প্রধান বিচারপতি নিজেই শুনবেন মামলার শুনানি
Published: 12th, April 2025 GMT
ভারতে সদ্য পাস হওয়া ওয়াক্ফ আইনের বিরুদ্ধে দেশের নানা প্রান্তে তীব্র বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ দানা বাঁধছে। পাশাপাশি দেশের শীর্ষ আদালতেও আইনটি বাতিল করার দাবিতে একাধিক পিটিশন জমা পড়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ আগামী সপ্তাহেই এই মামলাগুলো শুনবেন। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না নিজেই বিতর্কিত ওয়াক্ফ মামলা শুনবেন বলে জানিয়েছেন।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার সঙ্গে মামলা শুনবেন বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথন। ১৬ এপ্রিল ওয়াক্ফ আইন চ্যালেঞ্জ করে করা একগুচ্ছ মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে। ওই আইন চ্যালেঞ্জ করে অন্তত ১৫টি আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও প্রস্তুত। সরকারের পক্ষে আগেই সুপ্রিম কোর্টে এক ক্যাভিয়েট দাখিল করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সরকারের অভিমত না শুনে সর্বোচ্চ আদালত যেন কোনো কিছু নির্ণয় না করেন।
ওয়াক্ফ আইনের বিরোধিতা করে প্রথম মামলা করে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ড। প্রায় একই সঙ্গে মামলা করে জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ ও বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য প্রটেকশন অব সিভিল রাইটস (এপিসিআর)।
দেশজুড়ে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন রাজ্যে ওয়াক্ফ আইনের বিরুদ্ধে মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোও বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে উঠছে। জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের কলকাতা শাখা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই আইন বাতিলের দাবিতে ১ কোটি মুসলমান জনতার সইসংবলিত এক স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে পাঠাবে। ওয়াক্ফ আইন বাতিল করাই তাদের লক্ষ্য। কারণ, তারা বুঝেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্য হলো ওয়াক্ফের সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করা। সেটা তারা করতে চাচ্ছে মুসলিম সমাজের কল্যাণের কথা বলে। বিজেপি অবশ্য পিছু হটতে নারাজ। বরং এই আইনের সমর্থনে তারাও জনমত গঠনে উদ্যোগী হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন ব চ রপত আইন র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
তারপরও আয়েশারা এগিয়ে চলে
আয়েশা আশরাফীর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলায়। এসএসসি ও এইচএসসি শেষে ঢাকায় ইডেন মহিলা কলেজ থেকে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছেন। বর্তমানে ফরিদপুর ল কলেজে এলএলবি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আয়েশা। ছোটবেলা থেকে গাছের প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা তাঁর। বাবার সরকারি চাকরির কারণে স্থায়ীভাবে কোথাও কিছু করতে পারেননি। বিয়ের পর সেই সুযোগ আসে। আয়েশা বলেন, ‘মাত্র পাঁচটা ফলের গাছ দিয়ে ছাদবাগানের যাত্রা শুরু করি। সেই গাছগুলোয় যখন আমি ভালো ফল পাই, তারপর থেকে আমার পুরো ছাদে গাছ লাগাই। আমার ছাদে এখন প্রায় সবই ফলের গাছ।’
মাত্র ২০ হাজার টাকা দিয়ে বাগান শুরু করেন। টাকাটা স্বামীর কাছ থেকে ধার হিসেবে নেন। এ ব্যাপারে আয়েশা আশরাফী বলেন, ‘শুরুটা ছিল অনেক কম টাকার মূলধন দিয়ে। স্বামীকে বলি, আমি বাগান করতে চাই। ধার হিসেবে কিছু টাকা দাও। সে রাজি হয়। আমার ছাদবাগান ও মাঠবাগানে প্রায় ২০০টি গাছ রয়েছে। এর মধ্যে আনারের মাতৃ গাছের সংখ্যা ১৫০টি আর বাকি ৫০টি অন্যান্য জাতের ফল গাছ। এ ছাড়া আছে লেবু, সফেদা, কদবেল, শরিফা, জামরুল, আমড়া, আঙুর, আপেল কুল, জাম্বুরা, কমলা, মাল্টা। আরও আছে কিছু সবজি এবং কয়েকটি ফুল গাছ। আমার বাগানে ১৫০টির মতো আনারের মাতৃ গাছ আছে এবং অন্যান্য ফল গাছসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার গাছ। এ ছাড়া আমার কাছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ আনারের রেডি চারা আছে, যার বর্তমান দাম প্রায় ৬ লাখ টাকা। প্রতিবছর গাছের চারা বিক্রি করে ১৪ লাখ টাকার মতো আয় হয়।’
এ বাগানে তিনজন কর্মচারী রয়েছেন। পরিবারেরও গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা রয়েছে। আয়েশা বলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন নার্সারি ও ছাদবাগানিদের কাছ থেকে গাছ সংগ্রহ করেছে আমার স্বামী। এ ছাড়া আমার শ্বশুর-শাশুড়িও আমার গাছগুলোর প্রতি অনেক যত্নশীল।’
গাছ থেকে গ্রাফটিং ও গুটি কলমের মাধ্যমে চারা করে থাকেন আয়েশা। সেটি বিভিন্নভাবে বাজারজাত করা হয়। তিনি জানান, ‘আমার গাছের চারাগুলো অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করি এবং কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় চারা পৌঁছে দিই। ছাদবাগান করে পারিবারিক ফল ও সবজির চাহিদা পূরণ করা সম্পূর্ণভাবে সম্ভব। শুধু যে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয় তা নয়; এটি উপার্জনের একটি উৎস।’ v