মাগুরার শালিখায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে শালিখা উপজেলার ছান্দড়া বাজারে হামলার এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই শিক্ষক মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হামলায় আহত ওই শিক্ষকের নাম মিজানুর রহমান। তিনি শালিখা উপজেলার ছান্দড়া প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ওই গ্রামের মৃত নওয়াব আলী মোল্লার ছেলে।

ওই শিক্ষক অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে বাজার করে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে ছান্দড়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর ও ইনছান নামে নামের ২ যুবক তার পথরোধ করে। এ সময় তারা ওই শিক্ষককে বলেন, লেখাপড়া সেখানোর জন্য মেয়ের পেছনে এত টাকা খরচ করালাম। কিন্তু সে মেট্রিক-এ ফেল করলো। শিক্ষকরা তোরা কি করিস। এই কথা বলে জাহাঙ্গীর ও ইনছান আমার উপর হামলা হামলা চালায়। এ সময় দুইজনই তাকে বেদম লাঠিপেটা করে আমার বাম হাত ভেঙে দেয়। পরে আমি আত্মরক্ষার জন্য দৌড়ে পাশে বোনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিই।

তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর ও ইনছান দুইজনই এলাকার অপরাধী। তাদের নামে শালিখা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ইনছান কিছু দিন আগে আস্ত্র মামলায় ৭ বছর জেল খেটে  বাড়িতে এসেছে। তাদের সঙ্গে আমার কোনো শত্রুতা নেই। কিন্তু কি কারণে আমার ওপর হামলা হয়েছে তা আমি ঠিক বলতে পারছি না। আমি হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করছি।

মাগুরা শালিখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.

ওলি মিয়া বলেন, গত ২৭ মার্চ ছান্দড়া প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন করা হয়। স্কুল কমিটি গঠন  করাকে কেন্দ্র করে এমন হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। তদন্ত করে অইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ওই শিক্ষক শালিখা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।পুলিশ জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

 ‘জংলি’ দেখে নতুন জীবনের পথ খুঁজে পেলেন এই দম্পতি

অদিতি ও আবির। দুইজনই চাকুরীজী। বিয়ের পর কেটে গেছে অনেক বছর। কিন্তু বাবা-মা হওয়া হয়নি। সন্তান দত্তক নিয়ে বাবা-মা হবেন এমন পরিকল্পনা বার বার নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যেনো নিতে পারছিলেন না। কোথায় গিয়ে যনো আটকে ছিল সিদ্ধান্ত। অদৃশ্য এক বাধার মুখে পড়ছিলেন। কিন্তু অদৃশ্য সেই বাধা কাটিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে ভূমিকা রাখল ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘জংলি’ সিনেমা।  

গতকাল ১১ মার্চ রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শাখায় এক দম্পতিকে পাওয়া গেল। যারা জংলি সিনেমাটি দেখে বের হয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে সিনেমাটি নিয়ে অভিমত জানাচ্ছিলেন। তরুণের নাম আবির। জানাচ্ছিলেন, বেলা ১০ টা ৫০ মিনিটের শোতে তারা জংলি সিনেমাটি দেখলেন। সিনেমাটি তাদের দ্বিতীয়বার দেখা। আগের পর দেখেছিলেন স্টার সিনেপ্লেক্সের সীমান্ত সম্ভার শাখায়। তার কাছে জংলি মূলত শুধু একটি ছবি নয়, একটি শিক্ষা। তার জীবনের বড় একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়ামক।

আবির বললেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী দুইজনই দ্বিতীয়বার জংলি দেখলাম এবং উপলব্ধি করলাম শুধু জন্ম দিলেই বাবা-মা হওয়া যায় না। জন্ম না দিয়েও আদর্শ বাবা-মা হওয়া সম্ভব। সেটা জংলি ছবিতে পরিচালক সাহেব দারুণভাবে উপলব্ধি করাতে পেরেছেন। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বাচ্চা দত্তক নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলাম। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। নানাবিধ প্রতিকূলতা। সেটা সামাজিক কারণেও বলতে পারেন। কিন্তু এই ছবি দেখার পর আমরা উভয় সিদ্ধান্ত নেই। সমাজের কে কি বললো সেটা ভাবার দরকার নেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দৃঢ়ভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা বাচ্চা দত্তক নেব। ইতোমধ্যে একটি আশ্রমের সঙ্গে কথাও হয়েছে। 

ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘জংলি’ বাবা-মেয়ের গল্প। বলা ভালো, এক যুবকের বাবা হয়ে ওঠার গল্প। জনি থেকে জংলি হয়ে ওঠা চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ। সিনেমার প্রথমার্ধে সিয়ামকে সেই চিরায়ত ‘চকলেট বয়’ লুকে দেখা গেলেও পরে তাঁর লুক ও অভিনয় ছিল আগের কাজগুলোর চেয়ে একেবারেই আলাদা। পর্দায় এবার তিনি পাশের বাড়ির ছেলে নন; বরং বখে যাওয়া এক জংলি। পর্দায় তিনি সত্যিই জংলি হয়ে উঠেছিলেন। 
 এ ছবিতে সিয়ামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করে গেছে ছোট্ট নৈঋতা। পাখি নামের ছোট্ট মেয়ের চরিত্রে সে ছিল সাবলীল। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে খাবার কুড়িয়ে খাওয়া, জংলির ঘরে গিয়ে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে ফিরে আসা। অত:পর সিয়াম সত্যিই সত্যিই তার বাবা হয়ে উঠেন। 

এমন গল্পই টেনেছে ওই দম্পতিকে। দম্পতি জানালেন, এই ছবির আরেকটি সুন্দর বিষয় হচ্ছে বাচ্চাদের গুড টাস ও ব্যাড টাচের বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া। এমন বিষয়টি আগে কখনও বাংলা সিনেমায় দেখানো হয়নি। সংসারে বাবা-মার ঝগড়া ও অস্বাভাবিক আচরণ বাচ্চাদের প্রতি দারুণভাবে প্রভাব পড়ে। এমন একটি বিষয়কে সিনেমার পর্দায় বিনোদনের উপজিব্য করে তুলে তা মানুষের মাঝে তুলে ধরার জন্য পরিচালককে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। 

আবির যখন কথা বলছিলেন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অদিতি। তিনি জানালেন, এমন ছবি সমাজের সব বাবা-মায়েদের দেখা উচিত। যারা বাবা-মা হননি তাদের আরও বেশি দেখা দরকার। সন্তান জন্ম দিলেই বাবা হওয়া যায় না। বাবা হওয়ার দারুণ এক লেসন রয়েছে জংলি সিনেমায়। আমরা যারা মেয়ে। তারা বাবাদের কাছে রাজকন্যা। সেই রাজকন্যাদের প্রতি বাবাদের ভালোবাসা কতটা থাকে। তা এই ছবিতে সিয়াম জন্মদাতা না বাবা হয়ে সেটা  দেখিয়েছেন। ছবিটি দেখার পর আমরা জীবনের বড় একটা সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি। ব্যাড প্যারেন্টিং, শিশুদের জন্য গুড টাচ, ব্যাড ট্যাচের মতো বিষয়গুলো দেখানোর জন্য ‘জংলি’ টিমের বিশেষ ধন্যবাদ পাওনা। 
আমাদের সমাজে বাচ্চাদের নিয়ে কত কিছু ঘটে। অনেকে বাচ্চা জন্ম দিয়ে রাস্তায়ও ফেলে দিয়ে যান। তারা কিভাবে বড় হয় সেটা খুবই অমানবিক। এই ছবিতে সেটাও দেখানো হয়েছে। তাই আমি আহ্বান রাখব, এমন ছবি আরও নির্মাণ হোক। মারামারির ছবির বাইরেও এমন ছবি নির্মাণ হলে কিছু মানুষের মাঝেও তো প্রভাব পড়বে। যে প্রভাব আমাদের সমাজ ও সমাজের মানুষের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।

ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটিতে সিয়াম আহমেদের বিপরীতে আছেন শবনম বুবলী ও দীঘি। আরও আছেন দিলারা জামান, শহীদুজ্জামান সেলিম এবং রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ। এই ছবির সবগুলো গান করেছেন প্রিন্স মাহমুদ।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘জংলি’ সিনেমা দেখে সন্তান দত্তক নিতে চাইছেন এই দম্পতি
  • ‘জংলি’ সিনেমা দেখে জীবনের নতুন পথ খুঁজে পেলেন এই দম্পতি
  •  ‘জংলি’ দেখে নতুন জীবনের পথ খুঁজে পেলেন এই দম্পতি