ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা উদ্‌যাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফে আগুন দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে অনুষদের সামনে মানববন্ধন হয়েছে। এতে অনুষদের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।

আজ শনিবার রাতে এ মানববন্ধন হয়। এ সময় বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা ১৪৩২–এর আহ্বায়ক অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম শেখ ও সদস্যসচিব অধ্যাপক কাওসার হাসান টগর উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনচারুকলায় আগুনে পুড়ে গেল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ১২ ঘণ্টা আগে

অধ্যাপক কাওসার হাসান বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ গোষ্ঠীর সরাসরি হস্তক্ষেপে গভীর রাতে নির্মিতব্য প্রতীকী ফ্যাসিবাদী মুখাবয়বে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পাশে থাকা শান্তির প্রতীক কবুতরের মোটিফটিও পুড়ে যায়। আমরা চারুশিল্পীরা এতে দমে যাইনি; বরং দ্বিগুণ উৎসাহে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা আয়োজনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’

পয়লা বৈশাখ সকাল আটটায় আনন্দ শোভাযাত্রায় উৎসাহ–উদ্দীপনার সঙ্গে সবাইকে অংশ নিতে আহ্বান জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।

উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রা উদ্‌যাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফ আগুনে পুড়ে গেছে। এর মধ্যে একটি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ও আরেকটি শান্তির পায়রা। আজ শনিবার সকালে এমনটি দেখা গেছে।

আরও পড়ুনকালো টি–শার্ট পরা একজন মোটিফ দুটিতে আগুন দেন, পালিয়ে যান ২ মিনিটে৫ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আনন দ শ ভ য ত র চ র কল

এছাড়াও পড়ুন:

নববর্ষ উপলক্ষে গুলশানে থাকছে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান

গুলশান সোসাইটির উদ্যোগে এবং ‘অলিগলি বর্ষবরণ বন্ধুগণ’–এর আয়োজনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় উদ্‌যাপিত হতে যাচ্ছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উৎসব ‘অলিগলি হালখাতা’। এবার উৎসব হবে দুই দিনব্যাপী; এর মধ্যে ১৩ এপ্রিল হবে চৈত্রসংক্রান্তি এবং এর পরদিন অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল বাংলা বর্ষের প্রথম দিন হবে বর্ষবরণ উৎসব। এবারের আয়োজনে চারু কারু প্রদর্শনী, পালা গান, আলপনা, নৃত্য অনুষ্ঠান এবং গল্প–আলাপসহ নানা আয়োজন থাকবে।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ পার্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন আয়োজকেরা। গুলশান সোসাইটির উদ্যোগে এবং ‘অলিগলি বর্ষবরণ বন্ধুগণ’ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন গুলশান সোসাইটির সভাপতি ব্যারিস্টার ওমর সাদাত, মহাসচিব সৈয়দ আহসান হাবীব, সদস্য শ্রাবন্তী দত্তসহ কমিটির অন্য সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের দুই দিনব্যাপী বর্ষবরণ ১৪৩২ ‘অলিগলি হালখাতা’ অনুষ্ঠিত হবে গুলশানের বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ পার্কে। আয়োজনের প্রথম দিন থাকবে চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজন। এদিন বিকেল ৪টা থেকে চারু কারু প্রদর্শনী, রাত ৮টায় ইসলাম উদ্দিন পালাকারের পালা গান, রাত ৯টায় আলপনা আলাপ, রাত ১০টায় পার্কের সামনে থেকে গুলশান–২ মোড় পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে আলপনা অঙ্কন করা হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ ও বিশিষ্ট নাগরিকেরা এতে অংশগ্রহণ করবেন।

বাংলা নতুন বছরের দিন, অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখের দিনব্যাপী উৎসব শুরু হবে সকাল থেকেই। এদিন সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে থাকবে রেচেল প্রিয়াঙ্কা ও তাঁর দলের বর্ষবরণ নৃত্য। এরপর অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাবেন অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ, অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ এবং গুলশান সোসাইটি ও অলিগলি-বর্ষবরণ বন্ধুরা। এরপর সকাল ১০টায় ব্যান্ডদল জলের গানের পরিবেশনায় থাকবে ‘গানালাপ’।

এবারের বর্ষবরণ উৎসবে আরও থাকবে চিত্রশিল্পীদের অংশগ্রহণে ‘আর্ট ক্যাম্প’। এতে থাকবেন চিত্রশিল্পী ফরিদা জামান, কনকচাঁপা চাকমা, শিশির ভট্টাচার্য, জামাল আহমেদ, মোহাম্মদ ইউনুস, আহম্মেদ শামসুদ্দোহা, শেখ আফজাল, মোহাম্মদ ইকবাল, বীরেন সোম, আনিসুজ্জামান, বিশ্বজিৎ গোস্বামী। এ আয়োজনও হবে সকাল ১০টায়। এরপর সকাল ১১টায় ‘সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ’ শীর্ষক ‘ভাবালাপ’–এর প্রথম পর্বে কথা বলবেন সাংবাদিক নূরুল কবীর, সংস্কৃতিজন সারা যাকের, নাট্য ব্যক্তিত্ব আফজাল হোসেন এবং অধ্যাপক প্রশান্ত ত্রিপুরা। এ পর্বে সঞ্চালনা করবেন সাঈদ ফিরদৌস।

এরপর বেলা ১২টায় শুরু হবে ‘ভরদুপুরের গল্পসল্প’। ‘ভাবালাপ’–এর দ্বিতীয় পর্বে ‘জনপরিসরে নারীর উপস্থিতি’ নিয়ে আলাপ করবেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ব্যারিস্টার শুক্লা সিরাজ, শিক্ষক মিথিলা মাহফুজ, আদিবাসী অ্যাকটিভিস্ট ডালিয়া চাকমা। বিকেল ৪টায় পাড়ার বাচ্চাদের সমবেত নৃত্যে অংশ নেবে গুলশান-বনানী-বারিধারা-উত্তরা অঞ্চলের শিশু–কিশোরেরা। ‘সব সখি মিলি গাই মঙ্গলগান’–শীর্ষক আয়োজনটি শুরু হবে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে; এলকেজি স্টুডিওর পরিচালনায় এতে গাইবেন সভ্যতা, সুমেল, আনান, জয়িতা, নাভিন, লাবিক।

দিনব্যাপী আয়োজনে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে সমগীত গানের দলের পরিবেশনা, সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে বাপ্পা মজুমদার ও দলছুটের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে পর্দা নামবে আয়োজনের।

আয়োজকেরা বলছেন, একটি প্রগতিশীল সমাজ গড়তে প্রয়োজন শিল্প-সংস্কৃতি-শিল্পীর নিরাপদ মর্যাদাপূর্ণ কদর, শুধু ভালোবাসা তার জন্য যথেষ্ট নয়। এমন একটা সংস্কৃতি গড়ে তোলা তাঁদের এই উদ্যোগের অন্যতম উদ্দেশ্য। যখন সমাজে নানামুখী বিদ্বেষ-ঘৃণা-ভয়-উগ্রতা, নারীর প্রতি সহিংসতা দেখা যায়, এ সময় সেই সংকট অতিক্রম করতে উদারনৈতিক মানবতাবাদী ধারার সংস্কৃতিই হতে পারে পাথেয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈশাখ ঘিরে সরগরম বাণিজ্যপাড়া
  • গুলশানে অনুষ্ঠিত হবে দুই দিনব্যাপী ‘অলিগলি হালখাতা’
  • পাহাড়ে বর্ষবরণ: উৎপত্তি, মিথ এবং বিভিন্ন দেশের উৎসবের সঙ্গে যোগসূত্র
  • নববর্ষ উপলক্ষে গুলশানে থাকছে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান
  • নববর্ষের দিন টিএসসি-শাহবাগ মেট্রো স্টেশন ‘সাময়িক বন্ধ থাকবে’
  • বর্ষবরণে থাকছে ‘অন্ধকার কাল থেকে উত্তীর্ণ হবার বার্তা’
  • ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম হলো ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’
  • আলোয় আলোয় মুক্তির বারতা দেবে ছায়ানট
  • চট্টগ্রামের ডিসি হিলে নববর্ষ উদযাপনের অনুমতি মিলেছে