কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক ও আলোচিত পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্স খুলে এবারও পাওয়া গেল বিপুল পরিমাণ অর্থ। শনিবার সকাল ৭টা থেকে শুরু হয় গণনা। গণনায় দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৮ বস্তা থেকে প্রায় ৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা পাওয়া গেছে।

মসজিদ চত্বরেই টাকা গণনার এই কার্যক্রম চলছে জেলা প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা ও তত্ত্বাবধানে। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান,পুলিশ সুপার মো.

হাছান চৌধুরী, ব্যাংক ও প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রূপালী ব্যাংকের কিশোরগঞ্জ শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, গণনার প্রাথমিক পর্যায়ে পাওয়া সব টাকা ব্যাংকের হিসাবে জমা করা হয়েছে। এছাড়া দেশি মুদ্রার পাশাপাশি পাওয়া গেছে বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার। 

জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, বিদেশি মুদ্রা ও অলংকার পরবর্তীতে মূল্য নির্ধারণ করে ব্যাংকে জমা দেওয়া হবে। 

এর আগেরবার গত বছর ৩০ নভেম্বর পাগলা মসজিদের একই সংখ্যক দানবাক্স থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা, যা ছিল একটি রেকর্ড পরিমাণ দান। দানের এই ব্যতিক্রমী ধারা প্রতি তিন থেকে চার মাস পরপরই গণনা করা হয়। 

ধর্মপ্রাণ মানুষের অগাধ বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা থেকেই পাগলা মসজিদে এতো বিপুল দান আসে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

‘মানবিক হতে পারাটাও জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’

ক্লাউডিয়া শিফার। জার্মান সুপারমডেল। কিংবদন্তি এই মডেলের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণামূলক কথা তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক

দীর্ঘদিন ধরে আমার মনে হয়ে আসছে, কোনো একটা ভুল করে ফেলেছি জীবনে! মনে পড়ে, ১৯৯৯ সালের কথা। আমেরিকান ফিল্মমেকার জেমস টোব্যাক তখন তাঁর ‘ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট’ সিনেমাটিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাব পেয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছিলাম। তার জন্য তো কিছুই করতে পারব না আমি। অভিনয় তো আমার লক্ষ্য ছিল না। রাজনীতিও আমার লক্ষ্য নয়। ফলে এ দুটি মাধ্যমে নিজের ভবিষ্যতের কথা ভাবতে পারি না কখনোই।
 
অজান্তে রাজনীতিতে
তবু মাঝে মধ্যে ভাবি, এই যে এত এত শিশু মরে যাচ্ছে আফ্রিকায়; আমার নিশ্চয়ই কিছু করার আছে। নিজেকে সান্ত্বনা দিই: না, এটি অত বেশি রাজনৈতিক বিষয় নয়; বরং একটু আন্তরিক প্রচেষ্টা এমন মানবসৃষ্ট বিপর্যয় থেকে বাঁচাতে পারবে পৃথিবীকে। ফলে অজান্তে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেলাম আমি! সরাসরি নয় যদিও। বরং আফ্রিকার শিশুদের নিজের সন্তান মনে হওয়ায়, এমন কাজে নিয়োজিত জার্মান রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে করতে শুরু করলাম আলোচনা। কেননা, মানুষ হিসেবে এতটুকু দায়িত্ব আমাকে নিতে হতো।

বড় করে শ্বাস নিই
ছোটবেলায় খুব লাজুক ছিলাম আমি। যেখানে যেতাম, সঙ্গে থাকত প্রিয় বান্ধবীর দল। ফটো স্টুডিওতে গিয়ে মুখ ফুটে একটা শব্দও বলতাম না আমি। যখন কেউ কথা বলতে আসত, লজ্জায় চোখ-মুখ লাল হয়ে যেত। তবে এক্ষেত্রে মেকআপ আমাকে অনেক বাঁচিয়েছে বলা যায়! ফলে চোখ-মুখের এ পরিবর্তন ঠিকঠাক নজরে পড়েনি কারও। এখনও, যখন কোথাও যাই, নজরে পড়ে ফটোগ্রাফারদের ব্যস্ততা। তখন খুব বড় করে শ্বাস নিই; তাতে এক ধরনের স্বস্তি অনুভব হয় আমার। তখন বলি, তাড়াতাড়ি ছবি তুলুন; আমার তাড়া আছে!

নিজেকে প্রস্তুত করতে...
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মডেলিং সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা ছিল না। এ মাধ্যমে যে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব ভাবিনি এমনটাও। প্রথম দিকে স্রেফ পরিকল্পনা ছিল, নিজেকে আরেকটু ঝালিয়ে নেওয়ার জন্য প্যারিসে পাড়ি জমানো। মডেলিংয়ের দুনিয়ায় নিজেকে জড়িয়ে নেওয়া আমি কোনোদিনই এমন পোশাক পরিনি, যেটি আমাকে অস্বস্তি দিতে পারে। ব্যক্তিজীবনে সাধারণত মেকআপ এড়িয়ে যেতে ভালোবাসি। দীর্ঘ একটি সময় এ পেশায় থেকে দেখেছি, মডেলিংয়ের বাজারটি প্রতিনিয়ত বড় হয়ে উঠছে। অনেক ধরনের ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে এ মাধ্যমে। তাতে আমার নিজেরও, সামান্য হলেও অবদান রয়েছে ভাবতে আনন্দ হয়।

যার মাধ্যমে বদলে যেতে পারে ভাগ্য
মডেলিং দুনিয়ায় যারা কাজ করতে আগ্রহী, অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, একটি ভালো ফটোগ্রাফই খুলে দিতে পারে আপনার ভাগ্য। মনে রাখুন, ছবিতে যথাযোগ্য আবেগ ফুটিয়ে তুলতে পারা এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় গুণ। যে ছবি দেখে যে কারও মনে ভালো, খুব ভালো একটি অনুভূতি তৈরি হবে সেটিকে আমি সে ছবির মডেলের সেরা অর্জন বলে মনে করি। এ ক্ষেত্রে দক্ষ কোনো ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায় সঁপে দিন নিজেকে। রাখুন আস্থা। করুন পরিশ্রম। দেখবেন, তার তোলা ছবিগুলো আপনাকে একটি নতুন দুনিয়ার সন্ধান দেবে। সেই ফটোগ্রাফার সিলেকশনটাও হতে হবে যথাযোগ্য। এই ক্ষেত্রে কেউ এসে আপনাকে বলে দেবে না। নিজের মেধা দিয়ে সেরা ফটোগ্রাফারকে খুঁজে বের করতে হবে। কিংবা আপনার জন্য যে ফটোগ্রাফার সেরা তাকে বের করে আনতে হবে। তবেই দুনিয়া আপনাকে চিনবে নতুন করে। আপনিও উড়ে বেড়াতে পারবেন স্বপ্নের আকাশে! 

সম্পর্কিত নিবন্ধ