Samakal:
2025-04-14@07:31:15 GMT

দেয়াল ছাড়া কিছুই অক্ষত নেই

Published: 11th, April 2025 GMT

দেয়াল ছাড়া কিছুই অক্ষত নেই

সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নেতাকর্মীর পদচারণায় মুখর থাকত। এখন সেখানে আবর্জনা আর ইটের স্তূপ। অনেকে ব্যবহার করেন শৌচাগার হিসেবে। মলমূত্র জমে থাকায় উৎকট গন্ধ আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানে প্রবেশ করা দূরের কথা, দুর্গন্ধে সামনে দিয়ে হেঁটে পার হওয়াও যেন দুষ্কর। 
খুলনার বৈকালী মোড় ও আড়ংঘাটা বাজারে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দুটি কার্যালয়ের বর্তমান চিত্র এটি। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভবন দুটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আসবাব ও জানালা-দরজা খুলে নিয়ে যাওয়ায় ধ্বংস্তূপে অবশিষ্ট আছে শুধু ইটের দেয়াল।
শুধু এ দুটি কার্যালয়ই নয়; গণঅভ্যুত্থানের পর এখন অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে খুলনা আওয়ামী লীগের ছোটবড় শতাধিক কার্যালয়। গত ৮ মাস দলীয় কার্যালয়ের ধারেকাছেও যাননি নেতাকর্মীরা। 
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব মো.

বাবুল হাওলাদার বলেন, আগস্টে ছাত্র-জনতা পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান। এ 
পরিস্থিতি থেকে সব রাজনৈতিক দলেরই শিক্ষা নেওয়া উচিত।
 ৪ আগস্ট নগরীর শঙ্খ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। হামলা হয় পরের দিনেও। ইটের দেয়াল ছাড়া কিছুই অক্ষত নেই। ধ্বংসস্তূপে পরিণত কার্যালয়টি এখনও সেভাবে পড়ে আছে। সিঁড়ির মুখে গেটটিতে কে বা কারা তালা লাগিয়ে রেখেছে। 
রেলওয়ে এলাকায় পানির ট্যাঙ্কের পাশে ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়, ৬ নম্বর ঘাটে গ্রীনল্যান্ড আবাসন ইউনিট কার্যালয় ও জাতীয় রিকশা ভ্যান শ্রমিক লীগ কার্যালয়, ৭ নম্বর ঘাটে রুজভেল্ট জেটি জাতীয় শ্রমিক লীগ কার্যালয়, জোড়াগেট ইউনিট ট্রাক টার্মিনাল শাখা কার্যালয়, জোড়াগেট রেললাইনের পাশে ২১ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক লীগের কার্যালয়, খালিশপুরে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়, খালিশপুর নয়াবাটি এলাকায় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াবাটি ইউনিট কার্যালয় এখন অস্তিত্বহীন। 
ডুমুরিয়া বাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে থাকা ২৩টি কার্যালয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। 
আত্মগোপনে থাকা ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ হোসেন জোয়াদ্দারের সঙ্গে কথা হয় হোয়াটসঅ্যাপে। তিনি বলেন, হামলা-মামলার ভয়ে নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে। কেউ কেউ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। বর্তমানে ডুমুরিয়ার কোথাও আওয়ামী লীগের কোনো কার্যালয় অক্ষত নেই।
উত্তাল আগস্টে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভাড়া করা ভবনের কার্যালয়টি। ৬ মাস পর কার্যালয়টির সামনের দেয়ালে ‘কিছুক্ষণ আড্ডা ক্যাফে অ্যান্ড মিনি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট’ নামে সাইনবোর্ড টানানো হয়। ভাঙচুরের পর মেরামত করে ইসরাফিল হোসেন নামের একজনের কাছে ভাড়া দিয়েছেন বাড়ির মালিক। 
ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল ফুলতলা বাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বেজেরডাঙ্গা এলাকায় ফুলতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়। ফুলতলা বাজারের কার্যালয়ের জায়গায় দিদারুজ্জামান মোল্লা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান করেছেন। তাঁর দাবি, জোর করে তাঁর জমিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয় করা হয়েছিল। 
রূপসা উপজেলার সামন্তসেনা এলাকায় অবস্থিত কার্যালয়ও ভাঙচুর করা হয়। এ কার্যালয়ের দেড় শতাধিক চেয়ার ও ৫টি সিলিং ফ্যান লুট করার পর আগুন দেওয়া হয়। দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটী পিপলস ঘাট ও চন্দনী মহলে আওয়ামী লীগের দুটি কার্যালয়টিও এখন অস্তিত্বহীন। একই অবস্থা পাইকগাছা উপজেলা সদরের। ভাঙচুরের পর বটিয়াঘাটা উপজেলা সদরের কার্যালয়টির শুধু ইটের অবকাঠামো অবশিষ্ট রয়েছে। ব্যতিক্রম শুধু দাকোপ ও তেরখাদা উপজেলায়। এ দুটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের কোনো কার্যালয় কেউ ভাঙচুর না করলেও গত ৮ মাস ধরে সেগুলো তালাবদ্ধ। দলের নেতাকর্মীরা কেউ সেখানে যাওয়ার ‘দুঃসাহস’ দেখাচ্ছেন না।
খুলনা মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশের দু’জন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কোনো কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় কেউ অভিযোগ 
করেনি। অভিযোগ করবে কে? দলটির কেউ কি প্রকাশ্যে আছেন?

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ত কর ম র ক র য লয়ট হয় ছ ল এল ক য় আগস ট আওয় ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

হুমকি না থাকলেও বর্ষবরণে সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশে পালিত হচ্ছে বাংলা নববর্ষ। এ উৎসবকে ঘিরে কোনো ধরনের হুমকি না থাকলেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 

সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী রাইজিংবিডিকে এ তথ্য জানান। 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা বটমূলসহ পুরো ঢাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকার প্রধান সড়ক থেকে অলি গলিতেও গোয়েন্দা নজরদারি করছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।”

এদিকে, প্রতিবারের মতো এবারও নববর্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে সারা দেশে র‌্যাবের সব সদস্য নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় কাজ করছেন। 

সকালে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “র‌্যাব সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হচ্ছে।”

তিনি জানান, র‌্যাব সারা দেশে ২২৪টি পিকআপ টহল, ১২২টি মোটরসাইকেল টহলসহ সর্বমোট ৩৪৬টি টহল ও সাদা পোশাকে ৪১৩ জন সহ সর্বমোট ২৪৪৯ জন র‌্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোন উগ্রবাদী গোষ্ঠী, অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠন এবং রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী কুচক্রী মহল যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। 

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে কোনো ধরণের নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবুও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার জগতে মনিটরিং বৃদ্ধির মাধ্যমে নাশকতাকারীদের যেকোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত রয়েছে র‌্যাব।”

ভার্চুয়াল জগতে নববর্ষকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের গুজব, উস্কানিমূলক তথ্য, মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য র‌্যাব সাইবার মনিটরিং টিম নজরদারি অব্যাহত রেখেছে বলেও তিনি জানান।

ঢাকা/এমআর/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ