সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করা যাবে না: নুরুল হক
Published: 11th, April 2025 GMT
নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে প্রত্যাশা করেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেন, অযথা নির্বাচন আগে না সংস্কার আগে; নির্বাচন পরে না সংস্কার পরে—এই বিতর্কের দরকার নেই। রাষ্ট্র সংস্কার করেই নির্বাচন হবে, এটাই এই সরকারের ম্যান্ডেট। সংস্কারের লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংস্কার কমিশনগুলোর আলাপ-আলোচনা চলবে। সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করা যাবে না। সংস্কার ও নির্বাচন সমান্তরালে চলছে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল হক এ কথাগুলো বলেন। সিঙ্গাইর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গণ অধিকার পরিষদের উপজেলা শাখা এই জনসভার আয়োজন করে।
নুরুল হক বলেন, ‘নির্বাচন কীভাবে হবে, ক্ষমতার পালাবদল কীভাবে হবে, তার একটি শান্তিপূর্ণ পথ বের করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য জাতীয় পরিষদ গঠনের কথা আমরা বলেছি। সেই পরিষদের সদস্য হবেন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, জাতীয় সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার। তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে কারা আসবেন, নির্বাচন কমিশনে কে নিয়োগ পাবেন, পুলিশপ্রধান কে হবেন। আমরা বলেছি জাতীয় সংসদ নির্বাচন চার বছর পর পর হোক। একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান ও সরকারপ্রধান হতে পারে না।’
সংস্কারের পক্ষে মত দিয়ে নুরুল হক বলেছেন, ‘রোজা মুসলমানদের আত্মশুদ্ধির মাস, জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কারের জন্য আমরা যে সময় পাচ্ছি, তা রাজনীতিবিদদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও আত্মসংযমের সময়। আত্মশুদ্ধি ও আত্মসংযমের মাধ্যমে সামনে আমাদের নিজেদের উপস্থাপন করতে হবে।’
সিঙ্গাইর উপজেলা গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি আলামিন দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় জনসভায় আরও বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলামী আন্দোলনকে বাইপাস করে সংসদে যাওয়ার সুযোগ নেই: যশোরে চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, ‘ইসলামী নামের দলকে বিভিন্ন সময়ে বোকা পেয়ে ধোঁকা দিয়ে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতার মসনদে গিয়ে আমাদের বারবার প্রতারিত করেছে। এখন যাঁরা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, তাঁদের বলতে চাই, ইসলামী আন্দোলনকে বাইপাস করে (পাশ কাটিয়ে) সংসদে যাওয়ার সুযোগ নেই।’
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় যশোর ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। ‘ছাত্র–জনতার বিপ্লবে সংগঠিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার এবং ফিলিস্তিনে ইজরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যা বন্ধের’ দাবিতে যশোর জেলা ইসলামী আন্দোলন এই জনসভার আয়োজন করে।
জনসভায় সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘ক্ষমতার মসনদে গিয়ে দেশের টাকা পাচার করেছে, আমাদের মায়েদের বুক খালি হয়েছে। আমাদের গুম, খুন করা হয়েছে। এর পরিবর্তন আমাদের করতে হবে। গত ৫৩ বছর অনেক নিষ্পেষিত হয়েছি, আর হতে চাই না।’
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম আরও বলেন, ‘দল প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমাদের দলের একজনও সংসদে যায়নি। তার মানে কি আমাদের শক্তি নাই? আমাদের দল দুর্বল? কোনো ধান্ধাবাজদের সংসদের যাওয়ার কোনো সিঁড়ি হয়নি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আর হবেও না। আমরা আওয়ামী লীগের শাসনও দেখেছি, বিএনপির শাসনও দেখেছি, জাতীয় পার্টিকে দেখেছি। আপনাদের এখন ইসলামের শাসন দেখা বাকি। বিগত ৫৩ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তাই জনগণের ইচ্ছাকে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে চায় দেশের জনগণ।’
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন যশোরের সভাপতি আবদুল আলিম মিয়া। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনটির নায়েবে আমির হাফেজ মাওলানা আবদুল আউয়াল, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব হোসেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন যশোরের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল আলম, জয়েন্ট সেক্রেটারি এইচএম মহসিন, সহকারী সেক্রেটারি আবদুর রশিদ প্রমুখ।
বক্তব্য শেষে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ঈদগাহ মোড় থেকে বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে মনিহার স্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়।