অশোভন আচরণে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ তাওহীদ, ক্ষোভ প্রকাশ
Published: 12th, April 2025 GMT
আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যাচ হয়ে গেল মিরপুর শের-ই-বাংলায়। এই ম্যাচকে ঘিরে ব্যাট-বলে তেমন কোনো উত্তেজনা, রোমাঞ্চ ছড়ায়নি। মোহামেডান শুরু থেকে দাপট দেখিয়েছে। আবাহনী এক পর্যায়ে ফিরে লক্ষ্য নাগালে রেখেছিল। বোলিংয়ে মোহামেডান আবার দাপট দেখায়। জুটি গড়ে আবহনীও দেয় জবাব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মোহামেডানের দলগত পারফরম্যান্সে আবাহনীকে হার মানতে হয়।
তবে ইবাদত হোসেনের বলে মোহাম্মদ মিঠুনের এক এলবিডব্লিউ আবদেনকে ঘিরে কথা কাটাকাটি হয়েছে। সেটাও অনফিল্ড দুই আম্পায়ার তানভীর ও সৈকতের সঙ্গে মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিমের। আম্পায়ারের থেকে আউটের সাড়া না পেয়ে ইবাদতও অশোভন আচরণ করেছেন। ড্রেসিংরুমের দিকে তাক করে আঙ্গুল তুলে চিৎকার করতে দেখা গেছে তাকে। পরিস্থিতি এতোটাই বাড়াবাড়ি পর্যায়ের ছিল যে মিনিট তিনেক খেলা বন্ধ ছিল।
আম্পায়ার তানভীরকে বেশ কিছুক্ষণ কথা শোনাচ্ছিলেন তাওহীদ। তাকে সেখান থেকে সরাতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় সৈকতে। তার শারীরিক ভাষা, অবয়ব কোনোভাবেই ভালো দেখাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে মুশফিকুর রহিম সেই তর্কে লিপ্ত হন। পরিবর্তীতে মিরাজ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আরো পড়ুন:
আনিসুলের সেঞ্চুরিতে আবাহনীকে হারাল মোহামেডান
শরিফুলের ৬ উইকেট, সৌম্যর ৮০, রুপগঞ্জের দারুণ জয়
আম্পায়ারদের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ম্যাচ রেফারি নিয়ামুর রশীদ রাহুল তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছেন। আম্পায়ারের সঙ্গে অশোভন আচরণের জন্য এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহীদ লিগের সুপার লিগের প্রথম ম্যাচ খেলতে পারবেন না। ম্যাচ শেষে শুনানির পর এই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন অফিসিয়ালরা।
এদিকে মাঠের ঘটনায় তাওহীদকে বিব্রত মনে হলো না। বরং গণমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার ভাষ্য, ‘‘যেটা ঘটেছে সবকিছু এক্সপ্লেইন করতে পারবো না কিন্তু হিট অব দ্য মোমেন্টে অনেক কিছু হয়। তারাও ভুল করে কিন্তু আমার কাছে যেটা মনে হয় তারা ভুল করতেই পারে, মানুষ মাত্রই ভুল করে আমরাও করবো! কিন্তু আমার কাছে মনে হয় ভুলটা স্বীকার করা উচিত, আমি যদি ভুল করি আমিও স্বীকার করবো। কিন্তু আপনি যদি ভুল স্বীকার না করে বলেন এটা ভুল না তাহলে হবে না। সে আন্তর্জাতিক আম্পায়ার তাকে আমরা সম্মান করি, আমরাও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। এখানে যারা ছিল বেশিরভাগই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে সো, এমন ম্যাচে দুই-একটা ডিসিশন অনেক বড় ব্যবধান গড়ে দিতে পারে। যদি আবার ঘটনা অন্যদিকে যায় আমি মুখ খুলবো ইনশাল্লাহ।’’
তাওহীদের দাবি, ‘‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো এমন অনেক দেখেছি। ডোমেস্টিকে তো এর চেয়ে আরও বাজে হতো, এখন তো সেটাও হয় না। ডে বাই ডে আমরা খেলোয়াড়রা তাদের অনেক রেস্পেক্ট করি, শুধু আমাদের খেলোয়াড়দের দোষ দিলে হবে না। আমাদের আম্পায়ার ডিপার্টমেন্টে ২-১ জন বাদে যে খুব ভালো করে এমন নয়। জাস্টিফাই করলে আমার কাছে মনে হয় দুই পাশ থেকেই দেখা উচিত।’
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম প য় র ভ ল কর
এছাড়াও পড়ুন:
সন্তানকে ব্যবহার করে ‘ভিউ ব্যবসা’ : ‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিউ পেতে বা অনলাইনে টাকা আয়ের জন্য নিজের সন্তানকে ক্যামেরার সামনে এনে নানাভাবে নিষ্ঠুর আচরণ করার অভিযোগে ঢাকার সাভারের সেই ‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে আশুলিয়া থানায় শিশু আইনে মামলাটি দায়ের করেন উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় বসবাসকারী শারমিন শিলা ওরফে ক্রিম আপা পেশায় একজন বিউটিশিয়ান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি ক্রিম আপা নামে পরিচিত। তিনি মেকআপের জন্য কাজ করাসহ বিভিন্ন ধরনের ক্রিম তৈরি করে বিক্রি করেন। তিনি নিজের ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও তৈরি করে পোস্ট দেন। গত ৩০ মার্চ নিজের ফেসবুক আইডিতে বিকেল চারটার দিকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যা ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শারমিন শিলা তাঁর মেয়ে শিশুকে (আনুমানিক দুই বছর) জোর করে এক হাতে দিয়ে মুখে চাপ দিয়ে হাঁ করিয়ে মেয়ের অসম্মতিতে কেকজাতীয় কিছু খেতে বাধ্য করছেন। তিনি ভাইরাল হওয়ার জন্য এক বছর ধরে দুই শিশু সন্তানের প্রতি মাতৃসুলভ আচরণ না করে শিশুদের আঘাত, উৎপীড়ন, অবহেলাসহ তাদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করছেন। এ ধরনের আচরণের কারণে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শিশু আইনের ৭০ ধারায় শারমিন শিলার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে শিশুকে আঘাত, উৎপীড়ন, ও অশালীনভাবে প্রদর্শন করার অভিযোগ করা হয়েছে। আসামিকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি শারমিন শিলা ভিউ পেতে বা অনলাইনে টাকা আয়ের জন্য নিজের সন্তানকে ক্যামেরার সামনে এনে নানাভাবে নির্যাতন করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। গত রোববার ‘একাই এক শ’ নামের শিশুদের সুরক্ষায় সামাজিক আন্দোলনের পক্ষে সাদাত রহমানসহ অন্যরা ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘ক্রিম আপা’র বিরুদ্ধে স্মারকলিপি জমা দেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তিন দিনের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। স্মারকলিপির অনুলিপি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনসন্তানকে ব্যবহার করে ‘ভিউ ব্যবসা’, ‘ক্রিম আপা’র ব্যাখ্যা চেয়েছে প্রশাসন০৭ এপ্রিল ২০২৫তবে কয়েক দিন ধরে শারমিন শিলা ফেসবুকে লাইভে এসে দাবি করেছেন, তিনি তাঁর সন্তানদের কখনোই নির্যাতন করেননি। নির্যাতন করলে তো ক্যামেরার সামনে করতেন না। অন্যরা হিংসা করে এ ধরনের অভিযোগ দিচ্ছেন। তিনি সন্তানদের নিয়ে ভালো আছেন, ছেলেকে দিয়ে বলানো এমন ভিডিও শেয়ার করেছেন। পরে ওই ভিডিও তিনি ডিলিট বা মুছেও ফেলেছেন।
সাভারের বাইপাইল এলাকায় ‘ক্রিম আপা বিউটি পারলার’ নামে শারমিন শিলার একটি বিউটি পারলার আছে। তিনি ভিডিওতে কীভাবে ক্রিম ব্যবহার করতে হবে, তা জানান। এর বাইরে কী রান্না করছেন, কী খাচ্ছেন—এসব নিয়ে ভিডিও করেন।