ছবি: প্রথম আলো

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

তারপরও আয়েশারা এগিয়ে চলে

আয়েশা আশরাফীর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলায়। এসএসসি ও এইচএসসি শেষে ঢাকায় ইডেন মহিলা কলেজ থেকে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছেন। বর্তমানে ফরিদপুর ল কলেজে এলএলবি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আয়েশা। ছোটবেলা থেকে গাছের প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা তাঁর। বাবার সরকারি চাকরির কারণে স্থায়ীভাবে কোথাও কিছু করতে পারেননি। বিয়ের পর সেই সুযোগ আসে। আয়েশা বলেন, ‘মাত্র পাঁচটা ফলের গাছ দিয়ে ছাদবাগানের যাত্রা শুরু করি। সেই গাছগুলোয় যখন আমি ভালো ফল পাই, তারপর থেকে আমার পুরো ছাদে গাছ লাগাই। আমার ছাদে এখন প্রায় সবই ফলের গাছ।’
মাত্র ২০ হাজার টাকা দিয়ে বাগান শুরু করেন। টাকাটা স্বামীর কাছ থেকে ধার হিসেবে নেন। এ ব্যাপারে আয়েশা আশরাফী বলেন, ‘শুরুটা ছিল অনেক কম টাকার মূলধন দিয়ে। স্বামীকে বলি, আমি বাগান করতে চাই। ধার হিসেবে কিছু টাকা দাও। সে রাজি হয়। আমার ছাদবাগান ও মাঠবাগানে প্রায় ২০০টি গাছ রয়েছে। এর মধ্যে আনারের মাতৃ গাছের সংখ্যা ১৫০টি আর বাকি ৫০টি অন্যান্য জাতের ফল গাছ। এ ছাড়া আছে লেবু, সফেদা, কদবেল, শরিফা, জামরুল, আমড়া, আঙুর, আপেল কুল, জাম্বুরা, কমলা, মাল্টা। আরও আছে কিছু সবজি এবং কয়েকটি ফুল গাছ। আমার বাগানে ১৫০টির মতো আনারের মাতৃ গাছ আছে এবং অন্যান্য ফল গাছসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার গাছ। এ ছাড়া আমার কাছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ আনারের রেডি চারা আছে, যার বর্তমান দাম প্রায় ৬ লাখ টাকা। প্রতিবছর গাছের চারা বিক্রি করে ১৪ লাখ টাকার মতো আয় হয়।’
এ বাগানে তিনজন কর্মচারী রয়েছেন। পরিবারেরও গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা রয়েছে। আয়েশা বলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন নার্সারি ও ছাদবাগানিদের কাছ থেকে গাছ সংগ্রহ করেছে আমার স্বামী। এ ছাড়া আমার শ্বশুর-শাশুড়িও আমার গাছগুলোর প্রতি অনেক যত্নশীল।’
গাছ থেকে গ্রাফটিং ও গুটি কলমের মাধ্যমে চারা করে থাকেন আয়েশা। সেটি বিভিন্নভাবে বাজারজাত করা হয়। তিনি জানান, ‘আমার গাছের চারাগুলো অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করি এবং কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় চারা পৌঁছে দিই। ছাদবাগান করে পারিবারিক ফল ও সবজির চাহিদা পূরণ করা সম্পূর্ণভাবে সম্ভব। শুধু যে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয় তা নয়; এটি উপার্জনের একটি উৎস।’ v
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ