নাটোরে আদালতের মালখানা থেকে ৬১ লাখ টাকাসহ স্বর্ণালংকার চুরি
Published: 11th, April 2025 GMT
নাটোরে আদালতের মালখানা থেকে ৬১ লাখ ৩৯ হাজার নগদ টাকাসহ ১৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৯ কেজি রুপা চুরি হয়ে গেছে। মালখানার গ্রিল ও তালা ভেঙে টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় চুরির ঘটনা ঘটলেও আজ শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি জানাজানি হয়।
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তারা বরখাস্ত এক পুলিশ সদস্যসহ চারজনকে আটক করেছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। মামলার প্রস্তুতি চলছে। টাকা ও মালামাল উদ্ধারের পাশাপাশি চোর চক্রকে ধরতে পুলিশ মাঠে আছে।
চুরি যাওয়া টাকার মধ্যে সম্প্রতি জেলার সিংড়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলীর হেফাজত থেকে উদ্ধার হওয়া ৩৭ লাখ টাকাও ছিল। পুলিশের ধারণা, ওই টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে চোর চক্র এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
সদর থানা সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আদালত পুলিশের এক সদস্য মালখানার জানালার গ্রিল ভাঙা দেখতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে আদালত পরিদর্শককে খবর দিলে তিনি এসে মালখানা খুলে চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হন। খবর পেয়ে নাটোরের জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ শেখ মো.
পরিদর্শক মোস্তফা কামাল জানান, মালখানা পাহারায় প্রহরী ছিলেন। তা ছাড়া মালখানা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় ছিল। কিন্তু চোর চক্র পেছনের জানালার গ্রিল ভেঙে ভেতরে ঢুকেছে এবং লকারের তালা ভেঙে টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করেছে। একই সঙ্গে তারা সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক বক্স খুলে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় কর্তব্যরত ব্যক্তিদের অবহেলা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। অবহেলা থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরের দিকে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরপরই মালখানার মালামাল রেজিস্টার দেখে মেলানোর কাজ চলছিল। সন্ধ্যা নাগাদ একটা হিসাব পাওয়া গেছে। তাতে নগদ ৬১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা, ১৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৯ কেজি রুপা চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, এই টাকার মধ্যে গত ১৪ মার্চ সিংড়ায় নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে গাইবান্ধার এলজিইডির নির্বাহী কর্মকর্তা ছাবিউল ইসলামের কাছ থেকে উদ্ধার করা ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকাও রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, চোর চক্র ওই টাকা হাতিয়ে নিতেই এই চুরি করার উদ্যোগ নিয়েছিল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স বর ণ ল ক র ৬১ ল খ
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রী-ছেলেসহ তিন খুনের দায় স্বীকার, ১০ দিনের রিমান্ড
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে তিন খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. ইয়াসিন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দায় স্বীকার করেছে। শনিবার বিকেলে তাকে তোলা হয় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বেলায়েত হোসেনের আদালতে। সেখানে ১০ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।
শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকায় ময়লার স্তূপ খুঁড়ে ইয়াসিনের স্ত্রী লামিয়া আক্তার (২২), চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসান লাবিব ও লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তারের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই এলাকাবাসী ইয়াসিনকে (২৪) ধরে পুলিশে দেন। সে মিজমিজি দক্ষিণপাড়ার মো. দুলালের ছেলে। আগে ইয়াসিন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাত। পুলিশ জানিয়েছে, ছিঁচকে চোর ও মাদকাসক্ত হিসেবেও পরিচিত সে।
শুক্রবার রাতেই লামিয়ার মেজো বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে ইয়াসিন ছাড়াও তার বাবা মো. দুলাল (৫০) ও বোন মোসা. শিমুকে (২৭) আসামি করা হয়েছে। মুনমুন জানিয়েছেন, লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ৫ বছর আগে ইয়াসিনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বড় বোন স্বপ্নাও লামিয়ার সঙ্গে পশ্চিমপাড়ার ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৭ এপ্রিল দুপুরে ওই বাসায় বোনদের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কথা হয়। এর পর থেকে তাদের মুঠোফোনটি বন্ধ ছিল।
মামলায় মুনমুন উল্লেখ করেছেন, মাদকাসক্ত ইয়াসিন কোনো কাজ করত না। প্রায় সময় টাকার জন্য লামিয়াকে মারধর করত ও হত্যার হুমকি দিত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার ইয়াসিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।