সোনারগাঁয়ে স্টেডিয়ামের জমি দখল করে জাপা নেতার অবৈধ দোকান নির্মাণ
Published: 12th, April 2025 GMT
সোনারগাঁয়ে স্টেডিয়ামের জমি দখল করে স্থানীয় জাতীয় পার্টির এক নেতা অবৈধ ভাবে দোকান নির্মাণ করেছেন। এ ঘটনায় স্থানীয় ক্রীড়া প্রেমিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত এ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবী জানিয়েছেন।
তবে অভিযুক্ত জাতীয় পার্টি নেতা মো. দুলাল মিয়া প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এ স্থাপনা নির্মাণ করেছে বলে দাবি করেন।
জানা গেছে, গত ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ফাউন্ডেশন চত্বরে মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজন উৎসবের আয়োজন করে।
ওই উৎসবকে কেন্দ্র করে ফাউন্ডেশনের পার্শ্ববর্তী সোনারগাঁও স্টেডিয়ামের জমিতে অবৈধ ভাবে দোকান নির্মাণ করে মেলা জমান জাতীয় পার্টি নেতা মো.
ফাউন্ডেশনের আয়োজনে মাসব্যাপী মেলা শেষ হলেও স্টেডিয়ামে গড়ে তোলা অবৈধ দোকান সরিয়ে নেইনি ওই জাতীয় পার্টি নেতা।
এদিকে আগামী ১৪ এপ্রিল ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ তাদের উদ্যোগে অর্ধমাসব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্যোগ নিয়েছেন। এ মেলাকে কেন্দ্র করে আবারও স্টেডিয়ামে অবৈধভাবে মেলা জমানোর পায়তারা করছেন ওই জাপা নেতা।
এব্যাপারে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ ভাবে লোকজ মেলাকে কেন্দ্র পার্শ্ববর্তী স্থানে মেলা বসানো অনৈতিক।
এতে আইন শৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। আশা করি স্থানীয় প্রশাসন ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ক্রীড়া প্রেমী জানান, প্রশাসনের নাকের ডগায় স্টেডিয়ামের জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ দুঃখ্যজনক ব্যাপার।
সোনারগাঁও পৌর জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক মো: দুলাল মিয়া জানান, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তিনি অস্থায়ী ভাবে এ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন।
এব্যাপারে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ ন র ম ণ কর স ন রগ
এছাড়াও পড়ুন:
বাণিজ্য কূটনীতি জোরদার ও সক্ষমতা বাড়াতে হবে
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কের সম্ভাব্য ঝুঁকি নিরসনে বাণিজ্য কূটনীতি জোরদার ও নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তা ছাড়া ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর সব দেশেই পণ্য রপ্তানিতে বাড়তি শুল্কের মুখোমুখি হতে হবে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিভিন্ন বাণিজ্য জোটে অংশগ্রহণ ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তির ওপর জোর দিতে হবে।
রাজধানীর এফডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কহারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করে বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) গঠিত হয়েছিল। কিন্তু প্রভাবশালী দেশগুলো ডব্লিউটিওর নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করে না। তাই সংস্থাটি সেভাবে প্রভাব রাখতে পারেনি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র শুল্কহার বৃদ্ধিতেও নিয়মকানুনের ধার ধারেনি।
তিনি বলেন, বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করে না। যে কারণে সমমনা কয়েকটি দেশ মিলে একাধিক বাণিজ্যিক জোট গড়ে তুলেছে। আমাদের তিন বছর পর এলডিসি থেকে বের হবে এমন দেশ কম্বোডিয়াও অর্থনৈতিক জোট আরসিইপি ও আসিয়ানের সদস্য। অথচ বাংলাদেশ এসব জোটের সদস্য নয়। তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য বাড়াতে অনেক দিন ধরেই বেশ কিছু দেশের সঙ্গে এফটিএ এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি করা হবে বলা হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের প্রায় ৫০ দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে। বাংলাদেশ শুধু ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সই করেছে। ট্রাম্পের উচ্চ শুল্কনীতি বাংলাদেশের জন্য সতর্কবার্তা বলে মন্তব্য করে তিনি জাপান, সিঙ্গাপুরসহ আরও কিছু দেশের সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব এ ধরনের চুক্তি করার তাগিদ দেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক আরোপ নিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে স্পষ্ট যে, বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশও এ চ্যালেঞ্জের বাইরে নয়। তবে ৩৭ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ বাংলাদেশের জন্য কিছুটা স্বস্তির। এরপর কী অবস্থা দাঁড়াবে বোঝা যাচ্ছে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে এ সংকট মোকাবিলা কতটুকু সম্ভব– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কে কতটুকু ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারবে, তা নির্ভর করবে প্রস্তুতি ও সক্ষমতার ওপর। এ ধরনের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজনৈতিক প্রস্তুতিও দরকার। একটি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা শক্তিশালী হওয়ার মাধ্যমে নৈতিক অবস্থান ভালো থাকলে অন্য দেশের সঙ্গে দরকষাকষি ভালো হয়। তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে সহিংসতা ও ভাঙচুর হলে বিনিয়োগকারীরা শঙ্কায় পড়বেন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা হলে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের বিপরীতে বাংলাদেশের পাল্টা ট্রানজিট বাতিল করা ঠিক হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথমে উচিত হবে এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করা। অনেক সময় অনেক দেশ পাল্টা সিদ্ধান্ত নেয়, যা ভালো কোনো উপায় নয়।