ভারতে গুলি করে হত্যা করা হয় বাংলাদেশি কুটি মিয়াকে
Published: 12th, April 2025 GMT
ভারতের অভ্যন্তরে কুটি মিয়া (৫০) নামের এক বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে খাসিয়ারা। কুটি মিয়া সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের পেকপাড়া গ্রামের মৃত মনির উল্ল্যাহর ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করতেন।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে রাইজিংবিডি ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (২৮ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির।
বিজিবি ও পুলিশ এবং স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সুপারি আনার জন্য বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্ত দিয়ে ছয় জন বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং জেলার লংথ্রাইপুঞ্জি এলাকায় যান। বিকেলে দেশে ফেরার সময় তারা খাসিয়াদের বাগান থেকে সুপারি চুরি করে বস্তায় ভরেন। ভারতীয় খাসিয়ারা তা দেখে ফেলায় পাঁচ জন বাংলাদেশি দৌড়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। এ সময় পিছনে থাকা কুটি মিয়াকে লক্ষ্য করে গুলি চালান খাসিয়ারা। তিনি ভারতের মাটিতেই মারা যান।
এদিকে, দুই দিন ধরে কুটি মিয়ার সন্ধান পায়নি বিজিবি ও পুলিশ। পরে বিজিবির পক্ষ থেকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। ভারতীয় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কুটি মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।
২৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির রাইজিংবিডিকে বলেছেন, বাংলাদেশের ছয় জন চোরাকারবারি ভারতের খাসিয়াদের সুপারি চুরি করতে যান। পাঁচ জন চলে আসেন। এক জন নিখোঁজ বলা হচ্ছিল। তিনি খাসিয়াদের গুলিতে মারা গেছেন নাকি আহত হয়েছেন, কিছুই বলা যাচ্ছিল না। পরে আমরা বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করি। বিএসএফ আমাদের জানায়, যে জায়গায় ঘটনা ঘটেছে, তা সীমান্ত এলাকা না, ভারতের প্রায় ৭ কিলোমিটার ভিতরে। বিএসএফ ভারতের পুলিশকে বিষয়টি জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে একটি লাশের সন্ধান পায়। তারা যাচাই করে জানতে পারে, লাশটি বাংলাদেশের কুটি মিয়ার।
তিনি আরো বলেন, ভারতের পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করেছে। নিয়ম অনুযায়ী লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আজ-কালের মধ্যে লাশ হস্তান্তর করবে।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
তিনি আরো বলেন, সীমান্ত এলাকায় কোনো ঘটনা হলে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক হয়। এ ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফের মাধ্যমে ও ভিকটিমের পরিবারের উপস্থিতে ভারতের পুলিশ আমাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করবে।
ঢাকা/মনোয়ার/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সীমান্তের ইছামতি নদীতে ভাসছে যুবকের লাশ
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পলিয়ানপুর সীমান্তের ইছামতি নদীতে এক যুবকের মরদেহ ভাসতে দেখা গেছে। সীমান্তের হুদাপাড়া গ্রামের ইছামতি নদীর ভারতীয় অংশে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেল পর্যন্ত লাশটি ভাসতে দেখার কথা জানান স্থানীয়রা।
লাশটি নদীর যে অংশে রয়েছে সেটি ভারতের নদীয়া জেলার ধানতলা থানার হাবাসপুর এলাকা।
এলাকাবাসী জানান, আজ দুপুরের পর হুদাপাড়া গ্রামের এক কৃষক নদীর পাড়ের মাঠে যান। এসময় তিনি নদীতে লাশ ভাসতে দেখেন। পরে বিজিবি ঘটনাস্থলে এসে লাশের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। লাশ নদীতে ভাসতে থাকায় তার নাম বা পরিচয় জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ৩ জনের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার, আটক ১
রাজশাহীতে নিখোঁজ স্কুলছাত্রের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
এলাকাবাসীর ধারণা, ওই যুবক বাংলাদেশি নাগরিক হতে পারেন। তার বাড়ি মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আদিবাসিপাড়ায় হতে পারে। তারা মনে করছেন, তিনদিন আগে বাঘাডাঙার ওয়াসিমসহ আরো তিনজন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় বিএসএফ তাদের ধাওয়া করে। বিএসএফের হাতে আটক হন ওয়াসিম আলী।
এ বিষয়ে জানতে খালিশপুর ৫৮ বিজিবি’র পরিচালক রফিকুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
মহেশপুর থানার ওসি ফয়েজ উদ্দিন মৃধা বলেন, “ইছামতী নদীর ভারতীয় অংশে একটি লাশ পড়ে আছে শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে বিজিবি কাজ করছে। নিয়মানুযায়ী এ ধরণের ঘটনায় বিএসএফের সঙ্গে বিজিবি যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। কাজেই বিজিবি কোনো কিছু না জানানো পর্যন্ত আমরা কোনো কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারব না। বিজিবির কাছ থেকে চূড়ান্ত তথ্য পাওয়ার পরে আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।”
ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ