সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলে চালু হওয়া অস্থায়ী অভিবাসন কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ৬ হাজারের বেশি জীবিত অভিবাসীকে ‘মৃত’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর ফলে বাতিল করা হয়েছে তাদের সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর, যে কারণে চাকরি বা বিভিন্ন সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। 

ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, এসব অভিবাসীর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস অসম্ভব করে তোলা এবং ‘স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যেতে’ বাধ্য করার জন্যই নেওয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ।  

ভুক্তভোগীরা বৈধভাবে সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর পেয়েছিলেন, যা মার্কিন নাগরিক, স্থায়ী বাসিন্দা এবং অস্থায়ী কর্মীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। আয়, সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা, ব্যাংক লেনদেনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা নিতে প্রয়োজন হয় এই নম্বর। কিন্তু নম্বরটি বাতিল হওয়ায় এসব সুযোগ-সুবিধা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

সম্প্রতি দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ও ট্রেজারি বিভাগ অভিবাসীদের ট্যাক্স-সংক্রান্ত তথ্য অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থার সঙ্গে ভাগাভাগি করার একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এর আওতায় তারা অভিবাসীদের নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে ট্যাক্স রেকর্ড যাচাই করতে পারবে। এই চুক্তিকে কেন্দ্র করে মার্কিন রাজস্ব বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মেলানি ক্রাউসে পদত্যাগ করেন। এতে করদাতাদের ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

আফগানিস্তান ও ক্যামেরুনের অভিবাসীদের সুরক্ষা সুবিধা বাতিল

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত আফগান ও ক্যামেরুনিয়ানদের সুরক্ষা সুবিধা (টিপিএস) বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির এক মুখপাত্র শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন। অভিবাসীদের বিরুদ্ধে চলমান কঠোর মার্কিন নীতিমালার আওতায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে এ তথ্য।

এই সিদ্ধান্তের ফলে সাময়িক সুরক্ষা মর্যাদা সুবিধা হারাবেন ১৪ হাজার ৬০০ আফগান। সামনের মাসে তাদের সুবিধা বাতিল করা হবে। আর ৭ হাজার ৯০০ ক্যামেরুনিয়ানের অভিবাসীর মর্যাদা বাতিল হবে জুন মাসে।

টিপিএস কর্মসূচির আওতায় একজন অভিবাসী ছয় থেকে ১৮ মাস যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করতে পারেন। এই মেয়াদ আবার নবায়ন করতে পারে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। টিপিএসের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারীরা বিতাড়নের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকেন এবং কাজ করার অনুমতি পান। সাধারণত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সশস্ত্র সংঘাত বা অন্য কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতির শিকার দেশের নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রের টিপিএস সুবিধা নেওয়ার উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়ে থাকেন।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকললিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, আফগানিস্তান ও ক্যামেরুনের বর্তমান পরিস্থিতিতে টিপিএস সুবিধা নবায়নের প্রয়োজনীয়তা দেখছেন না হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম। নিজের প্রথম মেয়াদেও অধিকাংশ মানুষের টিপিএস সুবিধা বাতিলের চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প। তবে আদালতের হস্তক্ষেপে সেই সময় সফল হতে পারেননি তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট প এস র আওত আফগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

স্কুলছাত্রী অপহরণের মামলা করায় পরিবারকে হুমকি

স্কুলছাত্রীকে অপহরণের ঘটনায় গাজীপুরের কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানায় মামলা করেছিলেন তার মা। এ ঘটনার আট দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। উল্টো তারা মোবাইল ফোনে কল করে মেয়েটির মা-বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এমনকি, মামলা তুলে না নিলে তারা পেট্রোল ঢেলে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার কথাও বলছে। এ ঘটনায় পরিবারটি ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়। 

ওই কিশোরী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে পাশের বারেন্ডা গ্রামের জান্নাতুল মোল্লা প্রেমের প্রস্তাব দিত। এতে ব্যর্থ হয়ে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। ৩১ মার্চ ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ১০-১২ জন সশস্ত্র সহযোগী নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে হানা দেয় জান্নাতুল। তার মাকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায় ওই কিশোরীকে। 

ঘটনার দিনই কাশিমপুর থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়। পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ৩ এপ্রিল রাতে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল ওই থানায় অপহরণ মামলা করেন মেয়েটির মা। এতে জান্নাতুল মোল্লা (২৬), তার বাবা সফিউদ্দিন মোল্লা (৬০), আফাজ উদ্দিন আফু (৫০), জহিরুল ইসলাম (৩৫), হিমেল হোসেনের (২৬) নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়। 

মামলার বাদীর ভাষ্য, আসামি ও তাদের লোকজন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রায়ই ফোনে ও সরাসরি হুমকি দিচ্ছে। তা না করলে হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেবে বলে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা মামলার সাক্ষীদেরও নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। পুলিশও অজ্ঞাত কারণে আসামি গ্রেপ্তার করছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী বলেন, অপহরণে জড়িত পরিবারটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ও বিত্তবান। তাই হয়তো পুলিশ ধরতে আগ্রহী নয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, ৪ এপ্রিল অপহরণের মামলা হয়। জানতে পেরেই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ