নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আগামী রোববার সারা দেশে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টি। এই কর্মসূচি সফল করতে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের নেতা-কর্মীসহ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে আজ শুক্রবার বিকেলে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সমর্থন ও ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে এক সমাবেশে জি এম কাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

সমাবেশে জি এম কাদের ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে অনুষ্ঠিত মিছিল থেকে লুটপাটের ঘটনার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ভাঙচুর ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটিয়ে কিছু মানুষ তাঁদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে চাচ্ছেন। তাঁরা সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাতে চাচ্ছেন।

জি এম কাদের বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে অনেক মানুষ নতুন করে বেকার হচ্ছেন। সরকারের কিছু ঘনিষ্ঠ লোকজন বেকার ও ক্ষুধার্ত মানুষদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছেন। তাঁদের দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভয়ভীতি দেখানোর কাজে বেকারদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণেই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে অনুষ্ঠিত মিছিল থেকে লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। ভাঙচুর ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটিয়ে কিছু মানুষ তাঁদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে চাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সতর্ক করে জি এম কাদের বলেন, ‘যাঁরা দূরে আগুন লাগিয়ে নিজেকে নিরাপদ ভাবছেন, দুদিন পরে সেই আগুন আপনার ঘরেও লাগতে পারে। সাধারণ মানুষের ওপর যে অত্যাচার চলছে, তা অবশ্যই শেষ হবে। আমরা সব অন্যায় ও অত্যাচারের প্রতিবাদ করব।’

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বর হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফিলিস্তিনের ভাইবোনদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে। আমরা তাদের পাশে আছি, সব সময় তাদের পাশে থাকব।’

সরকারের ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে মন্তব্য করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব নেতাদের পাশাপাশি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ান, অসহায় ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করার ব্যবস্থা করুন।’

ফিলিস্তিনিদের স্বার্থে সব কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকার ঘোষণা দিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফুটফুটে শিশুদের নিশানা করে হত্যা করা হচ্ছে। বিশ্ব বিবেক কী করে তা মেনে নিতে পারে? আমরা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি চাই। আমরা চাই, ফিলিস্তিনিরা যেন মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে পারে। ফিলিস্তিনিদের সব ন্যায্য দাবির প্রতি আমাদের সমর্থন থাকবে।’

সমাবেশ শেষে কাকরাইল থেকে জি এম কাদেরের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো.

মুজিবুল হক, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর, সাইফুদ্দিন আহমেদ, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ইমরান হোসেন মিয়া, লিয়াকত হোসেন, মনিরুল ইসলাম, আরিফুর রহমান খান, ইকবাল হোসেন, জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি মোফতার উদ্দিন, কৃষক পার্টির সদস্যসচিব এম এ কুদ্দুস, জাতীয় ছাত্রসমাজের আহ্বায়ক মারুফ হাসান তালুকদারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এম ক দ র সরক র র র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

স্ত্রী-ছেলেসহ তিন খুনের দায় স্বীকার, ১০ দিনের রিমান্ড

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে তিন খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. ইয়াসিন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দায় স্বীকার করেছে। শনিবার বিকেলে তাকে তোলা হয় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বেলায়েত হোসেনের আদালতে। সেখানে ১০ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।

শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকায় ময়লার স্তূপ খুঁড়ে ইয়াসিনের স্ত্রী লামিয়া আক্তার (২২), চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসান লাবিব ও লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তারের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই এলাকাবাসী ইয়াসিনকে (২৪) ধরে পুলিশে দেন। সে মিজমিজি দক্ষিণপাড়ার মো. দুলালের ছেলে। আগে ইয়াসিন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাত। পুলিশ জানিয়েছে, ছিঁচকে চোর ও মাদকাসক্ত হিসেবেও পরিচিত সে।
শুক্রবার রাতেই লামিয়ার মেজো বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে ইয়াসিন ছাড়াও তার বাবা মো. দুলাল (৫০) ও বোন মোসা. শিমুকে (২৭) আসামি করা হয়েছে। মুনমুন জানিয়েছেন, লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ৫ বছর আগে ইয়াসিনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বড় বোন স্বপ্নাও লামিয়ার সঙ্গে পশ্চিমপাড়ার ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৭ এপ্রিল দুপুরে ওই বাসায় বোনদের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কথা হয়। এর পর থেকে তাদের মুঠোফোনটি বন্ধ ছিল।

মামলায় মুনমুন উল্লেখ করেছেন, মাদকাসক্ত ইয়াসিন কোনো কাজ করত না। প্রায় সময় টাকার জন্য লামিয়াকে মারধর করত ও হত্যার হুমকি দিত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার ইয়াসিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ