জাতীয় পার্টি ছাড়লেন খুলনার সাবেক এমপিসহ ৩ নেতা
Published: 12th, April 2025 GMT
খুলনায় জাতীয় পার্টির তিন নেতা দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এ সময় তারা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কারণে জাতির কাছে ক্ষমাও চান।
পদত্যাগকারীরা হলেন- জাতীয় পার্টির খুলনা মহানগরের সাবেক সভাপতি আবদুল গফফার বিশ্বাস, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোল্লা শওকত হোসেন বাবুল ও অ্যাডভোকেট এস এম মাসুদুর রহমান। আবদুর গফফার বিশ্বাস খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
আ.
আরো পড়ুন:
ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগ নেতার পদত্যাগ
‘এই দোসর দলের রাজনীতি আর করব না’
দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার পর পদত্যাগের কারণ প্রসঙ্গে এই তিন নেতা জানান, ভুল স্বীকার ও ক্ষমা চাওয়া রাজনৈতিক সংস্কার ও শিষ্টাচার। আমরা রাষ্ট্রের পূর্ণ সংস্কার চাই, যাতে ভবিষ্যতে জনগণের দোহাই দিয়ে আর কোনো স্বৈরশাসক জাতির কাঁধে চেপে বসতে না পারে।
নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে তারা জানান, আপাতত এ ধরনের আগ্রহ তাদের নেই। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলেও জানান তারা।
আবদুর গফফার বিশ্বাস এর আগেও কয়েকবার বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি থাকা অবস্থায় অপারেশন ক্লিন হার্ট শুরু হয়। অসংখ্য মানুষকে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে পদত্যাগ করি। পরে জাতীয় পার্টি যে কয়বার জনগণের ভাষা বুঝতে পারেনি, ভুল পথে হেঁটেছে আমি সরে দাঁড়িয়েছি।”
বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে লিয়াজো করে খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতি, নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন আবদুল গফফার বিশ্বাস। মাসুদুর রহমানও সরকারি আইনজীবী হিসেবে দীর্ঘদিন আদালতে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আবদুল গফফার বিশ্বাস বলেন, “ওই সময় আওয়ামী লীগের অপকর্মের বিষয়ে আমি সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলাম।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গ র জন ত আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
‘উপদেষ্টাদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, তাঁদের পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার খায়েশ হয়েছে’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান (রিপন) বলেন, ‘কিছু কিছু উপদেষ্টার বক্তব্যে শুনে মনে হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে এখন পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার একটা খায়েশ জন্ম হয়েছে। জনগণ নাকি তাঁদের পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চায়, সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। সত্যিটা হলো, জনগণ একটি জবাবদিহিমূলক সরকার চায়। জনগণ ভোট দিতে চায়। জনগণ ভোটের মাধ্যমে সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
আজ শুক্রবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং কলেজ মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান খানের সঞ্চালনায় ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে সমাবেশে যুবদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাসুদ খান, উপজেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মোশারফ হোসেন, উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি রোকেয়া বেগম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্ট করে লেখা আছে, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের সরকার গঠন করবে। নির্বাচিত সদস্যদের মেজরিটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। এর বাইরে সংবিধানে অন্য কোনো কথা লেখা নেই। গত ১৫ বছর এ দেশে সেটা চলেনি, সে জন্য ২০২৪ সালের আগস্টে গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। এই পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম হয়েছে। এটার জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে। এটার জন্য বিপ্লব হয়েছিল। সুতরাং সেই অবস্থানের মর্মবাণী শহীদের রক্তের যে চেতনা, সেটা মনে রাখতে হবে। ধারণ করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানাই। তাঁকে আমরা সালাম জানাই। ধন্যবাদ জানাই। প্রধান উপদেষ্টা নিরলস পরিশ্রম করছেন। তাঁর গৌরবদীপ্ত নামের কারণে, বাইরের দেশের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আকৃষ্ট হচ্ছেন। এটা খুব ভালো কথা। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, বাংলাদেশে এমন একটি নির্বাচন উপহার দেবেন, যেটি পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সেই নির্বাচন আমরা দেশের মানুষ দেখার জন্য অপেক্ষা করছি।’
বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই, আমরা সংস্কার চাই, আমরা নির্বাচন চাই। আপনাদের সরকারটি হচ্ছে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আপনাদের কাজ বিমানবন্দর বানানো নয়, আপনাদের কাজ দেশকে সিঙ্গাপুর বানানো না। আপনাদের কাজ মেডিকেল কলেজ বানানো না, আপনাদের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশ যাতে ভবিষ্যতে সিঙ্গাপুর থেকে বড় দেশ হতে পারে, আমাদের কাজ হচ্ছে এখানে যেন আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর হতে পারে, মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে, বাংলাদেশের বিনিয়োগ বাড়তে পারে, এ দেশের ছেলেমেয়েরা ভালো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সে জন্য ভালো বিশ্ববিদ্যালয় হয়, ভালো কলেজ হয়, আইনশৃঙ্খলা ঠিক থাকে, যেখানে মাদকের বাড়াবাড়ি থাকবে না, এমন একটি ব্যবস্থার সূচনা করা। সেই পথটা তৈরি করে দিয়ে যাওয়া।’
বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা কাউকে কাউকে দেখছি, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের নিয়ে দল ভারী করার চেষ্টা করছেন। কেন এমনটা করছেন? বিএনপিতে কি লোকের অভাব? কোটি কোটি মানুষ বিএনপিকে সাপোর্ট করে। ওই পতিত সরকারের লোকদের তাহলে কেন পুনর্বাসন করা হচ্ছে? যাঁরা আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রশ্রয় দেবেন, দলে ভেড়াবেন, সে যত বড়ই নেতা হোন না কেন, তাঁকে বয়কট করবেন। যে বা যাঁরা অন্যায় করছেন, গণশত্রুতে পরিণত হচ্ছেন। তাঁদের দায়ভার কোনোভাবেই দল নেবে না। এটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশনা। তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হচ্ছে এবং বহিষ্কার করে দেওয়া হবে।’