ভোট হচ্ছে না, সভাপতি-সম্পাদকসহ ২১ পদে বিএনপি-জামায়াত ‘ভাগাভাগি’
Published: 11th, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ২১টি পদের জন্য বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা ‘ভাগাভাগি’ করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ, বাধার মুখে তাঁরা মনোনয়নপত্র নিতে পারেননি। ফলে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হবে আগামীকাল শনিবার।
সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সব কটি পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আজ শুক্রবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। ১৬ এপ্রিল আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ভোট আর হবে না।
জানতে চাইলে মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা তারিক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ২১টি পদের জন্য ২১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। যাচাই-বাছাই করে এগুলো সঠিক পাওয়া গেছে। যেহেতু কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই, তাই আগামীকাল তাঁদের বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২১টি পদের মধ্যে ১৪টি পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। তাঁরা হলেন সভাপতি আবদুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কাজী মো.
আর বাকি সাতটি পদে জামায়াত–সমর্থিত প্রার্থীরা রয়েছেন। তাঁরা হলেন সহসভাপতি আলমগীর মোহাম্মদ ইউনুস, সহসম্পাদক ফজলুল বারী, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুল জব্বার এবং সদস্য শাহেদ হোসেন, হেলাল উদ্দিন, রোবায়তুল করিম ও মোহাম্মদ মোরশেদ।
জানতে চাইলে সভাপতি আবদুস সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইনজীবীদের কল্যাণ ও বারের দুর্নীতি রোধে কাজ করে যাব। রাজনীতি বারে আনব না।’
এদিকে গত বৃহস্পতিবার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মনোনয়নপত্র নিতে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামীপন্থী আইনজীবী সভাপতি প্রার্থী আবদুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ফখরুদ্দিন চৌধুরীসহ চারজন প্রার্থীর সই করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়, দুপুরে সমিতির পাঠাগার থেকে মনোনয়ন ফরম কেনার জন্য যান তাঁরা। ওই সময় তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। সেখানে আইনজীবীর পাশাপাশি কিছু বহিরাগতও ছিলেন। পরে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্যকে বলা হলেও তাঁরা কেউ মনোনয়ন ফরম কিনতে যাওয়া আইনজীবীদের সঙ্গে যাননি।
আওয়ামী লীগ–সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম বারের ইতিহাসে এ রকম ঘটনা কখনো ঘটেনি। এটি খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন পরিচালনায় গঠন করা কমিটির মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলায়মানসহ পাঁচ কর্মকর্তা একযোগে পদত্যাগ করেন। নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিএনপি ও জামায়াত-সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ এবং আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা।
পদত্যাগ করার কারণ হিসেবে চিঠিতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েনের জন্য নির্বাচন কমিশন ও জেলা আইনজীবী সমিতিতে আবেদন করে। অন্যদিকে বিএনপি ও জামায়াত জোট-সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ নির্বাচন কমিশন বরাবর আরেকটি আবেদন করে সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানায়।
১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতিতে পাঁচ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠিত হয়। দুই মাসের মধ্যে তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়। গত মঙ্গলবার জেলা আইনজীবী সমিতির তফসিল ঘোষণা করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত সমর থ ত সমর থ ত প র র থ আইনজ ব দ র কর মকর ত ত আইনজ ব র জন য ব এনপ সদস য আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ভুল টার্গেটে খুন আইনজীবী সুজন, গ্রেপ্তার ৫
মৌলভীবাজারে ভাড়াটে খুনিরা এক নিরাপত্তারক্ষীকে খুন করতে গিয়ে ভুলে আইনজীবী সুজন মিয়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এ ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– মূল পরিকল্পনাকারী নজির মিয়া ওরফে মুজিব (২৫), মো. আরিফ মিয়া (২৭), হোসাইন আহমদ সোহান (১৯), লক্ষ্মণ নাইডু (২৩) ও আব্দুর রহিম (১৯)।
পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে পুলিশ সুপার জানান, মূল পরিকল্পনাকারী মুজিবের সঙ্গে তার পাশের বাড়ির একটি ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড মিসবাহর পূর্বশত্রুতা ছিল। তাকে ‘শিক্ষা’ দিতে ভাড়াটিয়া খুনি নিয়োগ করে মুজিব। এ জন্য পূর্বপরিচিত লক্ষ্মণের মাধ্যমে অপর খুনিদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় এবং মুজিব মোবাইল ফোনে টার্গেটের (মিসবাহ) ছবি পাঠায়।
গত ৬ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে মৌলভীবাজার পৌরসভা এলাকার ফুটপাতে চটপটির দোকানের পাশে বসে থাকা অবস্থায় আইনজীবী সুজন মিয়াকে মিসবাহ ভেবে তাঁকে ভিডিও কলে দেখিয়ে নিশ্চিত করে খুনিরা। এরপরই চেয়ারে বসা অবস্থায় সুজন মিয়ার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ১০ থেকে ১২ জন দুষ্কৃতকারী।
এসপি বলেন, এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় নিহতের ভাই এনামুল হক সুমন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত বুধবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের পরিচয় উদ্ঘাটন করা হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, সদর মডেল থানার ওসি গাজী মো. মাহবুবুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি জাফর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।