জনপ্রিয় ব্রিটিশ-বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর কন্যা লাবণী বড়ুয়ার একক সংগীতানুষ্ঠান সম্প্রতি ইস্ট লন্ডনের রিচমিক্স মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। ‘লাবণী বড়ুয়া আনবাউন্ডেড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে কানায় কানায় পূর্ণ মিলনায়তনে সুরের আবেশ ছড়ান শিল্পী। লাবণীর গান শুনতে দূরের গ্রাম থেকেও ছুটে আসেন দর্শকরা। অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামবাসীর মিলনমেলায় পরিণত হয় ইস্ট লন্ডনের রিচমিক্স মিলনায়তন।
অনুষ্ঠানে শিল্পী ‘বিমূর্ত এই রাত্রি আমার মৌনতার সুতোয় বোনা একটি রঙিন চাদর’, ‘তখন তোমার একুশ বছর বোধয়, আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁয়ায়’, ‘জোছনা করেছে আড়ি আসে না আমার বাড়ি’, ‘একটা গান লিখো আমার জন্য’, ‘আমার বন্ধু চিকন কালিয়া, দেইখো আসিয়া’সহ আরও একাধিক বাংলা, হিন্দি ও গজল পরিবেশন করেন।
‘ও আমার বন্ধুগণ চিরসাথী পথচলায়’ গানটি লাবণী বাংলা ভাষায় এবং ইউক্রেনের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী একা কাটেরিনা ইউক্রেনের ভাষায় গেয়ে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলেন।
রাঙতা আর্টসের উদ্যোগে অনুষ্ঠানে লাবণীর সঙ্গে কিবোর্ডে ছিলেন সুনীল যাদব, তবলায় পিয়াস বড়ুয়া, অক্টোপ্যাডে রিজান আহমেদ, কণ্ঠ এবং বান্দুরা সহযোগিতায় করেন ইউক্রেনের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী একা কাটেরিনা। আবৃত্তিশিল্পী ও কবি তানজিনা নূর-ই সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলো প্রক্ষেপণে ছিলেন সাহাব উদ্দিন বাচ্চু, সানি, সাবা ও জান্নাত।
শিল্পী লাবণী বড়ুয়া বলেন, ‘আপনাদের এই ভালোবাসা ভোলার নয়। লন্ডনের বিভিন্ন দূরের শহর থেকে আপনারা আমার গান শুনতে ছুটে এসেছেন এটা আমাকে আরও বেশি সাধনায় অনুপ্রাণিত করবে।’
লাবণীর সংগীতগুরু পণ্ডিত চিরঞ্জীব চক্রবর্তী বলেন, ‘আমার ছাত্রীর গান এত মানুষ ভালো বেসে শুনতে এসেছেন, এটা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। আপনাদের আশীর্বাদ পেলে লাবণী আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
সৌধ পরিচালক টিএম আহমেদ কায়সার বলেন, ‘এই সংগীতানুষ্ঠান নিরীক্ষাধর্মী নতুন গানের জন্য এক নতুন দরজা খুলে দিল। ইউক্রেনিয়ান বান্দুরা ও তাদের ঐতিহ্যের স্মারক সব সংগীতের সঙ্গে আমাদের দক্ষিণ এশীয় সংগীতের আশ্চর্য সংযোগ এবং এসব নিয়ে অপূর্ব সব উপস্থাপনা আমার খুব ভালো লেগেছে।’ এতে আরও বক্তব্য রাখেন হিলসাইড ট্রাভেলের হেলাল খান, গ্লোওমেনের প্রতিষ্ঠাতা স্নিগ্ধা মিষ্টি, সুজন বড়ুয়া প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, বাঁশখালীর মেয়ে শিল্পী লাবণী ইতোমধ্যে ব্রিটেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাঙালি শ্রোতাদের মনজয় করেছেন। শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেওয়া লাবণী মূলত পরিবেশন করেন বলিউড, বাংলা উপশাস্ত্রীয়, ফোক এবং আধুনিক গান। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পারমাণবিক চুক্তি: ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ‘ইতিবাচক’ আলোচনা
পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ‘ইতিবাচক’ ও ‘গঠনমূলক’ আলোচনা হয়েছে। গতকাল শনিবার ওমানে এ আলোচনা হয়।
তবে বৈঠকে প্রত্যক্ষ নয়, বরং ওমানের মধ্যস্থতায় আলোচনা হয়েছে। ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বার্তা বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছেন। আগামী সপ্তাহে উভয় পক্ষ আবার বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছে। খবর রয়টার্স
এই আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল তেহরানের বাড়তে থাকা পারমাণবিক কর্মসূচি মোকাবিলা করা— যেখানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি কোনো সমঝোতা না হয় তবে ইরানে সামরিক অভিযান শুরু করা হতে পারে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেছেন, আমার মনে হয়, আমরা আলোচনার রূপরেখার খুব কাছাকাছি আছি। আর যদি আগামী সপ্তাহে এই ভিত্তির বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছতে পারি, তবে সেটি একটি বড় অগ্রগতি হবে এবং আমরা সেই ভিত্তির ওপর বাস্তব আলোচনা শুরু করতে পারব। তবে সম্ভাবনা রয়েছে। আলোচনা "শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক পরিবেশে" হয়েছে এবং তিনি জানিয়েছেন, আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো—আঞ্চলিক উত্তেজনা কমানো, বন্দী বিনিময়, ও কিছু সীমিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ।
আরাকচি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদ থেকে এ পর্যন্ত এটি ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আলোচনা। ‘উৎপাদনশীল, শান্তিপূর্ণ এবং ইতিবাচক পরিবেশে’ এটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘উভয় পক্ষ আগামী শনিবার আবার আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই স্বল্পমেয়াদে একটি সমঝোতা চায়। আমরা শুধু আলাপ-আলোচনার জন্য আলোচনা করতে চাই না।’
হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানায়, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভেন উইক ওমানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আনা এসক্রোগিমা এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্বাস আরাকচিকে নিয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা ‘খুবই ইতিবাচক ও গঠনমূলক’ হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই বিষয়গুলো অত্যন্ত জটিল, তবে আজ বিশেষ দূত উইটকফের সরাসরি যোগাযোগ পারস্পরিক উপকারে পৌঁছানোর পথে একটি অগ্রগতি।” উভয় পক্ষ আবার আগামী শনিবার সাক্ষাৎ করতে সম্মত হয়েছে।
ট্রাম্প গত সোমবার হঠাৎ ঘোষণা দেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান ওমানে আলোচনা শুরু করবে। এর আগেও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছে ওমান।