সিলেটের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
Published: 12th, April 2025 GMT
তিন ঘণ্টা পর রাত সোয়া ৯টায় সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৫টা ৫৩ মিনিটে সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর রেলস্টেশন পৌঁছালে ইঞ্জিন বিকল হলে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
শমশেরনগর রেলস্টেশন মাস্টার জামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যা ৫টা ৫৩ মিনিটে ঢাকা থেকে সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস শমশেরনগর রেলস্টেশন পৌঁছালে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। পরে সিলেট থেকে বিকল্প ইঞ্জিন এসে প্রায় তিন ঘণ্টা পর রাত সোয়া ৯টায় পুনরায় সিলেটের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।
ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় সিলেটগামী যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। অনেক যাত্রী বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে গন্তব্যে ছুটে যান।
শমশেরনগর রেলস্টেশন মাস্টার জামাল হোসেন বলেন, সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস শমশেরনগর রেলস্টেশন আসার পর ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। পরে রাত সোয়া ৯টার দিকে সিলেট থেকে বিকল্প ইঞ্জিন আসার পর পুনরায় সিলেটের উদ্দেশ্য ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে। এ সময় সিলেটগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশনে আটকা পড়ে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কালনী এক্সপ্রেস সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ল য গ য গ বন ধ
এছাড়াও পড়ুন:
চালকলমালিকদের সুবিধা দিতেই ধান সংগ্রহের পরিমাণ কমাচ্ছে সরকার
খাদ্য মন্ত্রণালয় এবারের বোরো মৌসুমে সাড়ে তিন লাখ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা গত বছর ছিল ছয় লাখ টন। এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে শুক্রবার বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৪৩ বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁরা বলছেন, কৃষককে বঞ্চিত করে মিলারদের সুবিধা দিতে সরকার ধান সংগ্রহের পরিমাণ কমিয়েছে।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সাবেক কৃষিসচিব আনোয়ার ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ, লেখক ও গবেষক কল্লোল মোস্তফা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক মাহা মীর্জা, লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন প্রমুখ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শুধু ধান ও চাল ছাড়া অন্য কোনো শস্য সরকারিভাবে কেনা হয় না। আবার কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহের সময় দাম নির্ধারণে অস্বচ্ছ ও অদক্ষ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। ফলে কৃষক বছরের পর বছর প্রতারণার শিকার হন।
ধান-চাল কেনায় সরকারি উদ্যোগ অতি সামান্য হওয়ায় ধানের বাজারে তা খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারে না উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এ প্রবণতার কারণে প্রতিবছর চালকলমালিকদের (মিলার) একচ্ছত্রভাবে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে।
এই সিন্ডিকেট ভাঙার একমাত্র উপায় হিসেবে কৃষকের কাছ থেকে সরকারি ক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে অধিক পরিমাণে ধান কেনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে।
সরকার চালকলমালিকদের কাছ থেকে চাল কিনলে কৃষকের লাভ হয় না উল্লেখ করে বিবৃতি অভিযোগ করা হয়েছে, এই প্রক্রিয়ায় লাভের একটা বড় অংশ মিলারদের পকেটে চলে যায়। কিন্তু কৃষকের থেকে সরাসরি ধান কেনা হলে বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
এবার ধানের দাম প্রতি কেজিতে চার টাকা বাড়ানো হয়েছে, যা সাধুবাদযোগ্য বলে অভিমত দিয়েছেন বিবৃতিদাতারা।
খাদ্য অধিদপ্তরের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, এবার তাঁরা প্রতি কেজি ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৩৬ টাকায়, যা গত বছরের তুলনায় চার টাকা বেশি। ফলে কৃষকেরা লাভবান হবেন। অন্যদিকে চাল কেনা হবে প্রতি কেজি ৪৯ টাকায়।
৩ লাখ টন ধানের পাশাপাশি এবার সাড়ে ১৪ লাখ টন চাল (সেদ্ধ) সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।
ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কমেছে কেন জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, দেশে চাল আমদানি হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। ধান কিনলে সেটা ভাঙানো ও মজুদের সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে খাদ্য অধিদপ্তরের। সে জন্য চাইলেও তাঁরা এই মুহূর্তে বেশি ধান সংগ্রহ করতে পারছেন না।
বিবৃতিতে ৪৩ নাগরিকের পক্ষ থেকে চারটি দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। সেগুলো হলো ধান সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা এখনই পরিবর্তন করে ১৭ লাখ টনে উন্নীত করা, চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ টনে নামিয়ে আনা, চলতি বোরো মৌসুমেই কৃষকের কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে ধান কেনার পরিমাণ ৫০ লাখ টনে উন্নীত করা এবং আগামী অর্থবছরের মধ্যেই সরকারি গুদামের সক্ষমতা ২১ লাখ টন থেকে ৫০ লাখ টনে উন্নীত করা।
কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য প্রাথমিকভাবে গুদামসক্ষমতা খুব বেশি বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না বলে দাবি করা হয়েছে বিবৃতিতে। বলা হয়েছে, খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে দেশের অধিকাংশ চালকলের একটি বার্ষিক চুক্তি হয়ে থাকে। সেই চুক্তিতে শুধু চাল সরবরাহের শর্ত থাকে।
চুক্তিতে আরেকটি শর্ত যুক্ত করার পরামর্শ দিয়ে বিবৃতিদাতারা বলেছেন, সরকার কৃষকের কাছ থেকে যে ধান কিনবে তা মাড়াই করবে বেসরকারি চালকলগুলো। চালকল থেকে মাড়াই করা চাল সরাসরি সরকারের গুদামে চলে যাবে। এর ফলে বর্তমান গুদামসক্ষমতা দিয়েই অধিক পরিমাণে ধান কেনা সম্ভব হবে।
সরকারের সংগ্রহ কার্যক্রমে আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করতে গ্রামভিত্তিক ও ইউনিয়নভিত্তিক শস্য সংরক্ষণাগার করারও দাবি জানিয়েছেন বিবৃতিদাতারা। তাঁরা বলেছেন, শুধু সমতলের কৃষি নয়, পাহাড়ি এলাকার জুমে উৎপাদিত ধান ও ফসল ন্যায্যমূল্য দিয়ে কিনতে হবে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের স্থানীয় মূল্য নির্ধারণ কমিটিতে নারী-পুরুষ কৃষক ও জুমিয়া প্রতিনিধি রাখার দাবি জানান তাঁরা।