সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে চাঁদাবাজরাই ক্ষমতায় আসবে: ফয়জুল করীম
Published: 11th, April 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, “স্বাধীনতার পর সব রাজনৈতিক দলকেই ক্ষমতায় দেখেছি, দেখেছি সবার দুর্নীতি। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি কেউই এর বাইরে নয়। দুর্নীতিতে বিএনপি পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এদেশে নির্বাচন করতে হলে আগে সংস্কার চাই। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে চাঁদাবাজরাই আবার ক্ষমতায় আসবে।”
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর বাস টার্মিনালে রায়পুর উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ফয়জুল করীম বলেন, “নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে জুলাই অভ্যুত্থানের রক্ত আজ বিফলের পথে। স্বাধীনতার এতো বছরেও জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি, মানবিক মর্যাদা শূন্যের কোটায়।”
তিনি আরো বলেন, “শাসকরা নিজেদের আঙ্গুল ফুলিয়ে কলাগাছ বানালেও কৃষক-শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ছাত্ররা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছে, অথচ শিক্ষাঙ্গন এখনো দলীয় ক্যাডারদের দখলে।”
ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, “আমরা ২০২৫-এর নতুন বাংলায় আর কোনো বৈষম্য দেখতে চাই না। ফ্যাসিবাদের কবর রচিত হোক অঙ্গীকার।”
আন্তর্জাতিক ইস্যুতে তিনি বলেন, “ফিলিস্তিন ও গাজায় বছরের পর বছর ধরে যে অমানবিক নির্মমতা চলছে, তা মানবতার জন্য এক কলঙ্কময় অধ্যায়। বিগত কয়েকদিনে হাজার হাজার নিরীহ নারী-শিশু হত্যা করা হয়েছে। এই দৃশ্য সহ্য করা যায় না। অবিলম্বে সেখানে হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ওআইসি ও আরব লীগসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”
সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি মাওলানা হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- দলটির লক্ষ্মীপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা মহিউদ্দীন, জেলা যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মোখলেছুর রহমান, ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মো.
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
১০ ছক্কায় অভিষেকের রেকর্ড গড়া ১৪১, এরপর চিঠি রহস্য
ব্যক্তিগত ২৮ রানের সময় আউট হয়েও বেঁচে গেলেন নো বলের কল্যাণে। একেই মনে হয় বলে চ্যাম্পিয়ন্স লাক! এরপর অভিষেক শর্মা আইপিএলকে উপহার দিলেন এক স্মরণীয় রাত। মাত্র ৪০ বলে সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর ৫৫ বলে খেললেন অবিশ্বাস্য ১৪১ রানের এক ইনিংস। যা আইপিএলের ইতিহাসে কোনও ভারতীয় ব্যাটসম্যানের আইপিএলে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস।
অভিষেকের বিস্ফোরক ইনিংসের কল্যাণে পাঞ্জাব কিংসের ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে করা ২৪৫ রানকে মামুলি মনে হলো। প্রায় আড়াইশ ছুঁইছুঁই রান তাড়া করতে নেমে ১৫ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (২৪৭/২)। যা আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার রেকর্ড। গত মৌসুমে (২৬ এপ্রিল, ২০২৪) ক্লকাতা নাইট রাইডার্সের দেওয়া ২৬১ রানের ইনিংস তাড়া করতে নেমে ৮ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে পাঙজাব জিতেছিল, যা আইপিএলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড।
আরো পড়ুন:
চেন্নাই প্লে’অফ খেলবে, দাবি ব্যাটিং কোচের
ধোনির অধিনায়কত্বেও ভাগ্য বদলালো না চেন্নাইর
গতরাতে রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ঝড় তোলেন পাঞ্জাবের দুই ওপেনার প্রিয়াংশ আর্য ও প্রভসিমরন সিং। দুজন মিলে করেন ৬৬ রান। ১৩ বলে ৩৬ রান করে আউট হন প্রিয়াংশ। এরপর দলীয় ৯১ রানে ফেরেন প্রভসিমরন। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ২৩ বলে ৪২। তবে পাঞ্জাবের হয়ে আসল ঝড়টা তোলেন শ্রেয়াস আইয়ার। ৩৬ বলে ৬ চার ও ৬ ছক্কায় করেন ৮২ রান। আর শেষ দিকে ১১ বলে অপরাজিত ৩৪ রান করেন মার্কাস স্টয়নিস।
জবাব দিতে নেমে অভিষেকের এই মহাকাব্যিক ইনিংস যেন এক রূপকথার মত প্রত্যাবর্তন। চলমান আসরে এই ২৪ বছর বয়সী ওপেনারের ব্যাট ঠিক হাসছিল না। তবে পাঞ্জাবের সাথে ঠিকই অভিষেক জানান দিলেন, হারিয়ে যাননি তিনি। ট্র্যাভিস হেডের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন। পাওয়ারপ্লে’র পর হেড যখন ছন্দে ব্যাট করছিলেন, তখন অভিষেক গিয়ার বদলে ঝড় তোলা শুরু করেন।
হেডের সঙ্গে ১৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন অভিষেক। যা হায়দরাবাদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওপেনিং পার্টনারশিপ। হেডের ৩৭ বলে ৬৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
এরপর অভিষেক ব্যক্তিগত প্রথম আইপিএল শতরানটি করেন মাত্র ৪০ বলে, যা আইপিএলের ইতিহাসে ষষ্ঠ দ্রুততম সেঞ্চুরি। কিন্তু তখনো চমকের বাকী ছিল। শতরান পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই, অভিষেক নিজের পকেট থেকে একটি সাদা কাগজ বের করে উপরে তুলে ধরেন, যেখানে হাতে লেখা ছিল, ‘এই ইনিংসটি কমলা আর্মিদের জন্য’। পাঞ্জাব অধিনায়ক শ্রেয়াসও সেই মুহূর্তে কাছে চলে আসেন বার্তাটি পড়তে।
অভিষেক প্রায় ২৫৭ স্ট্রাইক রেটে ১৪ চার ও ১০টি ছক্কায় তাঁর ইনিংসটি সাজান।
হায়দরাবাদের হয়ে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটিই। এর আগে ডেভিড ওয়ার্নারের ১২৬ ছিল চূড়ায়। আইপিএলের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। কেবল ক্রিস গেইল ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের আছেন সামনে।
টানা ৪ ম্যাচ হারার পর আসরে দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল হায়দরাবাদ। ৬ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে টেবিলের অষ্টম স্থানে আছে প্যাট কামিন্সের দল।
ঢাকা/নাভিদ