Samakal:
2025-04-13@03:25:04 GMT

কাটা হাত দেখে এগিয়ে মিলল ৩ লাশ

Published: 12th, April 2025 GMT

কাটা হাত দেখে এগিয়ে মিলল ৩ লাশ

রাস্তার পাশে ইট-সুরকির স্তূপ থেকে একটি কাটা হাত বের হয়ে ছিল। সেখানে ছড়াচ্ছিল দুর্গন্ধ। হাতটি দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেন এক পথচারী। এর পর ঘটনাস্থলে গিয়ে ইট-সুরকি সরিয়ে বস্তা ও কাপড় দিয়ে মোড়ানো তিনটি অর্ধগলিত খণ্ডবিখণ্ড লাশ দেখতে পায় পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকা থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত তিনজন একই পরিবারের। তারা হলেন– পোশাককর্মী লামিয়া আক্তার (২২), তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ লাবিব (৪) ও বড় বোন মানসিক ভারসাম্যহীন স্বপ্না আক্তার (৩৫)। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে লামিয়ার স্বামী মো.

ইয়াসিনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, মিজমিজির পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকার আখতার হোসেনের বাড়ির পেছনে সড়কের পাশের ইট-সুরকির ভেতরে লাশ তিনটি চাপা দেওয়া ছিল। লামিয়ার মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল। স্বপ্নার দুই পা হাঁটু থেকে এবং দুই হাত ও মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। দুই বোনের লাশ ছিল একসঙ্গে পেঁচানো, আরেকটি বস্তায় ছিল আব্দুল্লাহর লাশ। শিশুটির শরীর অক্ষত। তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
পুলিশের ধারণা, কয়েক দিন আগে তাদের হত্যার পর লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে সিমেন্টের বস্তা ও কাপড় পেঁচিয়ে ইট-সুরকির নিচে চাপা দিয়ে রাখা হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

নিহতের স্বজন জানান, যেখানে লাশ পাওয়া গেছে, সেখান থেকে আনুমানিক ২৫ গজ দূরে একটি ঘর ভাড়া করে পরিবার নিয়ে থাকতেন ইয়াসিন। তাঁর স্ত্রী লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার একটি পোশাক কারখানার কর্মী। ইয়াসিন এলাকার বাসাবাড়িতে চুরি এবং মাদক সেবন করেন। লামিয়ার কাছে মাঝেমধ্যেই টাকা দাবি করতেন তিনি। কিন্তু লামিয়া যা আয় করতেন, তা সংসার চালাতেই শেষ হয়ে যেত। বেকার ইয়াসিন টাকা চেয়ে না পেয়ে স্ত্রীকে মারধর করতেন। লামিয়ার প্রতিবন্ধী বোন স্বপ্না তাঁর কাছে থাকতেন। স্বজনের অভিযোগ, ইয়াসিন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। 
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকাল থেকে ইয়াসিনকে ঘটনাস্থলের আশপাশে ঘুরতে দেখেন এলাকাবাসী। লাশ উদ্ধারের সময়ও তিনি ছিলেন। লামিয়ার বোন মুনমুন ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিচয় শনাক্ত করেন। তখন এলাকাবাসী ইয়াসিনকে ধরে পুলিশে দেন। তার বাবার নাম মো. দুলাল। তাদের পৈতৃক বাড়ি ছিল মিজমিজি পশ্চিমপাড়ায়। তবে বাড়িটি তাঁর বাবা বিক্রি করে দিয়েছেন। এ কারণে ১ এপ্রিল একই এলাকার আখতার হোসেনের বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নেন ইয়াসিন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) তারেক আল মেহেদী জানান, হত্যায় জড়িত সন্দেহে ইয়াসিনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। 
নিহত স্বপ্না ও লামিয়ার খালা শিরিন বেগম বলেন, ‘আমার বোনের মেয়েরা বাবা-মাহারা। লামিয়া প্রেম করে বিয়ে করেছিল। স্বপ্না মানসিক ভারসাম্যহীন। চার দিন তাদের খোঁজ পাচ্ছিলাম না। বাসায় তালা দেওয়া ছিল। আজ (শুক্রবার) এসে দেখি তিনজনের লাশ। লামিয়ার স্বামী বখাটে ও মাদকাসক্ত। তাদের প্রায় সময়ই ঝগড়াঝাঁটি হতো।’ 
মুনমুন জানান, ইয়াসিন ঈদের তিন দিন আগে কারাগার থেকে মুক্তি পান। তিনি মাদকাসক্ত এবং মাদক ব্যবসায় জড়িত। হত্যাকাণ্ডের জন্য ইয়াসিনকে দায়ী করছেন মুনমুন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, ইয়াসিন ছিঁচকে চোর ও মাদকাসক্ত হিসেবে চিহ্নিত। লামিয়ার কাছে তিনি প্রায়ই টাকাপয়সা চাইতেন। টাকা না দেওয়ায় তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। এর জেরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইয়াসিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

নিখোঁজ মাঝির লাশ উদ্ধার
কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, কর্ণফুলী নদীতে নিখোঁজের পরদিন জাবেদ আহমেদ নামে এক মাঝির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার নদীর বোয়ালখালী হামির চর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। জাবেদ কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত শরীফ আলীর ছেলে। বুধবার সন্ধ্যায় জাহাজের সঙ্গে নোঙর করা ইঞ্জিনচালিত কাঠের নৌকা ছুটে গেলে সেটি আটকাতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ডুবে যান জাবেদ। 

ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী নিহত
বরিশাল ব্যুরো জানায়, নগরে ছুরিকাঘাতে মাসুদুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, গত বুধবার রাতে প্রেমিকা কৌশলে তাঁকে বাসায় ডেকে নিয়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তির পর শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
মাসুদুর নগরের নতুন বাজার টেম্পো স্ট্যান্ড এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, বুধবার রাতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মাসুদুরের প্রেমিকা ও দুই ভাইকে আটক করে। কেউ অভিযোগ না দেওয়ায় পরদিন তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযাগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল শ উদ ধ র শ ক রব র এল ক র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ভয়ে স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে থানায় তরুণ

প্রেমের সম্পর্কের জেরে পরিবারের অসম্মতিতে পালিয়ে বিয়ে করেন শাকিল হোসেন (২৪) ও মিতা খাতুন। দুজনের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারায় হলেও বিয়ের পর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে থাকতেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে তিন দিন আগে ‘আত্মহত্যা’ করেন মিতা। রূপগঞ্জ থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত করে শাকিলের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে মিতাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে দেন শাকিল। এ ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ‘মারধরের ভয়ে’ স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গ্রামে না গিয়ে বাগমারা থানায় যান শাকিল। পরে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে লাশ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।

আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহীর বাগমারা থানায় এ ঘটনা ঘটেছে। মারা যাওয়া মিতা খাতুন (১৮) উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে। পুলিশি হেফাজতে থাকা শাকিল হোসেন একই ইউনিয়নের ভটখালী গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের সাত মাস বয়সী একটি শিশুসন্তান আছে। পেশায় এক্সকাভেটরচালক (খননযন্ত্র) শাকিল পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বসবাস করতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে বাগমারা থানায় ঢোকে লাশবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স। এ সময় শাকিল নামের এক তরুণ পুলিশকে জানান, অ্যাম্বুলেন্সে তাঁর স্ত্রীর লাশ আছে। তিন দিন আগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে এবং নারায়ণগঞ্জে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন এমন আশঙ্কায় তিনি লাশ নিয়ে থানায় আসেন।

পুলিশ ও স্বজনেরা জানান, তিন বছর আগে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্কের জেরে পালিয়ে বিয়ে করেন মিতা ও শাকিল। বিয়ের পর তাঁরা নারায়ণগঞ্জে চলে যান। সেখানে এক্সকাভেটর চালাতেন। পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রী ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (টিকটক) পোস্ট করতেন। গত মঙ্গলবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। এর জেরে স্ত্রীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে মিতা গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেন। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় শাকিল একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। পরে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল লাশ হস্তান্তর করা হয়। খবর পেয়ে নিহত মিতার স্বজনেরা গতকাল লাশ আনতে নারায়ণগঞ্জে গিয়ে ফিরে আসেন। তার আগেই লাশ নিয়ে সটকে পড়েন শাকিল।

মিতার বাবা জালাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘জামাই এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। এই কারণে মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয় বলে জানতে পেরেছি। তাঁর মেয়েকে মেরে ফেলে লাশ জানালার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়েছে। লাশটি বাগমারা থানায় আছে জানার পর আজ থানা থেকে লাশ নিয়ে এসেছি।’ শাকিলকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

অভিযুক্ত শাকিল পুলিশি হেফাজতে থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শাকিলের বরাত দিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিতা আত্মহত্যা করেছে বলে সে (শাকিল) জানিয়েছে। লাশ হস্তান্তর করতে দেরি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে কিছু লোক তাঁকে অনুসরণ করছিল, এই ভয়ে লাশ নিয়ে গোপনে চলে এসেছে।’ তিনি বলেন, দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে মেয়ে পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে লাশ দাফনের জন্য মেয়ের বাবার কাছে দেওয়া হয়েছে। শাকিল এখনো (বেলা তিনটা) পুলিশি হেফাজতে আছে। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

স্থানীয় যোগীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম জানান, শাকিল ও মিতা পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করার পর নারায়ণগঞ্জে থাকতেন। দাফনের জন্য লাশ বাগমারা থানা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন দাফনের প্রক্রিয়া চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরিকল্পনাতেই নেই ওভারপাস
  • ফতুল্লার পানি ও মাদকের সমস্যার সমাধান করবে বিএনপি : দিপু ভূঁইয়া
  • ৫ নয় ৫০ বছর থাকুন, আগে নির্বাচিত হয়ে আসুন : রাজীব
  • সোনারগাঁয়ে নিখোঁজের ছয় দিন পর বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার
  • সোনারগাঁয়ে নিখোঁজের ৫ দিন পর বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার
  • সিদ্ধিরগঞ্জ পশ্চিম থানা জামায়াতের উদ্যোগে ঈদ পূর্নমিলনী অনুষ্ঠিত 
  • ইসলামের শ্বাশ্বত আদর্শই মানবতার মুক্তির গ্যারান্টি : মমিনুল হক  
  • ফিলিস্তিনে ইসরায়েল এর হামলা ও জাতিসংঘের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদে বিক্ষোভ  
  • শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ভয়ে স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে থানায় তরুণ