১৯ বছর পর জামায়াতের সমাবেশ, নেতাকর্মীর ঢল
Published: 12th, April 2025 GMT
প্রায় ১৯ বছর পর সন্দ্বীপে প্রকাশ্যে কর্মী সমাবেশ করল জামায়াতে ইসলামী। গতকাল শনিবার সন্দ্বীপ উপজেলা কমপ্লেক্স মাঠে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠেনর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ শাহজাহান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বিচার চায়, মৌলিক সংস্কার চায়। সংস্কারের সুযোগ না দিয়ে, যৌক্তিক সময় না দিয়ে কেউ কেউ নির্বাচন নির্বাচন করছি। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে, স্বৈরাচার যাতে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে পথ বন্ধ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়লেও কাউকে দেশ ছাড়তে হয়নি। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের মাত্রা এত বেশি ছিল যে, তাদের দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে।’
প্রধান বক্তা শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা আনেনি, শেখ মুজিব স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেয়নি। ৯ মাস যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছে বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছে জাতি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা হয়েছে, পূর্ণতা পেলাম ২০২৪ সালে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে নির্বাচন নির্বাচন করছেন। আমরা এখন সংস্কারবিহীন নির্বাচন চাই না। আগে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, ওলামা লীগের বিচার হবে। তারপর এ দেশে নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনা পালিয়ে থাকতে পারবেন না। যে রশিতে নিজামীকে ফাঁসি দিয়েছেন, সে রশিতে আপনাকে ফাঁসিতে ঝোলাব। কেয়ামতের বছর হতে পারে, কিন্তু আওয়ামী লীগ আর রাজনীতি করতে পারবে না।’
কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আমির মুহাম্মদ আলা উদ্দীন সিকদার বলেন, ‘সন্দ্বীপের ৬০ মৌজা সীমানা সন্দ্বীপকে বুঝিয়ে দিতে হবে। ভাসানচর নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ভাসানচর সন্দ্বীপের সাবেক ইউনিয়ন। সন্দ্বীপের অংশ কাউকে দিতে পারি না। অন্যায়ভাবে ওবায়দুল কাদের এটা দখল করে নিয়েছিল। সময় এসেছে সন্দ্বীপের ভূখণ্ড সন্দ্বীপকে বুঝিয়ে দেওয়ার। যদি কোনো ষড়যন্ত্র হয় জামায়াতে ইসলামী সন্দ্বীপবাসীকে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’
সন্দ্বীপ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির সিরাজুল ইসলাম ফিরোজের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা আবু তাহেরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াত ইসলামী চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাবেক আমির অধ্যাপক নুরুল আমিন চৌধুরী, উত্তর জেলার আমির মুহাম্মদ আলা উদ্দীন সিকদার, উত্তর জেলার সেক্রেটারি মুহাম্মদ আবদুল জাব্বার, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম, চট্টগ্রাম মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম রনি, উত্তর জেলার সভাপতি মুহাম্মদ শওকত আলী প্রমুখ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সন্দ্বীপের নায়েবে আমির রফিকুল মাওলা, চট্টগ্রাম গণউন্নয়ন পরিষদের সহসভাপতি ফরিদ উদ্দিন নিজামী।
আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী সন্দ্বীপ যুব বিভাগের সভাপতি মাকছুদুর রহমান, সেক্রেটারি ছায়েদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সন্দ্বীপের সভাপতি জিয়াউল হাসান ও সেক্রেটারি কেফায়েত উল্লাহ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম স ব ধ নত ম হ ম মদ ইসল ম আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আজ ক্যাম্পাসে প্রবেশের ঘোষণা কুয়েট শিক্ষার্থীদের
কর্তৃপক্ষের নিষেধ উপেক্ষা করে বন্ধ থাকা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েটে) ক্যাম্পাসে প্রবেশের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার দুপুর ২টায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ও হলে প্রবেশ করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে কর্তৃপক্ষ তাদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়েছে।
ছাত্রদের প্রবেশ ঠেকাতে ক্যাম্পাসের প্রধান দুই ফটকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ নিয়ে কুয়েটে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে আজ ‘লং মার্চ টু কুয়েট’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাতে খুবি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফেসবুক পেজে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এর প্রেক্ষিতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে শিক্ষার্থীরা গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোববার দুপুর ২টায় বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে হলে উঠার ঘোষণা দিয়ে আসছে। তা ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাধিক সভা, প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি, বিজ্ঞপ্তি জারি ও অভিভাবকদের মোবাইলে এসএমএস দিয়ে শিক্ষার্থীদের কুয়েটে না পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, প্রায় দেড় মাস হল বন্ধ থাকায় লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেকের টিউশনিসহ আয়ের উৎস নষ্ট হচ্ছে। তারা শান্তিপূর্ণভাবে একসঙ্গে ক্যাম্পাসে ঢুকবেন। তারা যাতে ক্যাম্পাসে ফিরতে না পারেন সেজন্য কুয়েট কর্তৃপক্ষ নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। এমনকি কুয়েট প্রশাসন বাইরের একজনকে উসকানি দিয়ে তাকে দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছে।
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে বন্ধ থাকা ক্যাম্পাসে না ফেরে সেজন্য শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের বিভিন্নভাবে বোঝানো হয়েছে। বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনার ও পুলিশ কমিশনারকেও অবহিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (নর্থ) আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, কুয়েটের পরিস্থিতি তারা অবগত আছেন। ক্যাম্পাসের ২টি গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।