ফতুল্লার পানি ও মাদকের সমস্যার সমাধান করবে বিএনপি : দিপু ভূঁইয়া
Published: 12th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু বলেন, বিএনপি আপনাদের নিয়ে মাদক ও সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করবে। আমাদের সন্তানরা যেন নিরাপদে স্কুলে যেতে পারে আমরা সে ব্যবস্থাও করবো।
এই ফতুল্লায় পানি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে সেটা নিয়ে স্থানীয় এমপি অনেক কথা বলেছেন কিন্তু সমাধান করেননি। বিএনপি ক্ষমতায় এলে সে সমস্যা সমাধান করা হবে। আওয়ামীলীগের আমলে এই ফতুল্লায় ঘরে ঘরে মাদক পৌছে গিয়েছিল, সে মাদকের সমস্যা সমাধানও করা হবে।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ঐতিহাসিক ডিআইটি মাঠে ফতুল্লা থানা বিএনপির সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে ফতুল্লার ডিআইটি মাঠে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু আরও বলেন, আপনারা পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চাইলে নির্বাচন দিন। নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় বসুন। আপনারা ভাবেন নির্বাচন দিলে বিএনপি চলে আসবে। কারণ বিএনপি একমাত্র দল যারা জনগণের সাথে আছে।
আজকের এই মাঠে বিগত সতেরো বছর অনেক নেতা এসেছে অনেক এমপি এসেছে। কেউ কী আপনাদের জলাবদ্ধতার সমস্যার সমাধান করেছে? তারা শুধু সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে ও লুটপাট করতে এসেছিল। আজকে এ মাঠে আমি আপনাদের কথা দিয়ে যাই, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আপনারা ঘরেই কোরবানি দিতে পারবেন, আর ছাদে উঠে কোরবানি করা লাগবে না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনারা সংস্কারের কথা বলছেন, শেখ হাসিনা যেদিন পালিয়ে গেছে সেদিনই অর্ধেক সংস্কার হয়ে গিয়েছে। পাঁচ বছর নয়, ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকুন কিন্তু জনগনের মেন্ডেট নিয়ে থাকুন। নির্বাচন দিন, দেখেন জনগনকে কে সংসদে পাঠায়।
সমাবেশে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটুর সভাপতিত্বে ও থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, জেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ার সাদাত সায়েম, ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রফিকুল ইসলাম ভূইয়া জেলা ছাত্রলের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান ভূঁইয়া প্রমূখ।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র স ক ষমত য় ল ইসল ম আপন র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ভয়ে স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে থানায় তরুণ
প্রেমের সম্পর্কের জেরে পরিবারের অসম্মতিতে পালিয়ে বিয়ে করেন শাকিল হোসেন (২৪) ও মিতা খাতুন। দুজনের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারায় হলেও বিয়ের পর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে থাকতেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে তিন দিন আগে ‘আত্মহত্যা’ করেন মিতা। রূপগঞ্জ থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত করে শাকিলের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।
শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে মিতাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে দেন শাকিল। এ ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ‘মারধরের ভয়ে’ স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গ্রামে না গিয়ে বাগমারা থানায় যান শাকিল। পরে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে লাশ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহীর বাগমারা থানায় এ ঘটনা ঘটেছে। মারা যাওয়া মিতা খাতুন (১৮) উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে। পুলিশি হেফাজতে থাকা শাকিল হোসেন একই ইউনিয়নের ভটখালী গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের সাত মাস বয়সী একটি শিশুসন্তান আছে। পেশায় এক্সকাভেটরচালক (খননযন্ত্র) শাকিল পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বসবাস করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে বাগমারা থানায় ঢোকে লাশবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স। এ সময় শাকিল নামের এক তরুণ পুলিশকে জানান, অ্যাম্বুলেন্সে তাঁর স্ত্রীর লাশ আছে। তিন দিন আগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে এবং নারায়ণগঞ্জে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন এমন আশঙ্কায় তিনি লাশ নিয়ে থানায় আসেন।
পুলিশ ও স্বজনেরা জানান, তিন বছর আগে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্কের জেরে পালিয়ে বিয়ে করেন মিতা ও শাকিল। বিয়ের পর তাঁরা নারায়ণগঞ্জে চলে যান। সেখানে এক্সকাভেটর চালাতেন। পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রী ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (টিকটক) পোস্ট করতেন। গত মঙ্গলবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। এর জেরে স্ত্রীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে মিতা গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেন। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় শাকিল একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। পরে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল লাশ হস্তান্তর করা হয়। খবর পেয়ে নিহত মিতার স্বজনেরা গতকাল লাশ আনতে নারায়ণগঞ্জে গিয়ে ফিরে আসেন। তার আগেই লাশ নিয়ে সটকে পড়েন শাকিল।
মিতার বাবা জালাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘জামাই এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। এই কারণে মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয় বলে জানতে পেরেছি। তাঁর মেয়েকে মেরে ফেলে লাশ জানালার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়েছে। লাশটি বাগমারা থানায় আছে জানার পর আজ থানা থেকে লাশ নিয়ে এসেছি।’ শাকিলকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
অভিযুক্ত শাকিল পুলিশি হেফাজতে থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শাকিলের বরাত দিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিতা আত্মহত্যা করেছে বলে সে (শাকিল) জানিয়েছে। লাশ হস্তান্তর করতে দেরি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে কিছু লোক তাঁকে অনুসরণ করছিল, এই ভয়ে লাশ নিয়ে গোপনে চলে এসেছে।’ তিনি বলেন, দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে মেয়ে পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে লাশ দাফনের জন্য মেয়ের বাবার কাছে দেওয়া হয়েছে। শাকিল এখনো (বেলা তিনটা) পুলিশি হেফাজতে আছে। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্থানীয় যোগীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম জানান, শাকিল ও মিতা পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করার পর নারায়ণগঞ্জে থাকতেন। দাফনের জন্য লাশ বাগমারা থানা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন দাফনের প্রক্রিয়া চলছে।