ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় এসএসসি (দাখিল) পরীক্ষার্থীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে মুখে গামছা বেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া সদর উপজেলায় পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। দুই ভুক্তভোগীকে ভোলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এসএসসি পরীক্ষার্থী জানায়, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে লেখাপড়ার এক পর্যায়ে সে শৌচাগারে যায়। এ সময় ওমর কাজী নামে এক যুবক গামছা দিয়ে তার মুখ চেপে ধরে তুলে নিয়ে যায়। দূরে নিয়ে ছুরি দিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। পরে ওই কিশোরী বাড়ি ফিরে অচেতন হয়ে পড়ে। তাকে প্রথমে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

ভুক্তভোগীর ভাই ও মা বলেন, ঘটনাটি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশের পরামর্শে ভোলার হাসপাতালে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বোরহানউদ্দিন থানায় মামলা করবেন। 

থানার ওসি আহসান কবির জানান, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ দেননি।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নে পাঁচ বছরের শিশুকে চিপস দেওয়ার কথা বলে ডেকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক কিশোরের বিরুদ্ধে। শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাতেই তাকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে ভোলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শংকর তালুকদারসহ পুলিশের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। 

চিকিৎসক তায়েবুর রহমান জানান, দুই ভুক্তভোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দু’জনই শঙ্কামুক্ত।

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার গাবতলী এলাকায় কোলের শিশুকে জিম্মি করে এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাঁকে প্রায় এক মাস ধরে দফায় দফায় ধর্ষণ করে বখাটেরা। সর্বশেষ ৯ এপ্রিল ধর্ষণে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই নারী। ঘটনাটি তিনি স্বামীকে জানান এবং শুক্রবার ফতুল্লা থানায় মামলা করেন।

ভুক্তভোগীর স্বামীর অভিযোগ, রমজান মাস শুরুর কয়েক দিন আগে তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ইসদাইর-গাবতলী লিঙ্ক রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় ইসদাইর বটতলা এলাকার সজিব ওরফে বদনা সজিব, গাবতলী মাজার এলাকার রাকিব ওরফে মাইন, নয়ন, নজরুলসহ পাঁচজন তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। শিশুকে জিম্মি করে তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করে তারা এবং ভিডিও ধারণ করে। 

ফতুল্লা থানার ওসি শরীফুল ইসলাম জানান, রাকিব নামে এক বখাটে ওই গৃহবধূকে অন্যদের সহযোগিতায় ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

অন্যদিকে, কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ১ এপ্রিল বন্দরে এক কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার বন্দর থানায় টিপু সুলতান, সজিব হোসেন ও অজ্ঞাতনামা দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে সজিবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে আশিক দেওয়ান শান্ত নামে এক তরুণকে শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, শুক্রবার চরসিন্দুর এলাকায় ওই কিশোরীকে ঘুরতে নিয়ে যায় আশিক। পরে রাতে চরসিন্দুরের চলনা গ্রামে নানির বাড়িতে নিয়ে ওই তরুণ ও তার এক বন্ধু মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

পলাশ থানার ওসি মনির হোসেন জানান, ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর শনিবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে আশিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বন্ধুকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

এদিকে নরসিংদীর রায়পুরায় দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে আজ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সম্মিলিত সচেতন নাগরিক সমাজ।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় বাক্প্রতিবন্ধী শিশুকে (১২) ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার আসামি পরিতোষ চন্দ্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার পার্বতীপুর উপজেলার আমবাড়ী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র‌্যাব-১৩-এর একটি দল। পরিতোষের বাড়ি ফুলবাড়ীর এলুয়াড়ী ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামে। এর আগে ২১ মার্চ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। 

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার রুহুল আমীন (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে মাধবপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ৮ এপ্রিল রাতে ঘরে ঢুকে তরুণীকে ধর্ষণ করে রুহুল আমীন। এ ঘটনায় শুক্রবার থানায় মামলা হলে ওই দিনই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ হবধ গ র প ত র কর র ভয় দ খ য় শ ক রব র উপজ ল য় র উপজ ল পর ক ষ ঘটন য় এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

বাবাকে হারানোর ১৮ ঘণ্টা পর পরীক্ষায় বসল সেতু

রাতে বাবার লাশ দাফন করে সকালে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সাবরিয়ান ইসলাম সেতু। অন্যদিকে রিয়া তাসফিয়া এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে এসে দেখে তার বাবা আর নেই। সেতুর বাড়ি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায়, রিয়ার পটুয়াখালীর বাউফলে।  
গতকাল বৃহস্পতিবার কাঁঠালিয়া সদর সিনিয়র ফাযিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আরবি প্রথম পত্র বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয় সেতু। সেতুর বাবা সিরাজুল ইসলাম ইসমাইল (৫০) ছিলেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম আউরা গ্রামের বাসিন্দা। কাজ করতেন পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসে অফিস সহকারী পদে। গত বুধবার বিকেলে ঢাকার একটি বেসকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। 
সিরাজুলের স্ত্রী সাহিদা বেগম স্বামীকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। কাঁদতে কাঁদতে স্বামীর লাশের পাশে বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। 
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাদল মাহমুদ বলেন, সিরাজুল ইসলাম পরিবারের একমাত্র উপাজর্নক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। তাঁকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে পরিবারটি। 
কাঁঠালিয়া সদর সিনিয়র ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাবরিয়ান ইসলাম সেতু তাঁর মাদ্রাসা থেকে এ বছর মানবিক শাখায় দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। বাবার মৃত্যুর কষ্ট বুকে চেপে সে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এ ঘটনায় তারা শোকাহত। 
বুধবার রাতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে সিরাজুলের লাশ দাফন করা হয়। 
এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে রিয়াকে কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হয় হাসপাতালে। আর রিয়াকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় পরীক্ষার হলে। রিয়া পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে এসে দেখে তার বাবা আর নেই। 
গতকাল সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মাহবুবুর রহমান বাউফলের কালিশুরী এস.এ. ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। রিয়া একই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী।
মাহবুবুর মেয়েকে নিয়ে কেশবপুরের ভরিপাশা এলাকার বাড়ি থেকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মোটরসাইকেলে পরীক্ষা কেন্দ্র কালিশুরী যাওয়ার উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে গাজী মাঝি এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেল থেকে মাহবুবুর পড়ে যান। এ সময় রিয়া বাবাকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে যায়। মাহবুবুরকে চিকিৎসার জন্য বরিশালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। 
কালিশুরী এস.এ. ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রের পরীক্ষার হলে গিয়ে দায়িত্বরত শিক্ষকদের কাছে রিয়া জানতে চায়, তার বাবা কেমন আছেন। রিয়ার মন খারাপ হলে পরীক্ষায় ভালো ফল হবে না ভেবে দায়িত্বরত শিক্ষক তাকে বলেন, ‘তিনি সুস্থ আছেন। ভালো আছেন। তুমি ভালোভাবে পরীক্ষা দাও, বাকিটা আল্লাহ ভরসা।’ পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরে তাসফিয়া দেখতে পায় বাড়ির আঙিনায় খাটে বাবার নিষ্প্রাণ দেহ পড়ে আছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কোলের শিশুকে জিম্মি করে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ
  • বোরহানউদ্দিনে হত্যার ভয় দেখিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
  • শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহ রোধ করতেই হবে
  • তিন মাসে নির্যাতনের শিকার ৮৩৬ নারী ও কন্যাশিশু
  • নাটোরের নিখোঁজ সেই এসএসসি পরীক্ষার্থীকে পাওয়া গেছে
  • এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল শহীদ আনাস-নাঈমা-সাফওয়ান, তাদের পরিবারে শুধুই হাহাকার
  • বাবাকে হারানোর ১৮ ঘণ্টা পর পরীক্ষায় বসল সেতু
  • অবশেষে মামলা করলেন ধর্ষণের শিকার দুই ছাত্রীর বাবা
  • ইনস্টাগ্রামে পরিচয়, ঘুরতে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২