আত্মপ্রকাশ করল নতুন দল গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি
Published: 11th, April 2025 GMT
আত্মপ্রকাশ করেছে গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দল। দলটির স্লোগান ‘এ লড়াই জাতীয় মুক্তি, সাম্য, গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার’।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে নতুন দলের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন এর চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মালেক ফরাজী।
অনুষ্ঠানে আব্দুল মালেক ফরাজী বলেন, ‘আমি দেশের প্রতি ভালোবাসা ও সচেতন নাগরিক হিসেবে, একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে, একজন স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে, একজন সমাজকর্মী হিসেবে মনে করছি, ড.
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা পৃথিবীর গর্ব বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ এখন নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে। ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে গত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে। সেখানে যে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে, আমরা পারতাম একটি বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে। একটি বিপ্লবী সরকার প্রজ্ঞাপন জারি ও সংবিধান বাতিল করে নতুন যুগের সূচনা করতে পারত। কিন্তু সেটা হয়ে ওঠেনি। কারণ আমাদের দুর্ভাগ্য যে সম্মিলিত শক্তির অভাব ছিল।’
অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তির যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল হোসেন খান দলের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। ঘোষণাপত্রে বলা হয়, চলমান পক্ষপাতিত্বের রাষ্ট্র ব্যবস্থার আমূল বদলে দেওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের অভিযাত্রায় নতুন রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তির আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করছি। নতুন রেনেসাঁ, নতুন গণজাগরণ, নতুন রাজনীতি ও মহান নেতৃত্ব সৃষ্টি করে আমাদের জাতি সুস্থ, স্বাভাবিক, সমৃদ্ধিশালী, শক্তিমান ও প্রগতিশীল হয়ে উঠবে। আমরা নানা ক্ষেত্রে সৃষ্টি হওয়া বহুস্তরবিশিষ্ট বৈষম্য দূর করে বাংলাদেশকে মানবিক উন্নয়নের প্রগতিশীল ধারায় স্থাপন করব।
দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাহিদ নিয়াজীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণআজাদী দলের সভাপতি মুহাম্মদ আতাউল্লাহ খান, অধ্যাপক দেওয়ান ইবনে সাজ্জাদ আফজাল খান, গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তির সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন জামাল প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত ক দল অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
জীবনে বহু কিছু করার পর ‘ধৈর্য-সহ্যে’ কপাল খুলছে গোলাম রসুলের
সবে সন্ধ্যা নেমেছে শহরের বুকে। খুলনা নগরের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাতে ছোট একটা দোকানের সামনে বেশ ভিড়। অর্ডার দিয়ে কেউ টুলে বসে আছেন, কেউ আবার প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছেন। বিক্রেতা দুজনের চার হাত যেন চলছে সমানতালে। একজন ছোট ছোট ফুচকা বানাচ্ছেন, তো আরেকজন ভেলপুরির প্লেট সাজাচ্ছেন। আবার কখনো একজন পেঁয়াজ–শসা কুচি করে নিচ্ছেন আর আরেকজন বিল রাখা বা টিস্যু এগিয়ে দেওয়ায় ব্যস্ত।
নগরের আহসান আহমেদ রোডের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের একটি ছোট ফুচকা ও ভেলপুরির ভ্রাম্যমাণ দোকানের চিত্র এটি। দোকানের নামটাও বেশ অন্য রকম। ‘ধৈর্য-সহ্য ছোট ফুচকা ও ভেলপুরি স্টোর’। দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান। এই দোকানের ছোট ফুচকা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গোলাম রসুলের বাড়ি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের পুরাতন ঘোষগাতী গ্রামে। সাত ভাই–বোনের সংসারে রসুলের বড় ভাই ভাজাপোড়া খাবারের ব্যবসা করতেন। বুঝতে শেখার পর থেকেই তাই এতেই হাতেখড়ি হয় রসুলের। তবে তাতে ঠিক পোষাচ্ছিল না। তাই বছর ৩০ আগে কিছু করার আশায় খুলনা শহরে আসেন গোলাম রসুল। তবে এই শহরে পুরোপুরি থিতু হতে পারেননি। নানা টানাপোড়েনে কখনো খুলনা, কখনো মোল্লাহাট, আবার কখনো ঢাকায় কেটেছে তাঁর সময়। ৪৮ বছরের এই জীবনে নানা রকম কাজ করেছেন। ব্যবসাও করেছেন অনেক কিছুর। তবে সেসব ব্যবসায় কেবল লোকসানই হয়েছে তাঁর। অবশেষে ‘ছোট ফুচকায়’ তাঁর কপাল খুলেছে।
কাজের ব্যস্ততার মধ্যেই কথা হয় গোলাম রসুলের সঙ্গে। রসুল বলেন, ‘আগে রিকশা চালাইছি। নানা রকম ব্যবসাও করছি। গ্রাম থেকে কিনে মাওয়া ফেরিঘাট আর ঢাকায় ডাব বেচছি। ওই ব্যবসায় অনেক মার খাইছি। মানুষ টাকা দেয় নাই। এখনো ৬০-৭০ হাজার টাকা পাব। ডাব ব্যবসায় মার খেয়ে দুই বছর আগে আবারও খুলনা শহরে আসি কিছু করা যায় কী না সেই জন্যি।’ খুলনা এসে আবারও রিকশার প্যাডেল ঘোরাতে থাকেন রসুল একই সঙ্গে মাথায় ঘুরতে থাকে চিন্তা। এরপর শীতের পিঠা বিক্রি শুরু করেন। শীত শেষ হতে আবারও অনিশ্চয়তা। এখন কী হবে!
গোলাম রসুল বলেন, ‘গরম চলে আসল, কী করব বুঝে পাচ্ছিলাম না। পরে খুলনার ৭ নম্বর ঘাট থেকে কিনে ভেলপুরি বেচছি। কিন্তু এতে হচ্ছিল না। এরপর চিন্তা করলাম আনকমন কিছু করা যায় কি না। গত বছরের কোরবানির ঈদের পর থেকে শুরু করি ছোট ফুচকা বিক্রি।’
দোকানটি চালান গোলাম রসুল নামের একজন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা-১০টা পর্যন্ত চলে এই ভ্রাম্যমাণ দোকান