নোয়াখালীতে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
Published: 12th, April 2025 GMT
ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফিরে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় নোয়াখালীর যুবলীগ নেতা আবদুল কাদের মিলনকে (৩৫) পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে বাড়ি ফেরার পথে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর পার্বতী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাজারী হাটের পূর্ব পাশে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকায় আবদুল কাদের মিলনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
আবদুল কাদের মিলন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর হাজারী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো.
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আবদুল কাদের মিলন ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফিরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। শুক্রবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে তাকে পিটিয়ে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে ঢাকার হাসপাতালে রেফার করেন। অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেওয়ার পথে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কাঁচপুর এলাকায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্ত্রী জোলেখা বেগম বলেছেন, “আমার স্বামী মিলন ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকায় ছিলেন না। তার সঙ্গে আমাদের ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার যুবদল নেতা সুমন ও চর পার্বতীর যুবদল নেতা মাইন উদ্দিন ও এক সাংবাদিকের যোগাযোগ ছিল। তারা আশ্বাস দেওয়ায় আমার স্বামী বাড়িতে আসছিলেন। তারা আমার স্বামীর অবস্থান নিশ্চিত করে চর পার্বতীর জামায়াতের লোকজনকে জানায়। বাড়িতে আসার সময় আমার স্বামীকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।”
চর পার্বতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন কমিটির আমির কাজী হানিফ বলেছেন, “এটার সাথে জামায়াতের কেউ জড়িত নয়। জামায়াত হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হোক।”
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেছেন, এক যুবলীগ নেতার মৃত্যুর খবর শুনেছি। এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/সুজন/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম র স ব ম য বল গ
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের জন্য লজ্জায় পড়েছেন ফ্রান্স সফররত মার্কিন পর্যটকেরা
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের তুইলেরিস উদ্যানের পরিচ্ছন্ন নুড়িপাথরের ওপর দিয়ে ঝলমলে রোদে হেঁটে বেড়াচ্ছিলেন বারবারা ও রিক উইলসন দম্পতি। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহর থেকে প্রথমবারের মতো ফ্রান্স ভ্রমণে এসেছেন। মার্কিন পর্যটক হিসেবে ভ্রমণে এলেও তাঁরা ঠিক ছদ্মবেশ ধারণ করেননি। তবে ৭৪ বছর বয়সী রিক সাতসকালেই বাড়তি সতর্কতা গ্রহণ করেছিলেন।
বারবারা ও রিক উইলসন প্যারিসের একটি হোটেলে উঠেছেন। হোটেল থেকে বের হওয়ার আগে ছোট্ট একটি কালো টেপ দিয়ে মাথার সাদা–কালো বেসবল ক্যাপে থাকা তারকাখচিত ও ডোরাকাটা মার্কিন পতাকা ঢেকে দিয়েছেন।
বারবারা ও রিক উইলসন প্যারিসের একটি হোটেলে উঠেছেন। হোটেল থেকে বের হওয়ার আগে ছোট্ট একটি কালো টেপ দিয়ে মাথার সাদা-কালো বেসবল ক্যাপে থাকা তারকাখচিত ও ডোরাকাটা মার্কিন পতাকা ঢেকে দিয়েছেন।বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আকস্মিক পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণায় মার্কিন নাগরিক হিসেবে যে লজ্জা ও বিব্রতকর অনুভূতি অনুভব করছেন, তা নিয়ে ভাবছিলেন এই দম্পতি। রিক বলেন, ‘বিষয়টি (শুল্ক) নিয়ে আমাদের খারাপ লাগছে। এটা ভয়ানক। শুধুই আতঙ্কের।’
শুধু রিক নন, ৭০ বছর বয়সী বারবারাও তাঁর পকেটে একটি কানাডীয় ল্যাপেল পিন রেখে দিয়েছেন। আরেকজন পর্যটক তাঁকে এটি উপহার দিয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, ফ্রান্স ভ্রমণে কিছু আড়াল করার দরকার হলে এটি কাজে লাগাতে পারবেন।
বিষয়টি (ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপ) নিয়ে আমাদের খারাপ লাগছে। এটা ভয়ানক। শুধুই আতঙ্কের।রিক উইলসন, ফ্রান্স ভ্রমণে যাওয়া মার্কিন পর্যটকবারবারা বলেন, ‘আমাদের দেশ নিয়ে আমি হতাশ। শুল্ক নিয়ে আমরা বিরক্ত।’
কয়েক গজ দূরে বিখ্যাত ল্যুভর জাদুঘরের সামনে মানুষের জটলা দেখা গেল। সেখানে আরেক মার্কিন দম্পতি নিজেদের পরিচয় কিছুটা লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করছিলেন; যেমনটা সাধারণত দেখা যায় না। কথা হয় ক্রিস এপসের (৫৬) সঙ্গে। তিনি নিউইয়র্কে অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করেন। এবারের ফ্রান্স সফরে তিনি একটু ভিন্ন পোশাক পরবেন বলে ঠিক করেছিলেন।
ক্রিস এপস বলেন, ‘(আমার সঙ্গে) নিউইয়র্কের কোনো ইয়াঙ্কি হ্যাট নেই। সেটি হোটেলে রেখে এসেছি। (হ্যাট দেখে) মানুষ আমাদের আলাদা মনে করতে পারে।’
খোলাখুলি বলে রাখা ভালো, ফ্রান্সে মার্কিনদের আগের চেয়ে কম অভ্যর্থনা জানানো হচ্ছে, এমন কোনো লক্ষণ নেই। ট্রাম্প তাঁর নতুন শুল্ক ঘোষণা স্থগিত করার আগে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে কিছু পর্যটকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল।
কথা হয় ফিলিপ গ্লোয়াগুয়েন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। ফ্রান্সের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রাভেল গাইড লে গাইড দু রুতার্দের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। গ্লোয়াগুয়েন প্যারিসে একটি ডেস্কে বসে ছিলেন। তিনি জানান, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তাঁর লেখা বইয়ের ফরমাশ ২৫ শতাংশ কমে গেছে। ‘এটা একটা বড় পতন,’ বলেন তিনি।মার্কিনরা তাঁদের সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া থেকে বহু দূরে রয়েছেন। তাঁদের মনোভাবে যে পরিবর্তন ঘটছে, সেটির সপক্ষে বেশির ভাগ প্রমাণই কল্পনাপ্রসূত। তবে ইতিমধ্যে ভ্রমণ, পর্যটন, শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার বিষয়টি বোধগম্য হয়ে উঠেছে।
কথা হয় ফিলিপ গ্লোয়াগুয়েন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। ফ্রান্সের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রাভেল গাইড লে গাইড দু রুতার্দের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। গ্লোয়াগুয়েন প্যারিসে একটি ডেস্কে বসে ছিলেন। তিনি জানান, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তাঁর লেখা বইয়ের ফরমাশ ২৫ শতাংশ কমে গেছে। ‘এটা একটা বড় পতন,’ বলেন তিনি।
ল্যুভর জাদুঘরের সামনে পর্যটকদের ভিড়