সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী ও শিশু সন্তান সহ তিনজনকে হত্যার পর লাশ টুকরো টুকরো করে মাটিচাপা দিয়ে গুমের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহত লামিয়ার বড় বোন মুনমুন আক্তার।

শুক্রবার রাতে এ মামলা রুজু হয়। মামলায় নিহত লামিয়ার স্বামী আটক ইয়াছিনসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। অপর দুই আসামি হলেন ইয়াছিনেন বাবা দুলাল মিয়া ও ছোট বোন শিমু। 

এদিকে শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের আদালতে আসামি ইয়াছিনকে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো.

কাইউম খান।

প্রসঙ্গত, গত ৭ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া বড় বাড়ি এলাকার পোশাক শ্রমিক লামিয়া আক্তার, তার চার বছর বয়সের শিশু সন্তান আব্দুল্লাহ ও লামিয়ার প্রতিবন্ধী বড় বোন স্বপ্না আক্তার।

নিখোঁজের চারদিন পর বাসার পাশে রাস্তা খুঁড়ে মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় উদ্ধার হয় তিন জনের খন্ড বিখন্ড লাশ। 

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীনু আলম  বলেন, মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে থানা পুলিশের একাধিক টিমের অভিযান চলছে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

কাটা হাত দেখে এগিয়ে মিলল ৩ লাশ

রাস্তার পাশে ইট-সুরকির স্তূপ থেকে একটি কাটা হাত বের হয়ে ছিল। সেখানে ছড়াচ্ছিল দুর্গন্ধ। হাতটি দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেন এক পথচারী। এর পর ঘটনাস্থলে গিয়ে ইট-সুরকি সরিয়ে বস্তা ও কাপড় দিয়ে মোড়ানো তিনটি অর্ধগলিত খণ্ডবিখণ্ড লাশ দেখতে পায় পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকা থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত তিনজন একই পরিবারের। তারা হলেন– পোশাককর্মী লামিয়া আক্তার (২২), তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ লাবিব (৪) ও বড় বোন মানসিক ভারসাম্যহীন স্বপ্না আক্তার (৩৫)। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে লামিয়ার স্বামী মো. ইয়াসিনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, মিজমিজির পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকার আখতার হোসেনের বাড়ির পেছনে সড়কের পাশের ইট-সুরকির ভেতরে লাশ তিনটি চাপা দেওয়া ছিল। লামিয়ার মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল। স্বপ্নার দুই পা হাঁটু থেকে এবং দুই হাত ও মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। দুই বোনের লাশ ছিল একসঙ্গে পেঁচানো, আরেকটি বস্তায় ছিল আব্দুল্লাহর লাশ। শিশুটির শরীর অক্ষত। তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
পুলিশের ধারণা, কয়েক দিন আগে তাদের হত্যার পর লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে সিমেন্টের বস্তা ও কাপড় পেঁচিয়ে ইট-সুরকির নিচে চাপা দিয়ে রাখা হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

নিহতের স্বজন জানান, যেখানে লাশ পাওয়া গেছে, সেখান থেকে আনুমানিক ২৫ গজ দূরে একটি ঘর ভাড়া করে পরিবার নিয়ে থাকতেন ইয়াসিন। তাঁর স্ত্রী লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার একটি পোশাক কারখানার কর্মী। ইয়াসিন এলাকার বাসাবাড়িতে চুরি এবং মাদক সেবন করেন। লামিয়ার কাছে মাঝেমধ্যেই টাকা দাবি করতেন তিনি। কিন্তু লামিয়া যা আয় করতেন, তা সংসার চালাতেই শেষ হয়ে যেত। বেকার ইয়াসিন টাকা চেয়ে না পেয়ে স্ত্রীকে মারধর করতেন। লামিয়ার প্রতিবন্ধী বোন স্বপ্না তাঁর কাছে থাকতেন। স্বজনের অভিযোগ, ইয়াসিন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। 
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকাল থেকে ইয়াসিনকে ঘটনাস্থলের আশপাশে ঘুরতে দেখেন এলাকাবাসী। লাশ উদ্ধারের সময়ও তিনি ছিলেন। লামিয়ার বোন মুনমুন ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিচয় শনাক্ত করেন। তখন এলাকাবাসী ইয়াসিনকে ধরে পুলিশে দেন। তার বাবার নাম মো. দুলাল। তাদের পৈতৃক বাড়ি ছিল মিজমিজি পশ্চিমপাড়ায়। তবে বাড়িটি তাঁর বাবা বিক্রি করে দিয়েছেন। এ কারণে ১ এপ্রিল একই এলাকার আখতার হোসেনের বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নেন ইয়াসিন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) তারেক আল মেহেদী জানান, হত্যায় জড়িত সন্দেহে ইয়াসিনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। 
নিহত স্বপ্না ও লামিয়ার খালা শিরিন বেগম বলেন, ‘আমার বোনের মেয়েরা বাবা-মাহারা। লামিয়া প্রেম করে বিয়ে করেছিল। স্বপ্না মানসিক ভারসাম্যহীন। চার দিন তাদের খোঁজ পাচ্ছিলাম না। বাসায় তালা দেওয়া ছিল। আজ (শুক্রবার) এসে দেখি তিনজনের লাশ। লামিয়ার স্বামী বখাটে ও মাদকাসক্ত। তাদের প্রায় সময়ই ঝগড়াঝাঁটি হতো।’ 
মুনমুন জানান, ইয়াসিন ঈদের তিন দিন আগে কারাগার থেকে মুক্তি পান। তিনি মাদকাসক্ত এবং মাদক ব্যবসায় জড়িত। হত্যাকাণ্ডের জন্য ইয়াসিনকে দায়ী করছেন মুনমুন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, ইয়াসিন ছিঁচকে চোর ও মাদকাসক্ত হিসেবে চিহ্নিত। লামিয়ার কাছে তিনি প্রায়ই টাকাপয়সা চাইতেন। টাকা না দেওয়ায় তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। এর জেরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইয়াসিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

নিখোঁজ মাঝির লাশ উদ্ধার
কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, কর্ণফুলী নদীতে নিখোঁজের পরদিন জাবেদ আহমেদ নামে এক মাঝির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার নদীর বোয়ালখালী হামির চর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। জাবেদ কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত শরীফ আলীর ছেলে। বুধবার সন্ধ্যায় জাহাজের সঙ্গে নোঙর করা ইঞ্জিনচালিত কাঠের নৌকা ছুটে গেলে সেটি আটকাতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ডুবে যান জাবেদ। 

ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী নিহত
বরিশাল ব্যুরো জানায়, নগরে ছুরিকাঘাতে মাসুদুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, গত বুধবার রাতে প্রেমিকা কৌশলে তাঁকে বাসায় ডেকে নিয়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তির পর শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
মাসুদুর নগরের নতুন বাজার টেম্পো স্ট্যান্ড এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, বুধবার রাতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মাসুদুরের প্রেমিকা ও দুই ভাইকে আটক করে। কেউ অভিযোগ না দেওয়ায় পরদিন তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযাগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফতুল্লার পানি ও মাদকের সমস্যার সমাধান করবে বিএনপি : দিপু ভূঁইয়া
  • ৫ নয় ৫০ বছর থাকুন, আগে নির্বাচিত হয়ে আসুন : রাজীব
  • ঈদের পরদিন রাতে স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজনকে হত্যা করেন ইয়াছিন, রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার
  • পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ন্যায্য ও সম্মানজনক চুক্তি চায় ইরান
  • নিহত স্ত্রী-ছেলের ছবি দেখলেই হাউমাউ করে কাঁদছেন মামলার আসামি ইয়াছিন
  • সোনারগাঁয়ে নিখোঁজের ছয় দিন পর বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার
  • সোনারগাঁয়ে নিখোঁজের ৫ দিন পর বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার
  • কাটা হাত দেখে এগিয়ে মিলল ৩ লাশ
  • কুষ্টিয়ায় চুরির অভিযোগে তিনজনকে তুলে নিয়ে দফায় দফায় নির্যাতন, একজনের মৃত্যু