ডিসেম্বর থেকে জুনে নির্বাচনের লক্ষ্যে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ
Published: 12th, April 2025 GMT
আগামী ডিসেম্বর থেকে পরের বছর জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার লক্ষ্যে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ঐকমত্য কমিশনের দুই সদস্যের সঙ্গে বৈঠকের সময় এই তাগিদ দেন তিনি।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকালে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় তার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও সদস্য বদিউল আলম মজুমদার। এ সময় সেখানে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য গঠন) মনির হায়দার।
বৈঠকের পর রাত ৮টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নিতে প্রধান উপদেষ্টা তাগিদ দিয়েছেন। তবে রাত সোয়া ৯টার পর সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রেস উইং।
আরো পড়ুন:
ডিসেম্বরে নির্বাচনের লক্ষ্যে সংস্কার দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার
ইউনূস-মোদির বৈঠক আশার আলো দেখাচ্ছে: মির্জা ফখরুল
নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইতিপূর্বে ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া প্রেস নোটে ভুলবশত কেবল ডিসেম্বর মাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান আগামী ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।
প্রেস উইং বলেছে, বৈঠকে অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও বদিউল আলম মজুমদার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনূসকে অবহিত করেন। বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন তারা।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার (১২ এপ্রিল) পর্যন্ত মোট আট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সময়সূচি নির্ধারণ করা আছে।
সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়ে জনমত যাচাই এবং সে বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন তারা।
ঢাকা/হাসান/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য তৈরিতে আলোচনা চালিয়ে যাবে বিএনপি: সালাউদ্দিন আহমেদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও নির্বাচন ব্যবস্থার উপরে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। এগুলোর উপরে বিস্তারিত আলোচনা চলছে। সংবিধান সংস্কার দিয়ে শুরু করেছি, তারপর জুডিশিয়ারি হবে, এরপরে নির্বাচন ব্যবস্থা হবে। আমরা আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই। আজকে যদি শেষ করতে না পারি, পরেও আলোচনা হবে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে শুরু হওয়া বৈঠকের চা বিরতিতে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে সিরিয়াস বলেই ঐকমত্য তৈরিতে আলোচনা চালাচ্ছে বিএনপি। স্প্রেড শিটে (রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চিঠি) বিভ্রান্ত সৃষ্টি ও মিসলিড করা হয়েছে। এ নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দফাওয়ারী আলোচনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা বোঝাতে চাচ্ছি, সংস্কারের বিষয়ে কতটা সিরিয়াস বিএনপি। সংবিধান সংস্কারের মধ্যে ১৩১টা প্রস্তাব আছে, স্পেডশিটে আমরা পেয়েছিলাম মাত্র ৭০টা দফা। দফাওয়ারি আলোচনা চলছে। সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে শুরু করে প্রজাতন্ত্র ও রাষ্ট্রের মূলনীতি, মৌলিক অধিকারের বিষয়ে দফায় দফায় আলোচনা করব। মোটাদাগে সংবিধান সংস্কারের মৌলিক বিষয়ে তারা যে প্রস্তাবনাগুলো দিয়েছেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করব একটা জায়গায় আসার জন্য। আর যেসব বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি সেগুলো ২৫টির মতো একমত ও আংশিক একমত হয়েছি। বাকি অধিকাংশ বিষয়ে স্পেডশিটে আমরা একমত হতে পারি নাই। ১৩১ দফার মধ্য বিস্তারিত আলাপ আছে। কমিশনের মৌলিক প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে আলাপ করে ঐকমত্যে আসার চেষ্টা করা হবে। যে সংস্কারে জাতির কল্যাণ হয় সেটিই বিবেচনা করা হবে।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুডিশিয়ারিতে অল্প বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করছি আমাদের অনেকটা মিসলিড করার মতো হয়েছে। বিস্তারিত মতামত দিতে গিয়ে দেখা গেছে, দেড়শর বেশি দফা ছিল যার মধ্যে আমরা ৮৯টি দফার বিষয়ে বিস্তারিত মতামত দিয়েছি। যে সমস্ত বিষয়ে হ্যাঁ-না জবাব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেখানে গিয়ে দেখলাম বিস্তর ফারাক। যেমন বলা আছে- আর্টিকেল ৯৫ সংশোধনী ব্যতিরেকে এখনই যদি বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়ার জন্য বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ জারি করা হয়, সেটার ক্ষেত্রে বর্তমান সংবিধানের অবস্থা বহাল রেখে বিচারক নিয়োগের অধ্যাদেশ ও তার অধীনে কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও আইনটার মধ্যে লেখা আছে কাউন্সিল গঠন করতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বিএনপি চায় কিন্তু প্রক্রিয়া যেন সাংবিধানিকভাবে হয়। বিচারক নিয়োগের অধ্যাদেশের ক্ষমতাসহ সকল সংস্কার সাংবিধানিকভাবে হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, যাই হোক না কেন সেটা আনকনন্সিটিউশনাল (অসাংবিধানিক) হবে যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা কন্সটিটিউশনে (সংবিধান) গৃহীত না হচ্ছে। কারণ সেখানে অধ্যাদেশ করার মতো ক্ষমতা জুডিশিয়ারিকে দেওয়া হয় নাই। সবকিছু বিধিমাফিক হওয়া উচিত।