চারুকলায় নববর্ষের মোটিফে আগুনের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা
Published: 12th, April 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রা উদ্যাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফে আগুনের ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ শনিবার বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়। মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট দপ্তরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমানুল্লাহ।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রা উদ্যাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফে আগুনের ঘটনাটি নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড। এ জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষ ক্ষমতা আইনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছে।
এর আগে শাহবাগ থানার ওসি জানিয়েছিলেন, চারুকলা অনুষদে এক ব্যক্তিকে আগুন দিতে দেখা গেছে। চারুকলার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ এ তথ্য জানতে পেরেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ জানান, ওই ব্যক্তি কালো টি-শার্ট, বাদামি প্যান্ট ও কালো স্যান্ডেল পরে ছিলেন। তাঁর চুল পেছনে ঝুঁটি বাঁধা ছিল। চারুকলার মাঝখানের ফটক টপকে ওই ব্যক্তি ভোর ৪টা ৪৪ মিনিটে ভেতরে ঢোকেন। একই পথে তিনি ৪টা ৪৬ মিনিটে পালিয়ে যান। তাঁর নাম-পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে তিনি পুলিশকে জানান।
প্রক্টর আরও বলেন, ওই ব্যক্তি প্রথমে তরল দাহ্য পদার্থ দিয়েছেন। তারপর পর্দার আড়ালে চলে যান। তারপর ফুটেজে সেখানে অগ্নিশিখা দেখা গেছে। ওই ব্যক্তি যে ফটক দিয়ে ঢুকেছেন, সেই ফটক দিয়েই বেরিয়ে ছবির হাটের দিকে গেছেন বলে জানান প্রক্টর।
পুলিশ তখন কী করছিল, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশকে পানি দিয়ে আগুন নেভাতে দেখা গেছে। তবে তদন্ত কমিটি সব সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে পরে জানাবে।
আজ ভোরে নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য বানানো ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ দুটি আগুনে পুড়ে যায়। এর মধ্যে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফটি পুরোপুরি পুড়ে যায়। আর শান্তির পায়রা মোটিফটি আংশিক পুড়ে যায়।
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, সেই ব্যক্তি কে, তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তাঁদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলেন তিনি।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মো.
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ বলছে, আজ ভোর ৫টা ৪ মিনিটে তারা আগুন লাগার খবর পায়। পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের ২টি ইউনিট ৫টা ২২ মিনিটে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
আরও পড়ুনচারুকলায় আগুনে পুড়ে গেল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ১০ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ হব গ থ ন নববর ষ র চ র কল
এছাড়াও পড়ুন:
ছড়া কবিতা
খোরশেদ আলম নয়ন
প্রিয় বৈশাখ
শুকনো পাতায় ছাওয়া-আমাদের ঘর
এই গড়ে-এই ভাঙে-বৈশাখী ঝড়
মেঘনার কালো জল ঢেউ ওঠে কূলে
ঘাটে বাঁধা ডিঙি নাও কেঁপে ওঠে দুলে।
আমের বনের ছায়ে-জাগে কোলাহল
হঠাৎ বৃষ্টি এসে এক হাঁটু জল
বৈশাখে ছিলো ঝড়-বোশেখ মেলা
ছিলো আরো দুরন্ত কিশোর বেলা।
দিদির আঁচলে ঘেরা-নিবিড় মায়া
ছিলো মেঘনার তীর-বটের ছায়া,
ভাটির দেশের নাও-মাটির পুতুল
বারোয়ারি মেলা জুড়ে-কাগজের ফুল।
হাতের রঙিন চুড়ি-পায়ের নূপুর
‘বউ কথা কও’ ডাকা উদাস দুপুর
বোশেখ দিনের সেই-স্বপ্নমধুর-
মেলায় কেনা বাঁশি-খুঁজে আজো সুর।
নাগরদোলায় দোলা-স্বপ্নিল দিন
ছিলো চির মধুময় স্মৃতি অমলিন।
সবুজ প্রান্ত ছুঁয়ে যতো দূর যাই
শ্যামল এ বাংলার রূপ খুঁজে পাই।
পুরাতন গ্লানি মুছে-নতুনের ডাক
নিয়ে আসে বার বার প্রিয় বৈশাখ।
উৎপলকান্তি বড়ুয়া
বোশেখের পয়লা
রাত শেষে ভোর হলো
জেগে ওঠো সকলে
আসলের মাঝে ঠাঁই
পাবে না তো নকলে।
দীদা হেসে কাছে আসে
মুখে সুর শোলক
তাক ডুম তাক বাজে
নতুনের ঢোলক।
পাক ঘরে মা রাঁধেন
কী স্বাদের পাঁচন!
চিড়া মুড়ি নাড়ু ক্ষির
আনন্দ নাচন।
মুছে যাক ঘুচে যাক
যত ভুল ময়লা
নব রূপে এলো আজ
বোশেখের পয়লা।
আলমগীর কবির
ঝিলমিল ঘুড়ি
বোন চায় মেলা থেকে
লাল নীল চুড়ি
ভাই বলে কিনে দাও
ঝিলমিল ঘুড়ি।
কাগজের ফুল আর
রাঙা বাঁশি কিনি
বোনের জন্য মুখে
মিঠা হাসি কিনি!
সারা মেলা ঘুরে ঘুরে
ফিরি হাতে নিয়ে
মিঠাই শখের হাঁড়ি
খুশি সাথে নিয়ে!
বটতলা জমে গেছে
বৈশাখী মেলা
আনন্দ সুরে যায়
কেটে বাকি মেলা!
মোকাদ্দেস-এ-রাব্বী
নববর্ষের আনন্দে
রঙ লেগেছে চারিদিকে
সাজাও রঙের ডালা
ঢোল-তবলা বাজাও সবাই
আজকে খুশির পালা।
ঝুন ঝুন শব্দ তুলে
ঝুমঝুমিটা বাজছে
শব্দ শুনে খোকাখুকি
হেলে দুলে নাঁচছে।
টম টম শব্দ করে
চলছেরে টম গাড়ি
উৎসবের আনন্দ আজ
সবার বাড়ি বাড়ি।
এই আনন্দ ঘরে ঘরে
চলুক বছর জুড়ে
নববর্ষের গানে থাকুক
দুঃখ অনেক দূরে!
আবেদীন জনী
বাজায় বাঁশি
বোশেখ এলো রোদ ছড়ালো
হলদে রোদের ডানা
বোশেখ যেন স্বপ্ন আঁকার
রংতুলি একখানা।
কালি-ধুলো দুঃখগুলো
যায় বাতাসে উড়ে
বোশেখ যেন বাজায় বাঁশি
নতুন ছন্দ-সুরে।
বোশেখ এলো রং ছড়ালো
পড়লো মেলার ধুম
মনটা খুকির প্রজাপতি
দুই চোখে নেই ঘুম।
মেলা থেকে কিনবে খুকি
খেলনা রাশি রাশি
শখের হাঁড়ি, ঘোড়ার গাড়ি
পুতুল-বেলুন-বাঁশি।