পৃথক সচিবালয়ের জন্য অধ্যাদেশ তৈরির কাজ চলছে: প্রধান বিচারপতি
Published: 12th, April 2025 GMT
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, “বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় তৈরির বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ প্রস্তুতের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।”
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে খুলনার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘জুডিসিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আঞ্চলিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচার সেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় বিষয়ক এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ আলী।
আরো পড়ুন:
সেই ‘ক্রিম আপা’কে কারাগারে আটক রাখার আবেদন
হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় ৪ আসামির মৃত্যুদণ্ড
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিতকরণে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং তার ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ-এর বিভিন্ন অনুষঙ্গের সফল বাস্তবায়নে অন্তবর্তীকালীন সরকারের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের সক্রিয়তার কারণেই দ্রুততম সময়ে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য অধ্যাদেশ প্রণয়ন সম্ভব হয়েছে বলে সবাইকে অবহিত করেন ড.
প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, “রোডম্যাপ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও অন্তবর্তীকালীন সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করছে।”
তিনি বলেন, “দেশের বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারসমূহ থেকে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। সেসব মতামত অন্তর্ভুক্ত করে অচিরেই বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিচার বিভাগের সার্বিক আধুনিকায়নে একটি স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান তৈরির কাজ শুরু করবে। উক্ত প্ল্যান সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশের বিচার বিভাগ যে নতুন যাত্রা শুরু করেছে তা পূর্ণতা পাবে এবং জনগণ বিচার বিভাগের ওপর হারানো আস্থা ফিরে পাবে।”
বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, “সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় দেশের আদালতসমূহে বিরাজমান মামলাজট নিরসনে বিভিন্ন স্তরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিচারকের পদ তৈরি হয়েছে, যা অদূর ভবিষ্যতে মামলাজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত তৈরির জন্য প্রাথমিক কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। কক্সবাজারে সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট দ্রুত চালু করার বিষয়ে দুইটি বিশেষ কমিটি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”
সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন লিলার। এসময় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস লিনাস রাগনার উইকস।
সেমিনারে খুলনা জেলার জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, শ্রম আদালতে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাসহ খুলনার বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র বক ত র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথক সচিবালয় গঠনের বিষয়ে অগ্রগতির কথা জানালেন প্রধান বিচারপতি
বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠনের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘এ–সংক্রান্ত অধ্যাদেশ প্রস্তুতের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।’ এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান তিনি।
‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ শীর্ষক এক আঞ্চলিক সেমিনারে প্রধান বিচারপতি এ কথাগুলো বলেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে আজ শনিবার সকাল ১০টায় খুলনার হোটেল সিটি ইন–এর কনফারেন্স কক্ষে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাণিজ্যিক আদালত তৈরির জন্য প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন
বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত তৈরির জন্য প্রাথমিক কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে সেমিনারে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেন, কক্সবাজারে সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট দ্রুত চালু করার বিষয়ে দুটি বিশেষ কমিটি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিতকরণে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরার পাশাপাশি নিজের ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিবরণ তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতির ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপের বিভিন্ন অনুষঙ্গের সফল বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সক্রিয়তার কারণেই দ্রুততম সময়ে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য অধ্যাদেশ প্রণয়ন সম্ভব হয়েছে। রোডম্যাপ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও অন্তর্বর্তী সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় দেশের আদালতগুলোয় বিরাজমান মামলার জট নিরসনে বিভিন্ন স্তরে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিচারকের পদ তৈরি হয়েছে, যা অদূর ভবিষ্যতে মামলাজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান তৈরির কাজ শুরু করবে
দেশের বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারগুলো থেকে রোডম্যাপ বাস্তবায়নের বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে এবং ওই মতামতগুলো অন্তর্ভুক্ত করে অচিরেই বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিচার বিভাগের সার্বিক আধুনিকায়নে একটি স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান তৈরির কাজ শুরু করবে বলে সেমিনারে জানান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আর এই স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশের বিচার বিভাগ যে নতুন যাত্রা শুরু করেছে, তা পূর্ণতা পাবে এবং জনগণ বিচার বিভাগের ওপর হারানো আস্থা ফিরে পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান বিচারপতি।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধান বিচারপতি। সভাপতিত্ব করেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ আলী। স্বাগত বক্তব্য দেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার। বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার ও সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
সেমিনারে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলায় কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা অংশ নেন। এ ছাড়া খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সরকারি কৌঁসুলি, পাবলিক প্রসিকিউটরসহ অন্য আমন্ত্রিত অতিথিরা সেমিনারে অংশ নেন।
স্বাগত বক্তব্যে ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি মহোদয় ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের জন্য ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।