ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জাসদ। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ সমাবেশ হয়।

সমাবেশে বক্তারা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তাঁরা দেশব্যাপী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আড়ালে দৃষ্কৃতকারীদের বিভিন্ন ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাট, ভাঙচুর ও রাহাজানির প্রতিবাদ জানান। এই সুযোগসন্ধানীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান বাংলাদেশ জাসদের নেতারা।

ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে গোটা বিশ্বে ক্ষোভ ও ঘৃণার ঝড় বয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের জাতিগত নিধন অভিযান সভ্যতার সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এর পেছনে রয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোর সক্রিয় সমর্থন।

সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ জাসদের নেতারা দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তি, পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জুলাই–আগস্টের গণহত্যার বিচার, ফ্যাসিবাদ ও বৈষম্য নিরসনে সংস্কার শেষে দ্রুততম সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

বাংলাদেশ জাসদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি আবদুস সালাম খোকন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা.

মুশতাক হোসেন, করিম সিকদার, আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, রোকনুজ্জামান রোকন, এ টি এম মহব্বত আলী, রফিকুল ইসলাম খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শাজাহান আলী সাজু, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক এ এফ এম ইসমাইল চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান মুরাদ, মহানগর উত্তর শাখার যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ সেতু, মহানগর দক্ষিণ শাখার যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) কেন্দ্রীয় সভাপতি গৌতম চন্দ্র শীল।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বাংলাদেশ জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে সমাপ্ত হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাইব্যুনালে ৩৩৯ অভিযোগ, ২২ মামলায় গ্রেপ্তার ৫৪

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ৩৩৯টি অভিযোগ জমা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ২২ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৪১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭০ বেসামরিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৬২ ও ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন। ইতোমধ্যে ৫৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা, আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো, চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ড ও রামপুরায় ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা ব্যক্তিকে গুলি করা মামলায় তদন্ত শেষ পর্যায়ে। শিগগির এগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে।

তাজুল ইসলাম বলেন, মামলা তদন্তের স্বার্থে এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এক হাজারের বেশি মানুষের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। পরোয়ানা জারির পরও ৮৭ আসামি পলাতক।

তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড, সুপিরিয়র কমান্ড, সরাসরি সম্পৃক্ত এবং যাদের কারণে রাষ্ট্র এমন হয়েছে, তাদের আগে বিচার করতে চাই। আমরা ভুক্তভোগীদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বিচার কার্যক্রমে গতি আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের বেশ কিছু ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটি হতে পারে। যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। কবে নাগাদ বিচার শুরু করা যাবে– প্রশ্নে তিনি বলেন, সময় বেঁধে দিয়ে বিচার করা যাবে না। সেটি যুক্তিযুক্তও নয়।

মতবিনিময়ের শুরুতে তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেড়-দুই হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। ২৫ হাজারের মতো ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন। সব ঘটনার জলজ্যান্ত প্রমাণ রয়েছে। ট্রাইব্যুনালে আমরা সেটি প্রমাণ করতে সক্ষম হবো এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোপন বন্দিশালা থেকে টাইম বোমা উদ্ধার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমিসহ গুমের মামলার তদন্তে যাওয়া দলের সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে টাইমার বোমা রাখা হয়েছিল। তবে ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত যেন ফাঁস না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, গুমের বিষয়ে আমরা উত্তরায় একটা বড় বন্দিশালায় তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক কিছু আমরা আবিষ্কার করেছি। টাইমার বোমা দেখেছি। হয়তো এ বোমা রাখা হয়েছিল তদন্তকারী দলকে হত্যার পরিকল্পনা থেকে। আমাদের পরিদর্শনের ঠিক দু’দিন পর সেখানে প্রধান উপদেষ্টার পরিদর্শন করার কথা ছিল। তিনি অন্য জায়গায় গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেন।

মতবিনিময় সভায় প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণহত্যার প্রতিবাদ জানাতে রাজধানীতে জনতার ঢল
  • গণহত্যার প্রতিবাদে সরব বাংলাদেশ
  • গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন দাবি
  • ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বরিশালে বিক্ষোভ 
  • ইসলামী আন্দোলনকে বাইপাস করে সংসদে যাওয়ার সুযোগ নেই: চরমোনাই পীর
  • গাজায় গণহত‌্যা: জিএম কা‌দে‌রের নেতৃ‌ত্বে রাজধানী‌তে বি‌ক্ষোভ
  • ‘ইসরায়েলের পণ্য বর্জনের জিহাদ শুরু করতে হবে’
  • জুলাই হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড’ বলা কেন বিভ্রান্তিকর
  • ট্রাইব্যুনালে ৩৩৯ অভিযোগ, ২২ মামলায় গ্রেপ্তার ৫৪