আমরা অনির্বাচিত এই কথা কে বলল: ফরিদা আখতার
Published: 12th, April 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতা এই সরকারকে নির্বাচিত করেছে, গঠন করছে। কাজেই এই সরকারের দায়িত্ব হলো ছাত্র-জনতার চাহিদা মেটানো।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অনির্বাচিত এই কথা কে বলল। আমাদেরকে তো এ ছাত্ররা, জনতা—যারা নাকি এই পরিবর্তনটা এনে দিয়েছে, তারাই রাষ্ট্র গঠন করেছে, তারাই সরকার গঠন করেছে, তাদের দ্বারা নির্বাচিত আমরা। কাজেই আমাদের দায়িত্ব হলো তাদের যে চাহিদা, সেটা মেটানো।’
আজ শনিবার রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত শাহ আলী মাজারে ‘গণমানুষের জাগ্রত জুলাই’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুর এ আয়োজন করে।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা বা যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের পরিবার কেউ বলেনি এই অভ্যুত্থানে যোগ দিয়ে তাঁরা ভুল করেছেন। তাঁরা একটাই কথা বলেছেন, তাঁরা শেখ হাসিনার বিচার এই মাটিতে এই সরকারের আমলেই দেখতে চান। উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের একমাত্র কাজ যদি কিছু থাকে, সেটা হবে শেখ হাসিনা এবং যারা এই হত্যাকারী, তাদের বিচার করা। এটাতে কোনো রকম ভুলত্রুটি হতে পারবে না। বিচার আমাদের করতেই হবে।’
বিচারের বিষয়ে ফরিদা আখতার আরও বলেন, ‘যতবারই আমি ওদের কথা (আহতদের) শুনি, ততবারই আমার কাছে মনে হয় যে এটা আমাদের বারবার প্রতিজ্ঞার মতো নিতে হবে,.
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, জুলাইকে অবশ্যই ধারণ করতে হবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধকে যেভাবে ধারণ করি, ঠিক একইভাবে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পাওয়া স্বাধীনতার প্রতি আমাদের অবশ্যই কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার।
অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মিরপুরে শহীদ শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান, শহীদ মো. আকরাম খান রাব্বির বাবা মো. ফারুক খান, শহীদ গোলাম নাফিসের বাবা গোলাম রহমান, শহীদ ইমাম হোসেন তাইয়েমের ভাই রবিউল আউয়াল ও শহীদ আহনাফের মা জারতাস পারভীন।
শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেন, এখনো বিচারের কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। বিচারের নামে প্রহসন চলছে। এখন অনেক জায়গায় মামলা নেওয়া হয় না। উল্টো বিচার চাইতে গেলে শহীদ পরিবারের সদস্যরা হেনস্তার শিকার হন। দ্রুত গণহত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন তাঁরা।
অনুষ্ঠানে গরিব-অসহায় ব্যক্তিদের জন্য মেডিকেল ক্যাম্প, জুলাইয়ের গ্রাফিতি, আন্দোলনের ছবি ও খবরের কাগজ প্রদর্শনী, কবিতাপাঠ, জুলাই আন্দোলনে আহত, সম্মুখসারির যোদ্ধাদের স্মৃতিচারণা, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, ভাবগানের আসর ও বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ রোমেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আকিজ ইনসাফ গ্রুপের সিএমও শফিকুল ইসলাম, জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের সদস্য তৌফিক হাসান, উদয় হাসান, সিলমী সাদিয়া প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র র সদস য অন ষ ঠ ন উপদ ষ ট ই সরক র সরক র র আম দ র পর ব র আখত র
এছাড়াও পড়ুন:
স্কুলছাত্রী অপহরণের মামলা করায় পরিবারকে হুমকি
স্কুলছাত্রীকে অপহরণের ঘটনায় গাজীপুরের কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানায় মামলা করেছিলেন তার মা। এ ঘটনার আট দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। উল্টো তারা মোবাইল ফোনে কল করে মেয়েটির মা-বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এমনকি, মামলা তুলে না নিলে তারা পেট্রোল ঢেলে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার কথাও বলছে। এ ঘটনায় পরিবারটি ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়।
ওই কিশোরী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে পাশের বারেন্ডা গ্রামের জান্নাতুল মোল্লা প্রেমের প্রস্তাব দিত। এতে ব্যর্থ হয়ে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। ৩১ মার্চ ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ১০-১২ জন সশস্ত্র সহযোগী নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে হানা দেয় জান্নাতুল। তার মাকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায় ওই কিশোরীকে।
ঘটনার দিনই কাশিমপুর থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়। পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ৩ এপ্রিল রাতে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল ওই থানায় অপহরণ মামলা করেন মেয়েটির মা। এতে জান্নাতুল মোল্লা (২৬), তার বাবা সফিউদ্দিন মোল্লা (৬০), আফাজ উদ্দিন আফু (৫০), জহিরুল ইসলাম (৩৫), হিমেল হোসেনের (২৬) নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
মামলার বাদীর ভাষ্য, আসামি ও তাদের লোকজন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রায়ই ফোনে ও সরাসরি হুমকি দিচ্ছে। তা না করলে হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেবে বলে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা মামলার সাক্ষীদেরও নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। পুলিশও অজ্ঞাত কারণে আসামি গ্রেপ্তার করছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী বলেন, অপহরণে জড়িত পরিবারটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ও বিত্তবান। তাই হয়তো পুলিশ ধরতে আগ্রহী নয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, ৪ এপ্রিল অপহরণের মামলা হয়। জানতে পেরেই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।