বাড়িতে বন্ধুরা আসার আগেই চলে গেল কেয়া
Published: 12th, April 2025 GMT
পহেলা বৈশাখে পাড়ার ছেলেমেয়েরা একত্র হয়ে নববর্ষ বরণ করবে। নিজেদের হাতে রান্না করা নানা পদের খাবার আয়োজনেরও পরিকল্পনা ছিল। সাউন্ড বক্সে গান বাজিয়ে আনন্দ-উৎসবের প্রস্তুতি ছিল তাদের। বর্ষবরণের এ আয়োজন হওয়ার কথা ছিল কেয়া সর্দারের বাড়িতে।
পহেলা বৈশাখ বাড়িতে বন্ধুরা আসবে বলে খেজুর গাছের কাঁচা পাতা কেটে এনে রান্নাঘর পরিষ্কার করছিল কেয়া। এক পর্যায়ে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে পড়ে সে। তারপর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এতে বৈশাখ আর বন্ধুরা আসার আগেই না ফেরার দেশে চলে গেল কেয়া (১২)। তাঁর এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে সহপাঠী, বন্ধু ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
গত শুক্রবার রাতে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌরসভার সোলাপাড়া পশ্চিম তালপাড়ায় রামচন্দ্র রায়ের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কেয়া সর্দার মহল্লার রামচন্দ্র সর্দারের মেয়ে। সে সোলাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
প্রতিবেশী সবুজ কুমার প্রামাণিক জানান, কেয়ার আগে তাঁর ছোট আরেকটি বোন বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে। আবারও পরিবারে একই ধরনের ঘটনা ঘটা বেদনাদায়ক। সহপাঠী সততা সরকারের ভাষ্য, বান্ধবীর অকালে চলে যাওয়ায় তারা শোকাহত। তার এমন বিদায় তারা মেনে নিতে পারছে না। একই কথা বলেছে আরেক বান্ধবী আনিকা সরকার।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নববর্ষ বরণ করতে পাড়ার সহপাঠী ও সমবয়সী ছেলেমেয়েরা একত্র হয়ে রান্না, খাবার পরিবেশনসহ আনন্দ করার স্থান নির্ধারণ করে কেয়াদের বাড়িতে। এ জন্য শুক্রবার রাতে রান্নাঘর পরিষ্কার করছিল সে। এক পর্যায়ে রান্নাঘরের ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক তারে কাঁচা খেজুরের পাতা লেগে সে বিদ্যুতায়িত হয়।
বিষয়টি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন দ্রুত কেয়াকে উদ্ধার করে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। কেয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চারুকলায় আগুনে পুড়ল ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি`
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে পয়রা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য নির্মাণাধীন ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ আগুনে পুড়ে গেছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোর পৌনে ৫টার দিকে আগুন লাগে। আগুনে শান্তির পায়রা মোটিফেরও কিছু অংশ পুড়ে গেছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত চারুকলার এক শিক্ষার্থী বলেন, “এটার (‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতির’) নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছিল। আজকের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যেত। এটা নিঃসন্দেহে ষড়যন্ত্র।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল বলেন, “ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতির টার্গেট করে আগুন লাগানো হয়েছে। ওই আকৃতি পুরোটাই পুড়ে গেছে। একইসাথে পায়রার অবয়বটাও পুড়ে গেছে।”
তিনি আরো বলেন, “আগুনটা ফজরের নামাজের সময় লাগানো হয়েছে। আমরা এর পরেই খবর পাই। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে ওটা পুড়ে যায়। আগুনটা ইচ্ছে করেই লাগানো হয়েছে। তবে কে বা কারা করেছে তা জানা যায়নি৷ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আজহারুল শেখ রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমাদের ১০টায় একটা মিটিং আছে। আমরা একটা বিজ্ঞপ্তিও রেডি করেছি। মিটিংয়ের পরে আমরা অফিসিয়ালি বিবৃতিতে জানিয়ে দেব। মিটিংয়ে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করব।”
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে সামনে রেখে এবার নববর্ষের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারকার প্রধান মোটিফ ছিল ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’। এটিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি ধারণা করে কিছু দিন ধরেই সামাজিক মাধ্যমে চলছিলো আলোচনা-সমালোচনা। বর্ষবরণের ঠিক দুদিন আগেই যা আগুনে পুড়ল।
ঢাকা/সৌরভ/ইভা