দিনমজুর পরিবারের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
Published: 11th, April 2025 GMT
ভোলার চরফ্যাসনে এক দিনমজুর পরিবারকে জিম্মি করে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে ১০ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। এতেই থেমে যাননি ওই বিএনপি নেতা ও তাঁর সহযোগীরা। তাদের দাবি করা আরও ২০ হাজার টাকার জন্য দিনমজুর পরিবারকে বাড়িছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন তারা।
গত ২৬ মার্চ দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠা বিএনপি নেতার নাম কামরুল সরদার। তিনি নজরুল নগর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক।
এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাজুল ইসলাম নামে ওই দিনমজুর বাদী হয়ে বিএনপি নেতা কামরুল সরদারসহ ৫ জনকে আসামি করে দক্ষিণ আইচা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী তাজুল ইসলাম জানান, তাঁর মেয়ে মিতু বেগম চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। ওই কারখানায় ফারজানা নামের এক তরুণীর সঙ্গে তাঁর মেয়ের সখ্য হয় এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ককে অটুট রাখতে মিতু তার বান্ধবীকে তার ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। পরে উভয় পরিবার তাদের বিয়ের জন্য সম্মতি দেয়। গত ২৬ মার্চ তার মেয়ে বান্ধবীকে নিয়ে বাড়িতে বেড়াতে আসে। এতেই বিপত্তি ঘটে। বিএনপি নেতা কামরুল সরদার ও তাঁর সহযোগী যুবদলের সদস্য মনির সরদার, রিপন, ইসলাম হাওলাদার, নিজাম হাওলাদার, আলামিনসহ কয়েকজন তাঁর বাড়িতে হানা দেন। তারা তাঁর মেয়ের বান্ধবীকে বাড়িতে রাখার কারণ জানতে চান। হবু পুত্রবধূকে বাড়িতে রাখার অপরাধে কামরুল সরদার ও তাঁর সহযোগীরা তাঁর কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তাদের টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে মারধর করা হয়। পরে তিনি বাধ্য হয়ে তাদের হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে তিনি হবু পুত্রবধূকে এক প্রতিবেশীর আশ্রয়ে রাখেন। ওই ঘটনার দুই দিন পর তাঁর মেয়ের বান্ধবীর সঙ্গে ছেলে রাকিবের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এতেও থেমে যায়নি ওই চক্রটি। তাদের দাবি করা বাকি টাকার জন্য প্রায় সময় হুমকিধমকি দিয়ে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার ফের ওই চক্র তাঁর বাড়িতে হানা দিয়ে ৫ হাজার টাকা দাবি করে। তিনি ওই টাকা দিতে অপারগতা জানালে তারা একদিনের মধ্যে তাঁর পরিবারকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। অন্যথায় ঘর ভেঙে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। তাদের হুমকিতে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে কামরুল সরদার বলেন, চরফ্যাসনে বিএনপির রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত। একটি পক্ষ দিনমজুর তাজুলকে ব্যবহার করে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে দক্ষিণ আইচা থানার ওসি এরশাদুল হক ভুইয়া জানান, অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ র পর ব র দ নমজ র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন
এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।
আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।