তিন মাসের জন্য পাল্টা শুল্ক স্থগিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে বিশ্ববাজারে এক ধরনের স্বস্তি ফিরেছে। এশিয়ার শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপের বাজারও ঘুরে দাঁড়াবে- তেমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে শুরু করে বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ ঘটনায় একধরনের স্বস্তি এসেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও বিষয়টি স্বাগত জানিয়েছে। অর্থৎ সবাই আপাতত নির্ভার হয়েছে। 

এর আগে যেভাবে চীন মার্কিন পণ্যে প্রতিশোধমূলক শুল্ক এবং তার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যে শুল্কের হার বাড়িয়ে যাচ্ছিল, তাতে পৃথিবী নতুন এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। এর জেরে শেয়ারবাজারে ধস নামে, ডলারের বিনিময় হার কমে যায়, তেলের দাম চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। সামগ্রিকভাবে বাজার অর্থনীতিতে রীতিমতো কাঁপন শুরু হয়ে যায়। খবর বিবিসির

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশের পণ্যে যে পৃথকভাবে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, সেই শুল্ক স্থগিত হয়েছে ঠিক। কিন্তু এখনো বেজলাইন বা ন্যূনতম শুল্ক রয়ে গেছে। তার সঙ্গে সঙ্গে আছে আগের আরোপিত শুল্ক। সবচেয়ে বড় কথা, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীনের পণ্যে শুল্ক এখনো রয়ে গেছে। ফলে চীনের ব্যবসা-বাণিজ্য এখনই স্বাভাবিক হচ্ছে না।

এশিয়া অঞ্চলের অনেক দেশের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার চীন। এই দেশগুলো চীনের রপ্তানিমুখী শিল্পের সংযোগ শিল্প হিসেবে কাজ করে। এখন যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রপ্তানি কমে গেলে এসব দেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেই সঙ্গে চীন বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি আমদানিকারক। চীনের অর্থনীতিতে গতি না এলে জ্বালানি তেলের দাম আরও কমতে পারে। 

ট্রাম্পের হঠাৎ উল্টো পথে হাঁটার অন্যতম কারণ হলো বন্ডের সুদহার বেড়ে যাওয়া এবং বিক্রির চাপ বৃদ্ধি। মার্কিন বন্ডের সুদহার গতকাল ৪ দশমিক ৫ শতাংশে উঠে যায়। সেই সঙ্গে বিক্রির চাপ ফেড ও নীতিপ্রণেতাদের চিন্তায় ফেলে দেয়। এমনকি অর্ধশত বিলিয়ন ডলারের বন্ডের নিলামের নোটিশ পর্যন্ত দেওয়া হয়। সেটা হলে দেউলিয়া হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না। সম্ভবত এই চাপেই ট্রাম্প শেষমেশ নতি স্বীকার করেন। সেই সঙ্গে তার যা লক্ষ্য ছিল, সেটা তো হাসিল হয়েছ- ৭৫টির বেশি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে টেলিফোন আলাপ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা

কিশোরগঞ্জ শহরের আলোচিত পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে বর্তমানে আছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা। সর্বশেষ শনিবার দান বাক্সের টাকা রূপালী ব্যাংকে জমার পর পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিাটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। 

প্রতি তিন মাস বা তার কিছু বেশি সময় পরপর মসজিদের দান বাক্সগুলো খোলা হয়। তাতে প্রতিবারই কয়েক কোটি টাকা পাওয়া যায়। সর্বশেষ শনিবার ১১টি দান বাক্স খুলে মিলেছে ২৮ বস্তা টাকা। গণনা শেষে পাওয়া গেছে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। পাওয়া গেছে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার। 

সেনা সদস্য, পুলিশ ও আনসারের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মিলে মোট ৩৯৪ জন মানুষ টাকা গণনায় অংশ নেন। সব টাকা রূপালী ব্যাংকের হিসাবে জমা করা হয়েছে। বিদেশি মুদ্রা আর অলংকারের মূল্য নির্ধারণ করে সেসব টাকাও ব্যাংকে রাখা হবে।

জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেছেন, দান বাক্সে পাওয়া টাকার লভ্যাংশ থেকে অসহায় জটিল রোগীদের অনুদান দেওয়া হয়। মসজিদ কমপ্লেক্স মাদ্রাসার এতিম ছাত্রের সব খরচ, আনসার সদস্যদের বেতনসহ মসজিদ পরিচালনার যাবতীয় খরচও মেটানো হয়। জমানো টাকা থেকে পুরুষ ও মহিলাদের নামাজের আরও দুটি শেড নির্মাণ করা হবে। এছাড়া একটি আধুনিক পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। এর জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। ৬ তলা বিশিষ্ট নতুন মসজিদ কমপ্লেক্সে একসঙ্গে প্রায় ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ৫ হাজার নারী মুসল্লির জন্যও পৃথক ব্যবস্থা থাকবে।

কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম দিকে নরসুন্দা নদীর দক্ষিণ তীরে হারুয়া এলাকায় প্রায় পৌনে দুইশ’ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন মসজিদ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে ১৯৭৯ সাল থেকে। তখন থেকে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হন। সাধারণত পৌর মেয়ররা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ