ঢাকায় পাকিস্তানি গায়ক এনে লাপাত্তা আয়োজক, স্থগিত কনসার্ট
Published: 12th, April 2025 GMT
পাকিস্তানি শিল্পী মুস্তাফা জাহিদ। বিশ্বজুড়ে যার ভক্ত-অনুরাগী রয়েছে। সদ্যই ঢাকায় এসেছেন তিনি। কথা ছিল, ‘মেলোডি আনলিশড’ শিরোনামের একটি কনসার্টে গান গাইবেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঢাকায় এসেও আর গান গাওয়া হলো না তার। কনসার্টটি স্থগিত করেছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান মেলোডি অ্যান্ড মাইন্ড কমিউনিকেশন। কনসার্ট শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে আয়োজক প্রতিষ্ঠান ফেসবুকে জানিয়ে দেয়, কনসার্টটি স্থগিত করা হয়েছে। কারণ দর্শানো হয়েছে- নিরাপত্তাজনিত সমস্যাকে।
ঢাকার শিল্পী এ কে রাহুল, ব্যান্ড লেভেল ফাইভ ও এনকোর– এই কনসার্টে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আয়োজকরা কারো সঙ্গেই যোগাযোগ রাখেননি বলে অভিযোগ করেছেন শিল্পীরা। বিষয়টি নিয়ে এ কে রাহুল বলেন, একজন আন্তর্জাতিক শিল্পী অতিথি হয়ে দেশে এসেছেন। প্র্যাকটিসও করেছেন। অথচ আয়োজকরা একেবারে শেষ মুহূর্তে গায়েব হয়ে গেলেন। এটা শুধু লজ্জাজনক নয়, শিল্পীসমাজের জন্য অপমানজনকও।
ব্যান্ড লেভেল ফাইভের ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিস জানান, আয়োজকরা গতকাল যে পেমেন্ট দেওয়ার কথা বলেছিল, সেটিও দেয়নি। তখন থেকেই সন্দেহ হয়েছিল কিছু একটা হতে পারে। অন্যদিকে, এই কনসার্টের জন্য তিন ক্যাটাগরির টিকিট বিক্রি হয়েছিল।
জেনারেল এক হাজার ৯৯৯ টাকা, মেলোডি জোন তিন হাজার ৪৯৯ এবং প্রিমিয়াম ১০ হাজার টাকা। কনসার্টটি হওয়ার কথা ছিল পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে। তবে ভেন্যু কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘মেলোডি অ্যান্ড মাইন্ড কমিউনিকেশন’ নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের আজকের দিনের জন্য বুকিং ছিল না। তারা যোগাযোগ করেছিল ঠিকই, কিন্তু কোনো পেমেন্ট দেয়নি। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অসংখ্য দর্শক ভেন্যুতে হাজির হন। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখেন গেট বন্ধ, নেই কোনো আয়োজনের চিহ্ন। দর্শকরা আয়োজকের নম্বরে ফোন করলেও সব নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এই ৭ বদভ্যাসে আপনার কিডনি হতে পারে বিকল
১. ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার
আমরা প্রায়ই সাধারণ সমস্যায় ফার্মেসি থেকে ব্যথানাশক ওষুধ কিনে খাই। যেমন আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসপিরিন। এসব ওষুধ বেশি পরিমাণে বা অনেক দিন ধরে খেলে কিডনির ভেতরের ছোট নালিগুলোর ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা বয়স্ক বা যাঁদের আগে থেকেই কোনো রোগ আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এসব ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়। এ ধরনের ওষুধ কিডনির রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দেয়। যদি ব্যথা কমাতে হয়, তাহলে কম ডোজের ওষুধ এবং অবশ্যই অল্প সময়ের জন্য খাবেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেলে।
২. যথেষ্ট পানি না খাওয়াকিডনির প্রধান কাজ হলো পানির সাহায্যে শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া। পানি কম খেলে কিডনি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। গরমের দিনে পানি না খেলে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তখন প্রস্রাব ঘন ও গাঢ় হয়ে যায় এবং তাতে খনিজ উপাদান ও বর্জ্যের মাত্রা বেড়ে কিডনিতে পাথর বা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। তাই প্রতিদিন অন্তত দেড় থেকে দুই লিটার বা ছয়-আট গ্লাস পানি খাওয়া ভালো। অবশ্য গরমের দিনে বা ব্যায়াম করার সময় আরও বেশি পানি খাওয়া ভালো। তবে হৃদ্রোগ বা লিভারের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি খেতে হবে।
আরও পড়ুনডাবের পানি কিডনির জন্য উপকারী হলে কিডনি রোগে খেতে নিষেধ করা হয় কেন২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪৩. অতিরিক্ত মদ্যপানঅ্যালকোহল আমাদের শরীরকে পানিশূন্য করে ফেলে। ফলে কিডনির স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয়। বেশি অ্যালকোহল পান করলে রক্তচাপও বেড়ে যায়। এটা কিডনির জন্য ক্ষতিকর। আমরা জানি, অ্যালকোহল লিভারের ক্ষতি করে। লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেই চাপ পড়ে কিডনির ওপর। তাই অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকাই ভালো।
৪. ধূমপান করাধূমপান করলে ফুসফুসের সঙ্গে কিডনিরও ক্ষতি হয়। সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকা বিষাক্ত পদার্থ কিডনির কোষগুলোকে সরাসরি আঘাত করতে পারে। এ ছাড়া ধূমপাপের ফলে রক্তনালিগুলো সরু হয় এবং কিডনিতে রক্ত চলাচল কমিয়ে দেয়। ফলে কিডনি ঠিকভাবে করতে পারে না। ধূমপান ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও বাড়ায়। এই দুটি রোগই কিডনির ক্ষতির অন্যতম কারণ। তাই ধূমপান ত্যাগ করা সবচেয়ে ভালো।
৫. অতিরিক্ত ওজনযাঁদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, তাঁদের কিডনি রোগের ঝুঁকি বেশি। অতিরিক্ত ওজন হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগ ডেকে আনে। এতে কিডনির কার্যকারিতা কমে যায়। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কিডনির স্বাভাবিক কাজে বাধা দিতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। পেটের চর্বি বাড়াও কিডনির জন্য ক্ষতিকর। বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) অনুযায়ী ১৮.৫–২৪.৯–এর মধ্যে স্কোর থাকলে তা স্বাস্থ্যকর ধরা হয়। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া এবং ব্যায়াম করলে ওজন কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে পাঁচ দিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁট বা হালকা দৌড়ানো কিডনির জন্য উপকারী।
আরও পড়ুনআপনার কিডনি কি সুস্থ আছে১৩ মার্চ ২০২৫৬. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসঅতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার, যেমন ফাস্ট ফুড বা কোমল পানীয় কিডনির জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। এমনকি বেশি লবণ খাওয়াও বিপজ্জনক। ফাস্ট ফুডে প্রচুর লবণ, চিনি, ক্ষতিকর চর্বি ও রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে। বেশি লবণ খেলে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং রক্তচাপ বাড়ে। আর আগেই বলেছি, রক্তচাপ বাড়া কিডনির জন্য ক্ষতিকর। প্রতিদিন ৬ গ্রামের (এক চা চামচ) বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়।
৭. পর্যাপ্ত না ঘুমানোঘুমের অভাবেও কিডনির সমস্যা হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা প্রতিদিন ৬ ঘণ্টার কম বা ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমায়, তাঁদের দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তাই বেশির ভাগ মানুষের জন্য প্রতিদিন ৭–৯ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের শরীরকে বিশ্রাম দেয় এবং কিডনিকেও ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। অনিদ্রা বা বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়ার মতো ঘুমের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এসবের বাইরেও বয়স বা বংশগত ইতিহাস আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তবুও আমরা এসব বভ্যাস ত্যাগ করতে পারলে কিডনি সুস্থ রাখা সম্ভব।
সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট ও দ্য কনভারসেশন
আরও পড়ুনকিডনি ভালো রাখবে সকালের এই ৫ অভ্যাস০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫