ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রা উদ্‌যাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফে একজন ব্যক্তিকে আগুন দিতে দেখা গেছে। চারুকলার সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ এ তথ্য জানতে পেরেছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ জানান, ওই ব্যক্তি কালো টি-শার্ট, বাদামি প্যান্ট ও কালো স্যান্ডেল পরেছিলেন। তাঁর চুল পেছনে ঝুঁটি বাঁধা ছিল। চারুকলার মাঝখানের গেট টপকে ওই ব্যক্তি ভোর ৪ টা ৪৪ মিনিটের ভেতরে ঢোকেন। একই পথে তিনি ৪ টা ৪৬ মিনিটে পালিয়ে যান। তাঁর নাম-পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। সিসিটিভি ফুটেজে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে তিনি পুলিশকে জানান।

প্রক্টর আরও বলেন, ওই ব্যক্তি প্রথমে তরল দাহ্য পদার্থ দিয়েছেন। তারপর পর্দার আড়ালে চলে গেছেন। তারপর ফুটেজে সেখানে অগ্নিশিখা দেখা গেছে। ওই ব্যক্তি যে গেট দিয়ে ঢুকেছে সেই গেট দিয়েই বেরিয়ে ছবির হাটের দিকে গেছেন বলে জানান প্রক্টর।

পুলিশ তখন কী করছিল এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশকে পানি দিয়ে আগুন নেভাতে দেখা গেছে। তবে তদন্ত কমিটি সব সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে পরে জানাবে।

আজ ভোরে নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য বানানো ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ দুটি আগুনে পুড়ে যায়। এর মধ্যে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি মোটিফটি পুরোপুরি পুড়ে যায়। আর শান্তির পায়রা মোটিফটি আংশিক পুড়ে যায়।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, সেই ব্যক্তি কে, তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।

এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তাঁদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলেন তিনি।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মো.

ফারুক হাসান বলেন, জড়িতদের চিহ্নিত করতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বলছে, তাঁরা আজ ভোর ৫ টা বেজে ৪ মিনিটে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ৫ টা ২২ মিনিটে আগুন নিভিয়ে ফেলে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। এ সময় সেখানে পুলিশও ছিল।

আগুনে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিলাসপুরে কারা–কীভাবে–কোথায় ককটেল বানান, কত টাকা পান

বালতিতে করে ককটেল নিয়ে ‘খইয়ের মতো’ ফুটিয়ে সংঘাতে জড়ানো শরীয়তপুরের জাজিরার বিলাসপুর ইউনিয়নে নতুন ঘটনা নয়। এ চিত্র অন্তত ২০ বছরের। প্রতিবছর ছয় থেকে আটবার এমন ‘ককটেল সংঘাত’ হয়। ককটেলগুলো বানানো হয় বিলাসপুরের বিভিন্ন গ্রামে। ককটেল বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে গত ১৫ বছরে একজনের প্রাণহানি এবং ৩০ জনের অঙ্গহানি হয়েছে, এমন তথ্য স্থানীয় ব্যক্তি ও পুলিশের।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ককটেল তৈরি করা, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে লুটপাট করা, সংঘর্ষে জড়ানো ও হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা কুদ্দুস ব্যাপারী ও জলিল মাতবর। ওই দুই পক্ষের আছে ককটেল তৈরির প্রশিক্ষিত লোক। বিলাসপুরে তৈরি করা ককটেল শুধু যে বিলাসপুরেই ব্যবহৃত হয়, এমন নয়। এসব ককটেল বিক্রি করা হয় জেলার বিভিন্ন এলাকার সন্ত্রাসীদের কাছে। জেলার যেখানেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, সেখানেই বিলাসপুরের ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

বিলাসপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম পদ্মা নদীর তীরবর্তী। ওই এলাকায় জেগে ওঠা চরের জমি দখলে নেওয়া, পদ্মা নদীর নৌপথ নিয়ন্ত্রণ, বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ, মাছ শিকার নিয়ন্ত্রণ, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সহিংসতা হয়। বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কুদ্দুস ব্যাপারী এবং পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিল মাতবর দুটি বাহিনী গড়ে তুলেছেন। তাঁদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ আছে সাবেক সংসদ সদস্য বি এম মোজাম্মেল হক ও ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে।

ককটেল বানান পাচু খাঁরকান্দি এলাকার এমন একজনের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তিনি তাঁর নাম প্রকাশ করতে চাননি। তিনি বলেন, টাকার বিনিময়ে তিনি কুদ্দুস ব্যাপারীর লোকজনকে ককটেল তৈরি করে দেন। ওই পক্ষের লোকজন গোলাবারুদ (বিস্ফোরক) এনে দেন। সেটা দিয়ে তিনি ককটেল তৈরি করেন। গোলাবারুদের সঙ্গে বাসমতী চাল, কাচ ভাঙা ও লোহার টুকরা ব্যবহার করেন। পরে এসব উপকরণ টিনের একটি কৌটায় ভরে তা স্কচটেপ দিয়ে মুড়িয়ে ককটেল বোমা তৈরি করেন। একেকটি অর্ডারে কমপক্ষে ৫০টি করে ককটেল তৈরি করা হয়। এর জন্য পারিশ্রমিক পান ২০ হাজার টাকা। গ্রামের নির্জন স্থানে, বাগানে, পদ্মা নদীর চরে বা নৌকায় বসে এ কাজ করেন।

শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ। শনিবার সকালে বিলাসপুর ইউনিয়নের দূর্বাডাঙ্গা এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজার জন্য সমব্যথী নারী
  • তৃণমূলের একজন কর্মীকেও হারাতে দেয়া যাবে না : রিয়াদ চৌধুরী
  • শেখ হাসিনার সন্ধান চেয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিঠি
  • কক্সবাজারের মেয়েটি
  • নড়াইলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত
  • আত্মপ্রকাশ করল নতুন দল গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি
  • ওল্ড ইজ গোল্ড, আবেগতাড়িত ভক্ত-অনুরাগীরা
  • আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের পর মা-বাবা জানলেন ভ্রূণটি অন্যের ছিল
  • বিলাসপুরে কারা–কীভাবে–কোথায় ককটেল বানান, কত টাকা পান