বিফলে শান্তর ইনিংস, আবাহনীকে হারাল মোহামেডান
Published: 12th, April 2025 GMT
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে জমে উঠেছিল আবাহনী ও মোহামেডানের লড়াই। জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল শান্ত বিপদে পড়া আবাহনীকে আশা দিচ্ছিলেন। কিন্তু তার ইনিংস ব্যর্থ করে ৩৯ রানের জয় তুলে নিয়েছে মোহামেডান।
শনিবার ডিপিএলের ১১ম রাউন্ডের ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মোহামেডান ৪৮.২ ওভারে ২৬৪ রান করে অলআউট হয়। অসুস্থ তামিমের জায়গায় একাদশে জায়গা পেয়ে আনিসুল ইসলাম ইমন মোহামেডানের হয়ে ১১৮ বলে ১১৪ রানের ইনিংস খেলেন। তার ব্যাট থেকে ১৮টি চারের সঙ্গে দুটি ছক্কার শট আসে।
তিনে নামা মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন খেলেন ৫৫ বলে ৪৮ রানের ইনিংস। এবারের ডিপিএলে তিনি নিয়মিত তিনে ব্যাট করেছেন। প্রায় প্রতি ম্যাচেই রান পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তার মতো মোহামেডানের মিডল অর্ডারের তিন অভিজ্ঞ ব্যাটার সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন। মুশফিক খেলেন ২০ বলের ইনিংস, রিয়াদ যোগ করেন ১৭ রান, মেহেদী মিরাজ ১৮ রানের ইনিংস খেলেন।
জবাব দিতে নেমে আবাহনী এবাদত হোসেন ও মেহেদী মিরাজের তোপে পড়ে। তারা ১২৬ রানে আবাহনীর চার ব্যাটারকে ভাগ করে তুলে নেন। পারভেজ ইমন (১৫) ও জিসান আলম (৩) ব্যর্থ হন। চারে নামা মিঠুন ১৯ ও পাঁচে নামা মুমিনুল ২৫ রান যোগ করেন। সেখান থেকে লড়াই করে নাজমুল শান্ত খেলেন ১১৩ বলে ৮০ রানের ইনিংস। অষ্টম ব্যাটার হিসেবে শান্ত আউট হতেই ম্যাচ হাতছাড়া হয় আবাহনীর। গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়নরা থামে ৪৭.
মোহামেডানের হয়ে পেসার এবাদত হোসেন ৩৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন। মিরাজ ও সাইফউদ্দিন নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। আবাহনীর পেসার নাহিদ রানা নেন ৩ উইকেট। এছাড়া বাঁ-হাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও বাঁ-হাতি স্পিনার রাকিবুল ও মাহফুজুর রহমান রাব্বি দুটি করে উইকেট নেন। আবাহনীকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে উঠেছে মোহামেডান। তবে ম্যাচে আউট নিয়ে আম্পায়ারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান মোহামেডান অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড প এল র ন র ইন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিক্রির চেয়ে ডলার কিনছে বেশি
রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধির কারণে বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বেড়েছে। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রির চেয়ে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে কিনছে বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বকেয়া দায়ের উল্লেখযোগ্য অংশ পরিশোধের পরও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। ডলারের দরে স্থিতিশীলতা ফিরেছে। মূল্যস্ফীতি আরও কমে এলে আগামী জুনের মধ্যে আইএমএফের শর্ত মেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দর পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ আগস্টের পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে আর ডলার বিক্রি হয়নি। এর পরিবর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিনছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রিজার্ভ থেকে ৮০ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়। পরের দুই মাসে বিক্রি না করে কেনা হয় ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। পরের তিন মাসে বাজার থেকে আরও ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কত ডলার কিনেছে তা জানা যায়নি। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের তথ্য এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে এ সময়ে নিট বিক্রির পরিমাণ ঋণাত্মক হয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিদিনই ব্যাংকগুলোর ডলার বেচাকেনার তথ্য নেয়। সেখানে কোন ব্যাংকের কাছে কত ডলার রয়েছে, নিকটতম সময়ে তার কত পরিশোধ করতে হবে– এসব দেখা হয়। এর ভিত্তিতে ডলার কেনা হয়। গত ৫ আগস্টের পর ব্যাংক খাতের নেট ওপেন পজিশন (এনওপি) ৪০ কোটি ডলার উদ্বৃত্ত হয়েছে। গত বছর যা ঋণাত্মক ছিল। কোনো ব্যাংকের হাতে বেশি ডলার থাকলে প্রথমে সংকটে থাকা অন্য ব্যাংকের কাছে বিক্রির ব্যবস্থা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জানা গেছে, বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিগত সরকারের রেখে যাওয়া ৩৭০ কোটি ডলারের মেয়াদোত্তীর্ণ বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে আর বকেয়া রাখার সুযোগ দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এদিকে আবার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে গত ৬ এপ্রিল ২০ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সমকালকে বলেন, অর্থ পাচার কমে যাওয়ায় ডলারের জোগান বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে রেমিট্যান্স প্রায় ২৮ শতাংশ বেড়েছে। রপ্তানি বেড়েছে ১১ শতাংশ। এ সময়ে আমদানি সাড়ে ৪ শতাংশ বাড়লেও ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরেছে।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন সমকালকে বলেন, এখন আর প্রকৃত দরের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত দরের তেমন কোনো পার্থক্য নেই। এর মূল কারণ বড় অঙ্কের অর্থ পাচার যারা করত তারা হয় জেলে, না হয় নিজেরাই বিদেশে পালিয়ে গেছেন। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বেড়েছে। তিনি মনে করেন, বিনিময়হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার এখনই সময়। তা না হলে আইএমএফের ঋণের কিস্তি আটকে গেলে বিষয়টি স্বস্তির হবে না। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে কোনো অস্থিতিশীলতা নেই। এ সময়েও যদি বিনিময় হার বাজারের ওপর না ছাড়া হয়, তাহলে কখন ছাড়া হবে।
জুনের মধ্যে ডলার দর বাজারভিত্তিক হচ্ছে
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে টাকা-ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে গভর্নর জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন দুই অঙ্কের ঘরে থাকা মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করেছে। গত মার্চে মূল্যস্ফীতি নেমেছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে। আগামী জুনের মধ্যে ৮ শতাংশে নামার আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সময়ে রিজার্ভ পরিস্থিতির আরও উন্নতির আশা করা হচ্ছে। ফলে আগামী জুনের মধ্যে ডলারের দর বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদারকি অব্যাহত রাখবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কোনো ব্যাংক বা বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস যেন কারসাজি করে ডলারের দর বাড়াতে না পারে, তা তদারকি করা হবে। বর্তমানে কোনো ব্যাংক হঠাৎ দর বাড়ালে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে নীতিমালা করা হবে। একই সঙ্গে যে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আসবে ওই ব্যাংকেই বিক্রি বাধ্যতামূলক করা এবং এক ব্যাংকের গ্রাহক আরেক ব্যাংক থেকে ডলার কিনে দায় সমন্বয়ে বিধিনিষেধসহ বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। একই সঙ্গে দৈনিক ভিত্তিতে ডলার বেচাকেনার তথ্য নেওয়া অব্যাহত থাকবে।