। মানুষের হাতে তালপাখা। চাতকেরা চেঁচাতে থাকে পানির জন্য। চাতকের আকুতি মানুষের কণ্ঠেও ঝরে পড়ে হাহাকার হয়ে। মেঘের কাছ থেকে জল ভিক্ষা করাও বাংলা নববর্ষের আরও একটা সর্বজনীন অনুষ্ঠান। বাংলাদেশে এমন আকুতি কৃষিপ্রধান দেশেরই প্রতিধ্বনি। যতই আমরা শিল্প শিল্প বলে চেঁচাই, কৃষিই আমাদের গর্ব। কৃষি আমাদের সব। আর কে না জানে, এই কৃষিতে ভর করে বাংলা নববর্ষের এ উচ্ছ্বাস। এ উদ্দাম। এ উৎসব। খাজনা, হালখাতা, পুণ্যাহ– সবই কৃষিনির্ভর দেশের বৈশাখী আয়োজন।
সামলান নিজেকে
বয়সের প্রায় প্রতিটি ধাপেই রং পাল্টায় সৌন্দর্য। ঠিক বৈশাখের মতো করে। কিংবা বৈশাখ আমাদের নতুন করে তা মনে করিয়ে দেয়। সেটি যৌবনে যেমন হতে পারে, তেমনি বৃদ্ধ বয়সেও হতে পারে। এটাই স্বাভাবিক। বয়সের সঙ্গে এই সৌন্দর্যটা মেনে নিলে হয়। এই মানামানির চুক্তিটা প্রতিটি কাজের সঙ্গে করে নিতে পারলে সহজে শৃঙ্খলে চলে আসে যাযাবর জীবনটাও!
বরণ করুন হাসি মুখে
বছর ঘুরে আবার আসছে পহেলা বৈশাখ। এ বিশেষ দিনটিকে  সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মিশেলে সাজাতে এর মধ্যে শুরু হয়েছে নানা প্রস্তুতি। এ প্রস্তুতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ আপনি। বিগত বছরের সব দুঃখকে ভুলে নতুন বছরকে বরণ করে নিন হাসিমুখে। প্রস্তুতি নিন বৈশাখের সঙ্গে নিজেকে রাঙানোর। প্রিয় মানুষটিকে মনের কথা জানানোর জন্য বেছে নিতে পারেন এই রঙচঙে দিনটিকে! u

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নববর ষ র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিজুর প্রধান আকর্ষণ ‘পাজন’, কত ধরনের সবজি থাকে এতে

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বিজু, সাংগ্রাই, বৈসু, বিষু, সাংলান, সাংক্রাই, সাংগ্রাইং, বিহু, পাতা ও চাংক্রান উৎসবে অতিথি আপ্যায়নে ঐতিহ্যবাহী অনুষঙ্গ পাঁচন। পাহাড়িদের কাছে যা ‘পাজন’ নামে পরিচিত। আজ রোববার চাকমা সম্প্রদায়ের বিজুর দ্বিতীয় দিনে অতিথি আপ্যায়নের মূল পদ এই পাজন।

কত ধরনের সবজি থাকে পাজনে? জানতে চাইলে কেউ বলেন, ৩০ রকমের, কেউ ৪০ রকমের। তবে ৩০ রকমের সবজির কম দিলে পাজন রান্নাই জমে না। আর এসব সবজির বেশির ভাগ মানে, ৯০ শতাংশই বন্য পরিবেশে জন্মায়।

পাহাড়িরা বিশ্বাস করেন, পাজন খেলে রোগমুক্তি হয়। লেখক ও শিক্ষাবিদেরাও পাজনের ঔষধি গুণের কথা জানালেন। গতকাল শনিবার রাঙামাটি শহর ও বিভিন্ন উপজেলার অর্ধশতাধিকের বেশি বাজারে বিজুর হাট বসেছিল। প্রতিটি হাটে পাজনের জন্য সবজি বিক্রি হয়েছে। নানা ধরনের কন্দ, আলু, ফুল, পাতা, গাছের ডগাসহ বিচিত্র সব সবজি কিনতে ব্যস্ত ছিলেন ক্রেতারা।

রাঙামাটির শিক্ষাবিদ মংসানু চৌধুরী ও লেখক সুগত চাকমার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রাচীনকাল থেকে পাহাড়িদের সামাজিক উৎসবে মূল আকর্ষণ পাজন। অতিথিদের বিজু উৎসবে আপ্যায়ন শুরু হয় পাজন দিয়ে। শত বছর আগে পাহাড়িরা জুম ও প্রাকৃতিক বন থেকে সবজি সংগ্রহ করে পাজন রান্না করতেন। সংগ্রহ করা সেসব সবজির মধ্যে ৯০ শতাংশ ঔষধি গুণ রয়েছে। পাহাড়িদের বিশ্বাস, পাজন খেলে রোগমুক্তি হয়।

বাঙালির পাঁচনের সঙ্গে শব্দগত মিল থাকলেও পাহাড়ের পাজন রান্নার পদ্ধতি একেবারেই আলাদা। বাঙালি রান্নায় পাঁচনে আমিষ দেওয়ার রীতি নেই। কিন্তু পাহাড়ে পাজনে অবশ্যই শুঁটকি মাছ দিতে হবে। এ জন্য কয়েক মাস আগে থেকে বড় মাছ শুকিয়ে রাখা হয়। এ ছাড়া কাঁচা কাঁঠাল, আম, তারা, বেতাগী (বেতের গোড়ার অংশ), বেত প্রজাতির চাংকুল, কাট্টোল ডিঙি, বুনো আলু, কন্দ, বিভিন্ন ধরনের ফুল সংগ্রহ করে সবাই উৎসবের আগে।

পাজন রান্নায় ব্যবহৃত শুঁটকি ও মাছ। রাঙামাটি শহরের সুখী নীলগঞ্জ এলাকায় গতকাল সকালে তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিজুর প্রধান আকর্ষণ ‘পাজন’, কত ধরনের সবজি থাকে এতে
  • গুলশানে অনুষ্ঠিত হবে দুই দিনব্যাপী ‘অলিগলি হালখাতা’
  • পাহাড়ে বর্ষবরণ: উৎপত্তি, মিথ এবং বিভিন্ন দেশের উৎসবের সঙ্গে যোগসূত্র
  • চিরন্তন সাংগ্রাই
  • নববর্ষ উপলক্ষে গুলশানে থাকছে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান
  • বৈসাবি উৎসব ঘিরে রঙিন পাহাড়
  • দুই দিনব্যাপী আইইউবি থিয়েটারের বৈশাখী নাট্যোৎসব
  • দুই দিনব্যাপী আইইউবি থিয়েটার বৈশাখী নাট্যোৎসব
  • নববর্ষ বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার দাবি কবিতা পরিষদের