তরুণরা নতুন রাজনীতির কথা বললেও পুরোনো পথেই হাঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামী লীগ ব্যবসা করেছে। তারা একাত্তর-মুক্তিযুদ্ধের একক ঠিকাদার হয়ে গিয়েছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে কেউ ব্যবসা করবেন না। এই গণঅভ্যুথান কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, একক ব্যক্তির নেতৃত্বে বা একক ডাকে হয়নি। এটি একটি গণ আন্দোলন, গণঅভ্যুথান। এতে দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিয়েছিল বলেই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের অনেক তরুণ নতুন রাজনীতির কথা বলে সেই পুরোনো পথে হাঁটতে চায়। তারা পেশিশক্তি, কালো টাকা রাজনীতির আধিপত্য বিস্তারের দিকে যেতে যাচ্ছে। 

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের সিংগাইর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি। 

নুর আরও বলেন, দেশে ৫৩ বছরের রাজনীতিতে বহু সরকার, বহু প্রধানমন্ত্রী দেখেছে দেশের জনগণ। নির্বাচনের আগে বহু আশা-আকাঙ্ক্ষা দেখালেও ক্ষমতায় গিয়ে সব ভুলে যায় বিজয়ীরা। অর্থাৎ যে লংকায় যায় সেই রাবণ হয়। মানুষ আর এই রাজনীতি চায় না। মানুষ দেশের উন্নয়ন চায়। কাজেই দেশের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রয়োজন। যে কারণে সংস্কার আর নির্বাচনকে মুখোমুখি না করার অনুরোধ জানান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি।

সংস্কারের বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য নির্বাচিত সরকার যেমন প্রয়োজন সেটাকে দীর্ঘমেয়াদি ও সুশৃঙ্খল করার জন্য সংস্কারও প্রয়োজন। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আত্মশুদ্ধি ও আত্মসংযমের সময় এখন। সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার সময় এখন। কাজেই জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য উপযুক্ত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ জানান দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, এই এলাকায় আগে যে সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি হচ্ছেন মমতাজ বেগম। এই মমতাজ বেগমের ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হওয়ার যোগ্যতা নেই।

গণঅধিকার পরিষদের মানিকগঞ্জ সিংগাইর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবুর সঞ্চালনায় ও সভাপতি আলামিন দেওয়ানের সভাপতি‌ত্বে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চপরিষদ সদস্য হাবিবুর রহমান রিজু, মাহফুজুর রহমান খান, গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেনসহ অন্যান্যরা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ল হক ন র ম ন কগঞ জ র জন ত ক র জন ত র ন র জন ত র র জন র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি মুছে দিল দুর্বৃত্তরা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) সংলগ্ন ছাত্র আন্দোলন চত্বরে বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন ‘পাটাতন’ অঙ্কিত গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি সংবলিত গ্রাফিতি রাতের কোনো এক সময় মুছে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার রাতেও গ্রাফিতিগুলো রঙিন ছিল। রাতের কোনো এক সময় গ্রাফিতির ওপর কালো রঙের স্প্রে দিয়ে মুছে দেওয়া হয়েছে।

পাটাতনের সাধারণ সম্পাদক সায়েম মোহাইমিন জানান, গণহত্যার ইতিহাসকে যদি ভুলে যাওয়া হয়, তাহলে গণহত্যা বারবার হবে। তাই পাটাতন থেকে জুলাইয়ের শহীদদের স্মৃতিকে গ্রাফিতি আকারে সংরক্ষণ করার চেষ্টা করেছেন তারা। বিশেষ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলন চত্বর থেকেই এ আন্দোলনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ তৈরি হয়েছিল, বাংলা ব্লকেড এখান থেকেই করা হয়। এখানে এমন ঘৃণ্য কাজ করা কেবল গণহত্যার দোসরদের দ্বারাই সম্ভব। এ ধরনের কাজের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। 
প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন তিনি। সেই সঙ্গে জুলাইয়ের স্মৃতিতে ক্যাম্পাসে একটি ‘স্মৃতি মিনার’ তৈরি করতে অনুরোধ জানান তিনি।

এ বিষয়ে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক হান্নান রহিম বলেন, ‘গ্রাফিতি মুছে ফেলার মাধ্যমে স্বৈরাচারের দোসররা জুলাইকে মুছতে চায়, ছাত্র আন্দোলন চত্বরকে মুছতে চায়, তারা জানে না– যা কিছু রক্ত দিয়া লেখা হয়, তা মুছা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, পাশাপাশি জুলাইকে বাঁচিয়ে রাখতে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে বিশ্বাস রাখতে চাই।’

কুবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভর ভাষ্য, গণআন্দোলনে দল-মত নির্বিশেষে যৌক্তিক দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন তারা। এ আন্দোলনে অনেকে শহীদ হয়েছেন। তাদের স্মৃতিতে গ্রাফিতি অঙ্কনের জন্য ‘পাটাতন’ সাধুবাদ পাওয়ার দাবিদার। ছাত্রদলও এমন কিছু করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে যারা এগুলো মুছে দিতে চাইছে, হয়তো তারা ক্যাম্পাসের ছাত্রলীগ কিংবা প্রশাসনে থাকা স্বৈরাচারের দোসর। এতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে, স্বৈরাচার এখনও বিদ্যমান।

কুবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইউসুফ ইসলাহী বলেন, ‘পাটাতন যে গ্রাফিতি অঙ্কন করেছিল, সেগুলো যারাই মুছে দিয়েছে, তারা ফ্যাসিস্টের পদলেহী বলেই আমরা মনে করি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে সোচ্চার ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই।’

সহকারী প্রক্টর ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুতাসিম বিল্লাহ জানান, প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ ও দাবি এলে হয়তো প্রশাসন আমলে নেবে। গণআন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তাই এর স্মৃতি সংরক্ষণে দাবি-দাওয়া আমলে নিয়ে প্রশাসনের এগিয়ে আসা উচিত।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল হাকিমের কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। আর জুলাই স্মৃতি মিনার করার ব্যাপারে রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত আবেদন করলে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি
  • অস্ত্র ফেরত চান আ.লীগ নেতারা
  • গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি মুছে দিল দুর্বৃত্তরা
  • আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে মানববন্ধন