এএফপি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ববাণিজ্যে এগিয়ে কারা
বিশ্বের এক নম্বর রপ্তানিকারক দেশ চীন গত বছর ৩ হাজার ৫৭৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের পণ্য রপ্তানি করেছে। বাংলাদেশের এক বছরের রপ্তানি আয়ের তুলনায় যা প্রায় ৮০ গুণ। বাংলাদেশ গত অর্থবছরে মাত্র ৪৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। চীনের রপ্তানি আয় বিশ্বের মোট রপ্তানি আয়ের ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ। বাংলাদেশের অংশ মাত্র শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সম্প্রতি বিশ্ববাণিজ্যের হালনাগাদ পরিসংখ্যান এবং ভবিষ্যতের গতিপথ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের পরিসংখ্যান রয়েছে। ডব্লিউটিও মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপের প্রভাবে বিশ্ববাণিজ্যের আকার গত বছরের চেয়ে ২০২৫ সালে কমে যাবে। এর ফলে রপ্তানিমুখী স্বল্পোন্নত দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডব্লিউটিওর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের। তারা রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৬৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এত রপ্তানির পর যুক্তরাষ্ট্র বিশেষত ডোলাল্ড ট্রাম্প নাখোশ কেন? এ কারণে যে, তারা রপ্তানি যা করে, তার চেয়ে অনেক বেশি আমদানি করে। ২০২৪ সালে বিশ্বের শীর্ষ আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র। আমদানিতে দ্বিতীয় চীন।
চীনের সুবিধা হলো, তারা আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি করে। চীন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আমদানিকারক দেশ। তারা গত বছর আমদানি যা করেছে, তার চেয়ে রপ্তানি বেশি করেছে ৯৯০ বিলিয়ন ডলার। চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির দ্বিগুণেরও বেশি। গত অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির আকার ছিল ৪৫০ বিলিয়ন ডলার।
চীন বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে ঘাটতিতে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষেপে গিয়ে চীনসহ সব বাণিজ্য অংশীদারের ওপর বাড়তি যে শুল্ক আরোপ করেছেন, তার পেছনে এই বাণিজ্য ঘাটতি। যুক্তরাষ্ট্র গত বছর আমদানি করেছে ৩ হাজার ৩৫৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। তাদের ঘাটতি ১ হাজার ২৯৪ বিলিয়ন ডলার। এই ঘাটতি কমাতেই যুক্তরাষ্ট্র চায় রপ্তানি বাড়াতে এবং আমদানি কমাতে।
আমদানি কমানোর কৌশল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশ থেকে পণ্য আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক ধার্য করেছে। সবার ওপর বাড়তি ১০ শতাংশ ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। চীন বাদে বাকিদের ওপর দেশভিত্তিক বিভিন্ন হারে বর্ধিত শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত রেখেছে। তবে চীনের ওপর বাড়াতে বাড়াতে সর্বশেষ ২৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। অন্যদিকে চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ ধার্য করেছে।
বাণিজ্যে আরও যারা এগিয়ে
ডব্লিউটিওর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২৪ সালে রপ্তানিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জার্মানি, যার পরিমাণ ১ হাজার ৬৮৩ কোটি ডলার। রপ্তানির পরিমাণ অনুযায়ী শীর্ষ দশে আরও রয়েছে–নেদারল্যান্ডস, জাপান, কোরিয়া, ইতালি, হংকং, ফ্রান্স এবং মেক্সিকো। রপ্তানির মতো আমদানিতে তৃতীয় অবস্থানে জার্মানি। দেশটি গত
বছর আমদানি করেছে ১ হাজার ৪২৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এর পরে আমদানিতে শীর্ষ দশে রয়েছে যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, জাপান, হংকং, ভারত ও মেক্সিকো। দেখা যাচ্ছে, আমদানি এবং রপ্তানিতে শীর্ষ দশে থাকা দেশগুলো দু-একটি ব্যতিক্রম বাদে একই।