বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তিসহ সনাতনী সম্প্রদায়ের পূর্বঘোষিত ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সনাতন পার্টি।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ সনাতন পার্টির (বিএসপি) কর্মী সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অনিক রায় সনাতনী সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষা ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুরঞ্জন ঘোষ বলেন, হিন্দু সম্প্রদায় একচেটিয়া আওয়ামী লীগকে ভোট দিলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই বেশি লুটপাট ও দখল করছে।

বাংলাদেশ সনাতন পার্টির (বিএসপি) প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই আমরা নির্যাতিত ও নিপীড়িত। কোনও সরকারের আমলেই আমাদের সঠিক অধিকার দেয়া হয়নি। সনাতনীরাই সবসময় বিভিন্ন দলের ভোট ব্যাংক বা বলির পাঁঠা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি) নিবন্ধন পেলে সনাতনীরা আগামী দিনে কারো ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার হবে না এবং সনাতনী সম্প্রদায়কে বাদ দিয়ে কেউ ক্ষমতায় যেতে পারবে না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর নির্যাতন হলেও সব সরকার তা বারবার অস্বীকার করে, যা জাতি হিসেবে আমাদের খুব লজ্জাজনক। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন বন্ধে দ্রুত সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ সনাতন পার্টির (বিএসপি) সভাপতি আশিষ কুমার দাশ বলেন, সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর সংগঠিত নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। আগামী দিনে সনাতনী সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য রাজনৈতিক দলের কোনও বিকল্প নেই। তাই বাংলাদেশ সনাতন পার্টিকে (বিএসপি) শক্তিশালী করতে কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাই। নির্বাচন কমিশনকে বাংলাদেশ সনাতন পার্টিকে (বিএসপি) নিবন্ধন দিয়ে সনাতনী সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষা ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই।

সংগঠনটির সভাপতি আশিষ কুমার দাশের সভাপতিত্বে ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায়ের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ।

সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক অশোক তরু, মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কলামিষ্ট সুরঞ্জন ঘোষ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, সম্মিলিত সনাতন পরিষদের অ্যাড.

জিতেন বর্মন শ্যামল সরকার, বাংলাদেশ সনাতন পার্টির (বিএসপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংবাদিক শ্যামল কান্তি নাগ, অ্যাড. লিটন বণিক, প্রাণতোষ তালুকদার, মোহন সরকার, দিলিপ অধিকারী, অনিল সাধু, বাংলাদেশ সনাতন পার্টির (বিএসপি) চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক অজয় ভট্টাচার্য, নয়ন বিশংগ্রী, গৌরঙ্গ দে, বাংলাদেশ হিন্দু লীগের সাধারণ সম্পাদক শংকর, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি প্রদীপ কান্তি দে, রনি রাজবংশী, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাসংঘের পিষুস দাস, সনাতন সংগঠনের মিঠুন ভট্টাচার্য শুভ।

এছাড়াও সম্মেলনে বাংলাদেশ সনাতন পার্টির (বিএসপি) দপ্তর সম্পাদক সুজীৎ দাস, জয় চক্রবর্তী, বিকাশ অধিকারী, অমিত মালী, রাহুল, জয়পুর হাটের বন্ধন বাগচী, শায়ান বালা, জন্টু জয়ন্তসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপস থ ত ছ ল ন ব এসপ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাত বছর ধরে হেলিকপ্টার বানাচ্ছেন রাজমিস্ত্রী আরিফুল, তিন সপ্তাহের মধ্যে আকাশে ওড়ানোর স্বপ্ন

শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের মাটিয়ান গ্রামের রাজমিস্ত্রী আরিফুল ইসলাম হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। সাত বছর ধরে একটি হেলিকপ্টার তৈরি করায় এ নিয়ে এলাকায় তাঁকে নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে হেলিকপ্টার তৈরির কাজ শেষ করে তা আকাশে ওড়াতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন। 
  
আরিফুল মাটিয়ান গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেনের ছেলে। বাড়িতে ছোট্ট একটি ঘরের মধ্যে তৈরি হচ্ছে হেলিকপ্টার। আশেপাশে পড়ে রয়েছে নানা সরঞ্জাম। হেলিকপ্টার তৈরির স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে ২০১৮ সাল থেকে সাত বছর ধরে দৈনিক আয়ের কিছু অংশ থেকে সরঞ্জাম কিনে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন তিনি। এ পর্যন্ত তাঁর প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বাঁকি কাজ সম্পূর্ণ করতে আরও ৫০ হাজার টাকার দরকার বলে জানান তিনি। টাকার ব্যবস্থা হলে আগামী ২০ দিনের মধ্যে অবশিষ্ট কাজ শেষ করে হেলিকপ্টারটি আকাশে উড়াতে সক্ষম হবেন বলে জানান তিনি। 

মাটিয়ান গ্রামের জাকারিয়া জুয়েল বলেন, ছোটবেলা থেকে আরিফুল অনেক কিছু তৈরি করতেন। দরিদ্র আরিফুল তাঁর উপার্জনের টাকা দিয়ে সরঞ্জাম কিনে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। সরকারিভাবে কোনো সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু তৈরি করতে পারবেন। 

আরিফুলের স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, এক মেয়েকে নিয়ে অতি কষ্টে আমরা জীবনযাপন করি। আমার স্বামী তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে উপার্জনের টাকা ব্যয় করে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। এতে আমাদের কষ্ট হলেও আমরা খুশি।

কিচক ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন বলেন, হেলিকপ্টার তৈরির বিষয়টি আমি জেনেছি। আমরা তাঁর উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। 

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, হেলিকপ্টার তৈরি করায় আমরা তাঁকে সাধুবাদ জানাই। এ কাজে উৎসাহ যোগাতে প্রয়োজনে তাঁকে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে। হেলিকপ্টার দেখার জন্য প্রতিদিন তাঁর বাড়িতে শতশত মানুষ ভিড় জমাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ