ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট লিজিং কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (আইডিএলসি-বাংলাদেশ) এর সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, সঠিক ও মানসম্মত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দেশের ২০ শতাংশের বেশি কর্মশক্তিকে নিযুক্ত করে। যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা হিসেবে বিবেচিত। ফলে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং সংরক্ষণে সক্ষমতা বৃদ্ধি শুধু খাদ্যের অপচয় কমাতে সাহায্য করে না, বরং রপ্তানির সম্ভাবনাও অনেকটা সুগম করে।

২০২২ সালে, বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে ০.

৬৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের হালাল মাংস রপ্তানি করেছে। সে বিবেচনায় সঠিক ও মানসম্মত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের দিকে দৃষ্টি দিলে এই দেশগুলিতে রপ্তানির সম্ভাবনা আরো বাড়ত।

তবে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ও পোলট্রি খাত প্রক্রিয়াকরণে উদ্যোক্তাদেরকে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এগুলো হচ্ছে-আনুষ্ঠানিক কসাইখানা বাড়ানো, প্রক্রিয়াকরণ টেকসই করতে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া, পরিবেশ সুরক্ষা এবং উন্নত প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো, পচনশীলতা থেকে রক্ষার জন্য তাপমাত্রা-সংবেদনশীল কোল্ড চেইন অবকাঠামো উন্নয়ন এবং গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে সার্টিফিকেশনকে আরো বেশি উৎসাহিতকরণ।

সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানের একাট হোটেলে আয়োজিত ‘পোলট্রি শিল্প প্রক্রিয়াকরণ’ বিষয়ক এক কর্মশালায় বিশিষ্টজনদের কাছ থেকে এই সুপারিশসমূহ উঠে আসে। বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাস, ল্যারিভ ইন্টারন্যাশনাল, আন্তর্জাতিক বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনার্স ও বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে।

শুক্রবার লাইটক্যাসল পার্টনার্সের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

স্টেকহোল্ডারদের নেটওয়ার্কিং তৈরি ও শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য পোলট্রি শিল্পের প্রক্রিয়াকরণে করণীয় ও সুপারিশসমূহ তুলে ধরতে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন লাইটক্যাসল পার্টনার্সের বিজনেস কনসালট্যান্ট আইনান তাজরিয়ান। সূচনা বক্তব্য রাখেন বিপিআইসিসি এর সচিব মোস্তফা কামাল।

আরো বক্তব্য রাখেন লাইটক্যাসল পার্টনার্সের বিজনেস এনালিস্ট নাজিবা আলী, বিপিআইসিসির কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া উপদেষ্টা মো. সাজ্জাদ হোসেন, বহুজাতিক খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠান মারেল এর অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার সুবরামানি হরিহারান প্রমুখ।

কর্মশালায় মারেল এর অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার সুবরামানি হরিহারান টেকসই পোলট্রি প্রক্রিয়াকরণে চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

উপস্থাপনায় যেসব বিষয় সুপারিশ হিসেবে উঠে আসে সেগুলি হচ্ছে-‘স্কেলযোগ্য এবং মডুলার প্রসেসিং’ এর ওপর গুরুত্ব দেওয়া, আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণকে উন্নতকরণ, বর্জ্য হ্রাসে ব্যবস্থা নেওয়া এবং খাদ্যের গুণগত মানের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া।  

আলোচনায় বক্তারা-পোলট্রি শিল্পে প্রক্রিয়াকরণে উদ্যোক্তাদেরকে কয়েকটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করেন। এর মধ্যে রয়েছে পোলট্রি প্রক্রিয়াকরণক এগিয়ে নিতে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া, পরিবেশ সুরক্ষা এবং আধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো।

এতে সমাপনী বক্তব্য রাখেন লারিভ ইন্টারন্যাশনালের উদীয়মান বাজার উপদেষ্টা আমভার ভ্যান স্পনসেন।

কর্মশালায় প্যারাগন, আফতাব, বেঙ্গল মিট, এজি ফুড, প্রাণ, প্রোভিটা, ইওন ফুডস, কোয়ালিটি ইন্টিগ্রেটেড এগ্রো এবং এসিআই গোদরেজসহ বিভিন্ন সংস্থার ৩০ জনেরও অধিক কর্মকর্তা এবং প্রতিনিধি অংশ নেন।

পোলট্রিটেক বাংলাদেশ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ এর আওতায় একটি কর্মসূচি, যা বাংলাদেশের এই সম্ভাবনাময় খাতকে শক্তিশালী করতে একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ল্যারিভ ইন্টারন্যাশনাল এবং লাইটক্যাসল পার্টনারস-এই দুই কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান অংশীদারের ভিত্তিতে নেদারল্যান্ডস সরকারের অর্থায়নে গত কয়েক-বছর ধরে পোলট্রি শিল্পের প্রকল্প পরিচালনা ও বাস্তবায়নে কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রক্রিয়াজাত পোলট্রি পণ্যে চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাত্র ছয় বছরের ব্যবধানে দৈনিক মুরগির মাংসের ব্যবহার ২০২৬ সালে জনপ্রতি ১৭.৩ গ্রাম থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ২৬.২ গ্রাম হয়েছে। বর্তমানে বাণিজ্যিক পোলট্রি খামারের বার্ষিক বৃদ্ধি প্রায় ১৫ শতাংশ। এই সম্প্রসারণের ফলে বছরে ২৩.৩৭ বিলিয়ন ডিম এবং ১.৪৬ মিলিয়ন টন হাঁস-মুরগির মাংস উৎপাদন হয়েছে। তাই পোলট্রি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে অবাকাঠামোগত উন্নয়নসহ দ্রুত বাজার সম্প্রসারণ জরুরি।

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রপ্তানি বাড়াতে পোলট্রি শিল্পে মানসম্মত খাদ্য প্রক্রিয়ার গুরুত্বারোপ

ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট লিজিং কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (আইডিএলসি-বাংলাদেশ) এর সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, সঠিক ও মানসম্মত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দেশের ২০ শতাংশের বেশি কর্মশক্তিকে নিযুক্ত করে। যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা হিসেবে বিবেচিত। ফলে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং সংরক্ষণে সক্ষমতা বৃদ্ধি শুধু খাদ্যের অপচয় কমাতে সাহায্য করে না, বরং রপ্তানির সম্ভাবনাও অনেকটা সুগম করে।

২০২২ সালে, বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে ০.৬৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের হালাল মাংস রপ্তানি করেছে। সে বিবেচনায় সঠিক ও মানসম্মত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের দিকে দৃষ্টি দিলে এই দেশগুলিতে রপ্তানির সম্ভাবনা আরো বাড়ত।

তবে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ও পোলট্রি খাত প্রক্রিয়াকরণে উদ্যোক্তাদেরকে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এগুলো হচ্ছে-আনুষ্ঠানিক কসাইখানা বাড়ানো, প্রক্রিয়াকরণ টেকসই করতে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া, পরিবেশ সুরক্ষা এবং উন্নত প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো, পচনশীলতা থেকে রক্ষার জন্য তাপমাত্রা-সংবেদনশীল কোল্ড চেইন অবকাঠামো উন্নয়ন এবং গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে সার্টিফিকেশনকে আরো বেশি উৎসাহিতকরণ।

সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানের একাট হোটেলে আয়োজিত ‘পোলট্রি শিল্প প্রক্রিয়াকরণ’ বিষয়ক এক কর্মশালায় বিশিষ্টজনদের কাছ থেকে এই সুপারিশসমূহ উঠে আসে। বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাস, ল্যারিভ ইন্টারন্যাশনাল, আন্তর্জাতিক বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনার্স ও বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে।

শুক্রবার লাইটক্যাসল পার্টনার্সের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

স্টেকহোল্ডারদের নেটওয়ার্কিং তৈরি ও শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য পোলট্রি শিল্পের প্রক্রিয়াকরণে করণীয় ও সুপারিশসমূহ তুলে ধরতে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন লাইটক্যাসল পার্টনার্সের বিজনেস কনসালট্যান্ট আইনান তাজরিয়ান। সূচনা বক্তব্য রাখেন বিপিআইসিসি এর সচিব মোস্তফা কামাল।

আরো বক্তব্য রাখেন লাইটক্যাসল পার্টনার্সের বিজনেস এনালিস্ট নাজিবা আলী, বিপিআইসিসির কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া উপদেষ্টা মো. সাজ্জাদ হোসেন, বহুজাতিক খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠান মারেল এর অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার সুবরামানি হরিহারান প্রমুখ।

কর্মশালায় মারেল এর অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার সুবরামানি হরিহারান টেকসই পোলট্রি প্রক্রিয়াকরণে চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

উপস্থাপনায় যেসব বিষয় সুপারিশ হিসেবে উঠে আসে সেগুলি হচ্ছে-‘স্কেলযোগ্য এবং মডুলার প্রসেসিং’ এর ওপর গুরুত্ব দেওয়া, আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণকে উন্নতকরণ, বর্জ্য হ্রাসে ব্যবস্থা নেওয়া এবং খাদ্যের গুণগত মানের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া।  

আলোচনায় বক্তারা-পোলট্রি শিল্পে প্রক্রিয়াকরণে উদ্যোক্তাদেরকে কয়েকটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করেন। এর মধ্যে রয়েছে পোলট্রি প্রক্রিয়াকরণক এগিয়ে নিতে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া, পরিবেশ সুরক্ষা এবং আধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো।

এতে সমাপনী বক্তব্য রাখেন লারিভ ইন্টারন্যাশনালের উদীয়মান বাজার উপদেষ্টা আমভার ভ্যান স্পনসেন।

কর্মশালায় প্যারাগন, আফতাব, বেঙ্গল মিট, এজি ফুড, প্রাণ, প্রোভিটা, ইওন ফুডস, কোয়ালিটি ইন্টিগ্রেটেড এগ্রো এবং এসিআই গোদরেজসহ বিভিন্ন সংস্থার ৩০ জনেরও অধিক কর্মকর্তা এবং প্রতিনিধি অংশ নেন।

পোলট্রিটেক বাংলাদেশ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ এর আওতায় একটি কর্মসূচি, যা বাংলাদেশের এই সম্ভাবনাময় খাতকে শক্তিশালী করতে একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ল্যারিভ ইন্টারন্যাশনাল এবং লাইটক্যাসল পার্টনারস-এই দুই কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান অংশীদারের ভিত্তিতে নেদারল্যান্ডস সরকারের অর্থায়নে গত কয়েক-বছর ধরে পোলট্রি শিল্পের প্রকল্প পরিচালনা ও বাস্তবায়নে কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রক্রিয়াজাত পোলট্রি পণ্যে চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাত্র ছয় বছরের ব্যবধানে দৈনিক মুরগির মাংসের ব্যবহার ২০২৬ সালে জনপ্রতি ১৭.৩ গ্রাম থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ২৬.২ গ্রাম হয়েছে। বর্তমানে বাণিজ্যিক পোলট্রি খামারের বার্ষিক বৃদ্ধি প্রায় ১৫ শতাংশ। এই সম্প্রসারণের ফলে বছরে ২৩.৩৭ বিলিয়ন ডিম এবং ১.৪৬ মিলিয়ন টন হাঁস-মুরগির মাংস উৎপাদন হয়েছে। তাই পোলট্রি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে অবাকাঠামোগত উন্নয়নসহ দ্রুত বাজার সম্প্রসারণ জরুরি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ