বিদেশে থাকা সম্পত্তি ছয় মাসের মধ্যে জব্দ করা হবে :গভর্নর
Published: 11th, April 2025 GMT
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘ছয় মাসের মধ্যে বিদেশে পাচার করা সম্পদের বড় একটি অংশ জব্দ করা হবে। এ জন্য আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলছি। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থাকে চিঠি দিচ্ছি। বিদেশি আইনি সংস্থা বা ফার্মের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে, এ কাজে তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। এরই মধ্যে আমরা বেশ কিছু সম্পদ যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতাও পাচ্ছি। এই প্রক্রিয়ায় ছয় মাসের মধ্যে বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আজ শুক্রবার এ কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রম ও সমসাময়িক ব্যাংকিং নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেছেন, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ একেবারেই নতুন। এটি দেশের আইনে নয়, বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে করতে হবে। কোন দেশে কোথায় কী আছে, এ তথ্য আগে আনতে হবে। সম্পদ জব্দ করার পর আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
দেশে আগে মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে দেখানো হতো জানিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হতো। কিন্তু প্রকৃত খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। গত মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৮-৯ শতাংশে নেমে এসেছে। সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতি স্বস্তিদায়ক অবস্থানে আছে। আগামী বছর মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন গভর্নর।
সংবাদ সম্মেলনে গভর্নরের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চান, কী পরিমাণ অর্থ দেশ থেকে পাচার হয়েছে? জবাবে গভর্নর বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমার ধারণা, আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে বড় শিল্প গ্রুপ ও তাদের পরিবারও রয়েছে। বেক্সিমকোর পাচার হওয়ার অর্থের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো। এগুলো শুধু বড় গ্রুপের তথ্য। আপাতত ছোট ছোট গ্রুপের পাচারের তথ্য দেখছি না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সব বিষয় আদালতের মাধ্যমে নয়, আউট আব কোর্ট সেটেলমেন্ট বলে একটা কথা আছে। তার আগে সব তথ্য নিতে হবে। যখন সব তথ্য থাকবে, তখন তারা নেগোসিয়েশনে আসবে। নেগোসিয়েশনে যাওয়ার আগে সব তথ্য নিয়েই যেতে হবে। তা না হলে আমরা ঠকে যাব।’
অর্থ পাচারে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেকে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, ‘অমূলক তথ্যের ভিত্তিতে কাউকে চাকরিচ্যুত করার পক্ষে আমি নই। সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব। দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক ও রাষ্ট্রীয় কোনো গোয়েন্দা যদি তথ্য প্রমাণ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ জড়িত, তবে তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। এরই মধ্যে যাঁদের বিরুদ্ধে তথ্য আছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আহস ন এইচ মনস র ব যবস থ র বল ন
এছাড়াও পড়ুন:
১০ ছক্কায় অভিষেকের রেকর্ড গড়া ১৪১, এরপর চিঠি রহস্য
ব্যক্তিগত ২৮ রানের সময় আউট হয়েও বেঁচে গেলেন নো বলের কল্যাণে। একেই মনে হয় বলে চ্যাম্পিয়ন্স লাক! এরপর অভিষেক শর্মা আইপিএলকে উপহার দিলেন এক স্মরণীয় রাত। মাত্র ৪০ বলে সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর ৫৫ বলে খেললেন অবিশ্বাস্য ১৪১ রানের এক ইনিংস। যা আইপিএলের ইতিহাসে কোনও ভারতীয় ব্যাটসম্যানের আইপিএলে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস।
অভিষেকের বিস্ফোরক ইনিংসের কল্যাণে পাঞ্জাব কিংসের ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে করা ২৪৫ রানকে মামুলি মনে হলো। প্রায় আড়াইশ ছুঁইছুঁই রান তাড়া করতে নেমে ১৫ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (২৪৭/২)। যা আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার রেকর্ড। গত মৌসুমে (২৬ এপ্রিল, ২০২৪) ক্লকাতা নাইট রাইডার্সের দেওয়া ২৬১ রানের ইনিংস তাড়া করতে নেমে ৮ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে পাঙজাব জিতেছিল, যা আইপিএলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড।
আরো পড়ুন:
চেন্নাই প্লে’অফ খেলবে, দাবি ব্যাটিং কোচের
ধোনির অধিনায়কত্বেও ভাগ্য বদলালো না চেন্নাইর
গতরাতে রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ঝড় তোলেন পাঞ্জাবের দুই ওপেনার প্রিয়াংশ আর্য ও প্রভসিমরন সিং। দুজন মিলে করেন ৬৬ রান। ১৩ বলে ৩৬ রান করে আউট হন প্রিয়াংশ। এরপর দলীয় ৯১ রানে ফেরেন প্রভসিমরন। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ২৩ বলে ৪২। তবে পাঞ্জাবের হয়ে আসল ঝড়টা তোলেন শ্রেয়াস আইয়ার। ৩৬ বলে ৬ চার ও ৬ ছক্কায় করেন ৮২ রান। আর শেষ দিকে ১১ বলে অপরাজিত ৩৪ রান করেন মার্কাস স্টয়নিস।
জবাব দিতে নেমে অভিষেকের এই মহাকাব্যিক ইনিংস যেন এক রূপকথার মত প্রত্যাবর্তন। চলমান আসরে এই ২৪ বছর বয়সী ওপেনারের ব্যাট ঠিক হাসছিল না। তবে পাঞ্জাবের সাথে ঠিকই অভিষেক জানান দিলেন, হারিয়ে যাননি তিনি। ট্র্যাভিস হেডের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন। পাওয়ারপ্লে’র পর হেড যখন ছন্দে ব্যাট করছিলেন, তখন অভিষেক গিয়ার বদলে ঝড় তোলা শুরু করেন।
হেডের সঙ্গে ১৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন অভিষেক। যা হায়দরাবাদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওপেনিং পার্টনারশিপ। হেডের ৩৭ বলে ৬৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
এরপর অভিষেক ব্যক্তিগত প্রথম আইপিএল শতরানটি করেন মাত্র ৪০ বলে, যা আইপিএলের ইতিহাসে ষষ্ঠ দ্রুততম সেঞ্চুরি। কিন্তু তখনো চমকের বাকী ছিল। শতরান পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই, অভিষেক নিজের পকেট থেকে একটি সাদা কাগজ বের করে উপরে তুলে ধরেন, যেখানে হাতে লেখা ছিল, ‘এই ইনিংসটি কমলা আর্মিদের জন্য’। পাঞ্জাব অধিনায়ক শ্রেয়াসও সেই মুহূর্তে কাছে চলে আসেন বার্তাটি পড়তে।
অভিষেক প্রায় ২৫৭ স্ট্রাইক রেটে ১৪ চার ও ১০টি ছক্কায় তাঁর ইনিংসটি সাজান।
হায়দরাবাদের হয়ে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটিই। এর আগে ডেভিড ওয়ার্নারের ১২৬ ছিল চূড়ায়। আইপিএলের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। কেবল ক্রিস গেইল ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের আছেন সামনে।
টানা ৪ ম্যাচ হারার পর আসরে দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল হায়দরাবাদ। ৬ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে টেবিলের অষ্টম স্থানে আছে প্যাট কামিন্সের দল।
ঢাকা/নাভিদ