পটুয়াখালীর বাউফলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।  বৃহস্পতিবার উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের মৈশাদি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গেছে, মৈশাদি এলাকায় বিএনপিকর্মী  মফিজ হাওলাদার সঙ্গে নওমালা ইউনিয়ন ওয়ার্ড শ্রমিক দল সভাপতি  হান্নান হাওলাদারের নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। বুধবার বিকেলে  ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মফিজ হাওলাদারকে মারধর করে হান্নান হাওলাদারের লোকজন। এই মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দুপুরে মফিজের স্ত্রীর বড় ভাই কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিনের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল হান্নানের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় হান্নানের স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে জহির ও তার সহযোগীদের সংঘর্ষ ঘটে। এক পর্যায়ে জহিরকে আটক করে পিটুনি দিয়ে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখে স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে বাউফল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জহিরসহ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়।

আহতদের মধ্যে জহির উদ্দিন (৬০), তাঁর ছেলে মো.

তানভীর (২৯) ও ফকরুল ইসলামকে (৪৫) বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া কবির হোসেন কিবরিয়া (৪৫) নামে একজনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিএনপি নেতা জহির উদ্দিনের ভগ্নিপতি মফিজুর হাওলাদারের ভাষ্য, তাঁকে মারধর করার বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে তাঁর স্বজনরা হান্নান হাওলাদারের বাড়িতে গেলে হান্নানের লোকজন তাদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে।

হান্নান হাওলাদারের স্বজন কবির হোসেন ও মো. হান্নান বলেন, মফিজুর অন্য এলাকার ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও মারধর করেছে। এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের পিটুনি দিয়ে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দিয়েছে।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, পুলিশ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম রধর ব এনপ ব উফল

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলের কালিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ফরিদ মোল্যা (৫০) নামে একজন নিহত হয়েছে। নিহত ফরিদ মোল্যা কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত সুরত মোল্যার ছেলে। 

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে। 

পুলিশ ও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদ মোল্যাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান। 

এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে বশির মুন্সি নামে আরেকজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।  

জানা যায়, উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ইতোপূর্বে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে  দু’পক্ষের মধ্যে। এ নিয়ে থানায় উভয়পক্ষের একাধিক মামলাও রয়েছে। ঈদের দিন থেকেই গ্রামটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। নিহত ফরিদ মোল্যা আফতাব মোল্যা গ্রুপের সমর্থক ছিলেন।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকালে মিলন মোল্যা পক্ষের সানোয়ার রহমান নড়াইল আদালত থেকে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে একা পেয়ে আফতাব মোল্যার লোকজন মারপিট করে। এ ঘটনার জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মিলন মোল্যা পক্ষের লোকজন আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে  উভয়পক্ষ স্কুল মাঠে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘণ্টাব্যাপি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। 

আফতাব মোল্যা পক্ষের আহতদের মধ্যে রয়েছেন- করিম মুন্সি (৪৯), হুসাইন শেখ (১৮), আশরাফ মোল্যা (৫০), বশির মুন্সি (৪৫), করিম মুন্সী (৩৭), জালাল মুন্সি (৪৭), নাহিদ মোল্যা (২৫), করিম মোল্যা (১৬), সহিদ মুন্সি (৪০)। 

মিলন মোল্যা পক্ষের দের মধ্যে রয়েছেন- তৌহিদ মোল্যা (৫০), আলমিস শেখ (৩৫) নিরব মোল্যা (১২), হাসিব মোল্যা (১৫), কিবরিয়া শেখ (২৮), ওসমান মোল্যা (১৫), কামাল কাজী (৪০), তরিক শেখ (২৪), জাকারিয়া শেখ (২৫) ও দিদার শেখ (১৮), হুমায়ন কাজী (৩৫), ওহাব কাজী (৪৫), পিয়ার মোল্যা (৩৪)। 

ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে কালিয়া থানায় হন্তান্তর করে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে  কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, “এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় আইনুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/শরিফুল/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় আহত ১২
  • গোপালগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় ইজিবাইকের যাত্রী নিহত, আহত আরো ৫
  • নড়াইলের কালিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
  • জুলাই ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাৎ, নাগরিক কমিটির নেত্রী কারাগারে