বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজের অবস্থানে অনড়। তার চাপিয়ে দেওয়া শুল্কনীতি বিশ্ববাজারে তোলপাড় সৃষ্টি করলেও তিনি ছিলেন নির্বিকার। ট্রাম্প শুক্রবার জোর দিয়ে বলেছেন, তার শুল্কনীতি ‘সত্যিই ভালো করছে।’ 

যদিও বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধি করেছে চীন। এই বিষয়টি বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধের পাশাপাশি মন্দার আশঙ্কাও বাড়িয়ে তুলেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের

এদিকে বিনিয়োগকারীরা মার্কিন সরকারি বন্ড বিক্রি করে দিতে শুরু করেছে, ডলারের দাম কমে গেছে এবং শেয়ারবাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ট্রাম্পের পদক্ষেপ এরই মধ্যে বিপর্যস্ত বিশ্ববাজারে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ট্রাম্প গত সপ্তাহে কয়েক ডজন দেশের ওপর ব্যাপক আমদানি শুল্ক ঘোষণা করে শেয়ার বাজারকে টালমাটাল করে দিয়েছিলেন। কিন্তু বুধবার হঠাৎ করেই তা ৯০ দিনের জন্য ১০ শতাংশে কমিয়ে আনেন। তবে চীনের পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেন। জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর একই পরিমাণ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়।

চীনের সর্বশেষ শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা করার পর ট্রাম্প তার নিজের সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে শেয়ার করা এক পোস্টে বলেন, ‘আমাদের শুল্ক নীতি সত্যিই ভালো করছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকা এবং বিশ্বের জন্য খুবই উত্তেজনাপূর্ণ এটি!!! এটি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।’

এদিকে, ট্রাম্পের পোস্ট শেয়ারের পর হোয়াইট হাউস জানায়- ট্রাম্প চীনের সঙ্গে একটি চুক্তির ব্যাপারে ‘আশাবাদী’ এবং ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময় ১৫টি দেশ ‘আলোচনার’ প্রস্তাব দিয়েছে। 

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, যখন যুক্তরাষ্ট্রকে আঘাত করা হবে তখন তিনি আরও কঠোরভাবে পাল্টা আঘাত করবেন।’

গত সপ্তাহ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও বেইজিং ক্রমবর্ধমান কঠোর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্লা দিচ্ছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং শুক্রবার এই উত্তেজনা নিয়ে প্রথমবার মন্তব্য করেন। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, চীন ‘ভয় পায় না।’ 

এদিকে বেইজিং ঘোষণা করেছে, মার্কিন পণ্যের ওপর আরোপিত নতুন ১২৫ শতাংশ শুল্ক আজ শনিবার থেকে কার্যকর হবে, যা চীন পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত ১৪৫ শতাংশের স্তরের প্রায় কাছাকাছি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

আলোচনায় রাজি হিজবুল্লাহ

ইসরায়েল দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করলে এবং আকাশপথে হামলা বন্ধ করলে অস্ত্রসমর্পণের বিষয়ে লেবাননের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় রাজি হিজবুল্লাহ। সশস্ত্র সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ এক নেতা রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন। হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে তিনি সংগঠনটির এ অবস্থানের কথা জানান।

মাত্র দুই বছর আগে যখন হিজবুল্লাহ নিজেদের ক্ষমতার চূড়ায় অবস্থান করছিল, তখন সংগঠনটিকে নিরস্ত্র করা নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনাই ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু ফিলিস্তিনের গাজা যুদ্ধ ঘিরে বিধ্বংসী এক সংঘাতে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে ইসরায়েল রীতিমতো ধসিয়ে দেয়। এতে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্যে নাটকীয় পরিবর্তন আসে। হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার এ আলোচনা সেই পরিবর্তনই তুলে ধরছে।

গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেন যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন। ওই সময় তিনি অস্ত্রের ওপর রাষ্ট্রের একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই হিজবুল্লাহর হাতে থাকা অস্ত্রের বিষয়ে সংগঠনটির সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছা পোষণ করেন। লেবাননের তিনটি রাজনৈতিক সূত্র এমনটি জানিয়েছে।

হিজবুল্লাহ ২০২৪ সালের লড়াইয়ে ব্যাপকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা এবং হাজারো যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তাঁদের রকেটের মজুতের বেশির ভাগই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন হলে আরও চাপে পড়ে হিজবুল্লাহ। ইরান থেকে অস্ত্র সরবরাহের পথ বন্ধ হয়ে যায়।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে হিজবুল্লাহর ওই নেতা বলেন, জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশলের প্রেক্ষাপটে অস্ত্রের বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত সংগঠনটি। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান নেওয়া ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের ওপর।

হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘পাঁচটি অবস্থান থেকে ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার করলে এবং লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধ করলে নিজেদের অস্ত্রের বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত হিজবুল্লাহ।’

অস্ত্রের বিষয়ে আলোচনা নিয়ে হিজবুল্লাহর অবস্থান এর আগে প্রকাশ্যে আসেনি। রাজনৈতিক স্পর্শকাতর বিষয় হওয়ায় নাম প্রকাশ করতে চায়নি সূত্রগুলো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম দপ্তর। প্রেসিডেন্টের দপ্তরও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

যুদ্ধের সময় দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযান চালিয়েছিল ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে সেখান থেকে বেশির ভাগ সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে ফেব্রুয়ারিতে দেশটি জানায়, পাঁচটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান নেওয়া সেনারা সেখানে অবস্থান করবেন।

নভেম্বরে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও হিজবুল্লাহর অবস্থানে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ঠিক একই সময়ে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার দাবি জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় চাপে পড়েছে সংগঠনটি। হিজবুল্লাহকে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-সমর্থিত সবচেয়ে শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী মনে করা হয়।

গত সোমবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সংঘাত এড়াতে অস্ত্রসমর্পণের বিষয়ে প্রস্তুত আছে বলে প্রথমবারের মতো জানিয়েছে ইরান-সমর্থিত কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী।

মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করল হুতিরা

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলীয় আল-জাওফ প্রদেশে যুক্তরাষ্ট্রের একটি এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে হুতিরা। হুতি-সমর্থিত আল মাসিরাহ টিভি চ্যানেল এ কথা জানিয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে এ ধরনের তিনটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে খবরে বলা হয়।

অত্যাধুনিক এই ড্রোন ১৫ হাজার ২৪০ মিটার উঁচুতে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত উড়তে পারে। ইয়েমেনে বছরের পর বছর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই ড্রোন ব্যবহার করে আসছে।

গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি রিপার ড্রোন হামলা চালাতেও সক্ষম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিনিয়োগের বড় খাত হতে পারে স্বাস্থ্যসেবা
  • সিটি ব্যাংকের নতুন সংযোজন ‘আমেরিকান এক্সপ্রেস মেটাল কার্ড’
  • আলোচনায় রাজি হিজবুল্লাহ