মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের নিন্দায় চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
Published: 11th, April 2025 GMT
পয়লা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনের নিন্দা জানিয়েছে সাংস্কৃতিক সংগঠন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। তাদের দাবি, মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর দাবির কাছে নতজানু হয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অমঙ্গলকে দূর করে মঙ্গলের আহ্বান জানিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা নামকরণ করা হয়। ইউনেসকো ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সবকিছুতেই সাম্প্রদায়িকীকরণ করছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নও মুছে দিচ্ছে। তৌহিদি জনতার নামে মব তৈরি করে মাজার ভাঙচুর, ভাস্কর্য ধ্বংস, নারীর ওপর আক্রমণসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই। নেতারা হুঁশিয়ার দিয়ে বলেন, সমাজ-সভ্যতা পেছনের দিকে যাবে না। জনগণ এটা সহ্য করবে না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে চারুকলার ডিন বলেছেন, গেল সময়ে মঙ্গল শব্দটিকে এমনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, এটা নিয়ে যথেষ্ট খারাপ অনুভূতি কাজ করছে। এমন খোঁড়া যুক্তি কীভাবে দিতে পারে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আজ চৈত্র সংক্রান্তি
চৈত্র সংক্রান্তি বা চৈত্র মাসের শেষদিন আজ। বাংলা মাসের সর্বশেষ দিনটিকে সংক্রান্তির দিন বলা হয়। এছাড়াও আগামীকাল সোমবার পহেলা বৈশাখ, নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩২।
আবহমান বাংলার চিরায়িত বিভিন্ন ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে এই চৈত্র সংক্রান্তি। বছরের শেষ দিন হিসেবে পুরাতনকে বিদায় ও নতুন বর্ষকে বরণ করার জন্য প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান-উৎসবের আয়োজন। মনে করা হয়, চৈত্র সংক্রান্তিকে অনুসরণ করেই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের এত আয়োজন। তাই চৈত্র সংক্রান্তি হচ্ছে বাঙালির আরেক বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব।
চৈত্র সংক্রান্তির দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শাস্ত্র মেনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস করে থাকেন। নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী অন্য ধর্মাবলম্বীরাও নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন।
এছাড়াও চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে নানা ধরনের মেলা ও উৎসব হয়। হালখাতার জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, সংযাত্রা, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয় চৈত্র সংক্রান্তি।
চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক। চড়ক গাজন উৎসবের একটি প্রধান অঙ্গ। এ উপলক্ষে গ্রামের শিবতলা থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে অন্য গ্রামের শিবতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। একজন শিব ও একজন গৌরী সেজে নৃত্য করে এবং অন্য ভক্তরা নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব সেজে শিব-গৌরীর সঙ্গে নেচে চলে।
চৈত্র সংক্রান্তির মাধ্যমে পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে সোমবার সফলতা ও সমৃদ্ধির প্রত্যাশায় দেখা দেবে নতুন ভোর। পুরনো বছরের সব জরাজীর্ণতা মুছে ফেলে বাঙালি মিলিত হবে পহেলা বৈশাখের সর্বজনীন উৎসবে। জরাজীর্ণতা, ক্লেশ ও বেদনার সব কিছুকে বিদায় জানানোর পাশাপাশি সব অন্ধকারকে বিদায় জানিয়ে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার থাকবে গোটা জাতির।